এইতো কিছুদিন আগেই তার হাতে উঠেছে ফ্রেঞ্চ ওপেন। অবশ্য রোল্যা গ্যাঁরোর লাল দুর্গে বরাবরই তিনি সম্রাট। কিন্তু লন্ডনের উইম্বলডনে তেমনটা নয়। তারপরও গ্র্যান্ড স্ল্যামের প্রথম রাউন্ত থেকেই বিদায় নেওয়ার দুর্নাম নেই রাফায়েল নাদালের। কিন্তু কে জানতো সেই লজ্জাজনক ঘটনাটাই ঘটবে টেনিসের আন অফিসিয়াল বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে?
১২টি গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী রাফায়েল নাদাল সোমবার প্রথম রাউন্ডে মুখোমুখি হয়েছিলেন স্টিভ ডার্সিসের। ১৩৫ নম্বর র্যাংকিংয়ের সঙ্গে ৫ নম্বর নাদালের লড়াই। সেই লড়াইয়ে ৬-৭ (৭/৪), ৬-৭ (১০/৮) ৪-৬ গেমে বেলজিয়ান ওই খেলোয়াড়ের কাছে হার মানলেন নাদাল। প্রায় তিন ঘণ্টা দীর্ঘ লড়াই শেষে মাথা নিচু করে কোর্ট ছাড়লেন স্প্যানিয়ার্ড তারকা।
২০০৮ ও ২০১০ সালের চ্যাম্পিয়ন নাদাল মাত্র দু’সপ্তাহ আগে রেকর্ড অস্টম ফ্রেঞ্চ ওপেন ট্রফি জিতেছিলেন। ১৯৯৭ সালে গুস্তাভো কুয়ের্তেনের পর এবারই প্রথম কোনো ফ্রেঞ্চ ওপেন চ্যাম্পিয়ন উইম্বলডনের প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিলেন!
র্যাংকিংয়ে নিচের দিকে থাকা খেলোয়াড়ের কাছে নাদাল সর্বশেষ হেরেছিলেন সেই ২০০৬ সালে। স্টকহোম ওপেনে ওই বছর ৬৯০ নম্বরে থাকা জোয়াকিম জোহানসোনের কাছে হেরে যান তিনি। এবার দুর্দান্ত ফর্ম নিয়ে খেলতে এসেছিলেন উইম্বলডনে। ফেব্রুয়ারিতে ইনজুরি থেকে ৭ মাস পর কোর্টে ফেরেন তিনি। এরপর নয়টি টুর্নামেন্টে খেলতে নেমে জিতেছেন সাতটি শিরোপা। ইর্ষনীয় সাফল্য!
২৯ বছর বয়সী ডার্সিসের ডাক নাম ‘শার্ক’ (হাঙ্গর)! দুটি জয় নিয়ে উইম্বলডনের এ কঠিন লড়াইয়ে নামেন তিনি। তাইতো জয়টা তার জন্য একেবারেই অপ্রত্যাশিত। ম্যাচ শেষে সেটা লুকোলেন না। বললেন, ‘দেখুন কেউই আমার জয় আজ প্রত্যাশা করেছিল না। আমি নিজেও ভাবিনি ওকে হারাতে পারবো। তাইতো জানি না কী বলব। আমি সত্যিই খুশি। এমন জয়ের পর অনুভুতি প্রকাশের ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।’
তবে হাটুর ইনজুরি কিছুটা ভোগালেও হারের পর সেটা অজুহাত হিসেবে দাড় করান নি নাদাল। বললেন, ‘আসলে আমি প্রতি মুহূর্তে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে গেছি। তবে আমার পক্ষে ভালো খেলা সম্ভব হয়নি। দেখুন আমি আমার হাঁটু নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। হাঁটু নিয়ে কিছু বললেই তা অজুহাত হয়ে পড়বে। আমি শুধু স্টিভ ডার্চিসকে অভিনন্দন জানাতে চাই। ও সত্যিই দারুন খেলেছে।’
এদিকে উইম্বলডনের পুরুষ এককের প্রথম রাউন্ডের বাধা টপকে গেছেন ফেভারিট রজার ফেদেরার। রেকর্ড অস্টম উইম্বলডন জেতার মিশনে এসে এই সুইস তারকা রুমানিয়ার ভিক্টর হানেস্কুর বিপক্ষে ৬-৩, ৬-২, ৬-০ জিতেছেন গেমে। টেনিসের ওপেন যুগে সর্বোচ্চ ৭টি একক উইম্বলডন জয়ের রেকর্ডটি ছিল পিট সাম্প্রাসের দখলে। গত বছর এই রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন ফেদেরার। এবার সাম্প্রাসকে ছাড়ায়ে যাওয়ার লড়াইয়ে ফেদেরার। দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠে গেছেন অ্যান্ডি মারে।
অন্যদিকে মেয়েদের এককে প্রথম রাউন্ডের বাধা টপকে গেলেন দ্বিতীয় বাছাই ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা এবং তৃতীয় বাছাই মারিয়া শারাপোভা। দুজনই জিতেছেন সরাসরি সেটে।
Discussion about this post