ঢাকার ব্যস্ততম দিন। হোটেল সোনারগাঁওয়ের এক কনফারেন্স হলে জমেছে অচেনা এক ভিড়। ভিড় বললে ভুল হবে-এরা বাংলাদেশের ক্রিকেটের পরিচিত মুখ। মুশফিকুর রহিম এসে ঢুকলেন সবার আগে, শান্ত মুখে শুভেচ্ছা জানালেন সহখেলোয়াড়দের। কিছুক্ষণের মধ্যে হাজির হলেন লিটন দাস, তাওহিদ হৃদয়, নাসুম আহমেদ। একে একে পূর্ণ হলো সভাকক্ষ।
আজকের আসরটা ছিল বিশেষ। প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সামনে দাঁড়ালেন বিসিবির নতুন সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। নাম দিয়েছেন তিনি-‘শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার’ সেশন। উদ্দেশ্য একটাই: ক্রিকেটারদের কথা শোনা, তাদের সমস্যাগুলো বোঝা।
প্রথমেই হাজির করা হলো বিসিবির করা একটি জরিপের ফল। প্রশ্ন ছিল আটটি-লজিস্টিক থেকে শুরু করে পোশাক, অনুশীলনের সুযোগ, চিকিৎসা সব বিষয়ে খেলোয়াড়দের মতামত নেওয়া হয়েছে। কেবল নম্বর নয়, লিখিতভাবেও জানিয়েছেন অনেকে। বোর্ডের কর্মকর্তারা ফলাফল তুলে ধরলেন, আর ক্রিকেটাররা সরাসরি নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করলেন। কারও কণ্ঠে হতাশা, কারও কণ্ঠে প্রত্যাশা-সব মিলিয়ে পরিবেশটা ছিল খোলামেলা।
সভায় ছিলেন আইসিসির সাবেক কর্মকর্তা ও বিসিবির নতুন অ্যান্টি-করাপশন পরামর্শক অ্যালেক্স মার্শাল। ক্রিকেটারদের সামনে সততার গুরুত্ব, অ্যান্টি-ডোপিং প্রটোকল, আর আসন্ন এশিয়ান গেমস ও অলিম্পিক নিয়ে তাঁর পরামর্শ ছিল চোখে পড়ার মতো।
পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা বৈঠকের শেষে বুলবুল জানালেন, ‘ক্রিকেটাররাই আমাদের আসল স্টেকহোল্ডার। তারা যেন নির্দ্বিধায় নিজের কথা বলতে পারে, সেটিই চাই।’ তিনি প্রতিশ্রুতি দিলেন-এমন বৈঠক আর কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়, এখন থেকে নিয়মিত আয়োজন করা হবে।
ক্রিকেটারদের চোখেমুখে স্বস্তি ছিল স্পষ্ট। কেউ বললেন, আগে এমনভাবে কথা বলার সুযোগ পাননি। কেউ আবার আশ্বস্ত হয়েছেন যে বোর্ড এবার সত্যিই শুনতে চাইছে।
Discussion about this post