এক নাটকীয় ম্যাচে নিজেদের ভুলের খেসারত গুনে জয়ের প্রথম সুযোগ হাতছাড়া করেছিল বাংলাদেশ। ১৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারত শেষ পর্যন্ত সমান ১৯৪ রানে থামে।
তারপরই ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সেই পর্বে নায়ক রিপন মন্ডল। তার পরপর দুই বলে জোড়া আঘাতে ভারত উড়ে যায়। মাত্র দুই বলেই দুই উইকেট হারিয়ে ভারত অল আউট হয়ে গেলে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় একমাত্র ১ রান। যদিও সেই অতিসহজ লক্ষ্যও রীতিমতো চাপের হয়ে উঠেছিল, শেষ পর্যন্ত এক ওয়াইড দিয়েই জয় নিশ্চিত করে ফেলে আকবর আলীদের দল এবং জায়গা করে নেয় এশিয়া কাপ রাইজিং স্টার্সের ফাইনালে।
এর আগে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ গড়ে ১৯৪ রান। ম্যাচের শুরুতেই সোহান ও জিসান আলমের আগ্রাসী ওপেনিং জুটি দলকে এনে দেয় ঝড়ো সূচনা; মাত্র ৪.২ ওভারে আসে ৪৩ রান। জিসান ১৪ বলে ২৬ রান করে ফিরলেও সোহান এক প্রান্ত আগলে রাখেন। ৪৬ বলে তার ৬৫ রানের ইনিংসের ওপর ভর করেই স্কোরবোর্ড এগোতে থাকে।
মাঝের সারিতে জাওয়াদ আবরার, আকবর আলী, আবু হায়দার রনি ও অঙ্কন সেভাবে সুবিধা করতে না পারলেও সপ্তম উইকেটে মেহরব হোসেন ও ইয়াসির আলীর ৬৪ রানের জুটি বাংলাদেশের সংগ্রহকে বড় করে তোলে। মেহরব ১৮ বলে অপরাজিত ৪০ রানে থাকেন এবং ইয়াসির যোগ করেন ৯ বলে ১৭ রান। ভারতের হয়ে দুটি উইকেট তুলে নেন গুরজাপনিত সিং; একটি করে পান হার্শ দুবে, সুয়াশ শর্মা, রামানদীপ সিং ও নামান ধীর।
কাতারের দোহায় ১৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারত ওপেনিং জুটিতে তোলে ৫৩ রান। ভৈবভ সূর্যবংশী মাত্র ১৫ বলে ৩৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দলকে এগিয়ে নেন, প্রিয়াংশ আরিয়া যোগ করেন ২৩ বলে ৪৪ রান। তবে নামান ধীর ব্যর্থ হন এবং দ্রুত উইকেট হারানোয় চাপ বাড়তে থাকে। অধিনায়ক জিতেশ শর্মার ২৩ বলে ৩৩ রানের ইনিংস দলকে লড়াইয়ে রাখলেও মাঝের অংশে ধারাবাহিকতা পাওয়া যায়নি। নেহাল ওয়াদহেরা ও রামানদীপ সিং পাঁচ নম্বর উইকেটে ২৬ রান যোগ করে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন। শেষ পর্যন্ত নেহাল ও হার্শ দুবের ব্যাটে ভারত ম্যাচটিকে টাই করতে সক্ষম হয়।
শেষ ৩ ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ৩৯ রান, হাতে ছিল ৪ উইকেট। আব্দুল গাফফারের ১৮তম ওভার থেকে আসে ১০ রান। এরপর ১৯তম ওভারে বল হাতে আসেন রিপন মন্ডল। সমীকরণ তখন ১২ বলে ২১। এই ওভারের দ্বিতীয় বলেই নেহাল ওয়াদহেরার ক্যাচ ফেলে দেন অধিনায়ক আকবর আলী; পরের বলেই রিপন আউট করেন রামানদীপকে। জিসানের দুর্দান্ত ক্যাচে রামানদীপ ১১ বলে ১৭ রানে ফিরে গেলে ভারতের স্কোরচাপ আরও বেড়ে যায়।
সেই ওভার থেকে মাত্র ৫ রান তুলতে পারে তারা। শেষ ওভারে রাকিবুল হাসানের করা বলে ভারতের দরকার ছিল ১৬ রান; তারা নেয় ১৫। শেষ বলে চার মারলেই জয় পেত ভারত, কিন্তু হার্শ দুবে লং–অন দিয়ে এক রান নিলে ওভারথ্রু থেকে অতিরিক্ত দুই রান আসে এবং ম্যাচটি টাই হয়।
এই নাটকীয় সমীকরণের শেষ অধ্যায়টি হয় সুপার ওভারে। রিপন মন্ডলের আগ্রাসী বোলিংয়ে ভারত মাত্র দুই বলেই দু’টি উইকেট হারিয়ে অল–আউট হয়ে পড়ে। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ কিছুটা নার্ভাস হলেও এক ওয়াইড দিয়েই প্রয়োজনীয় রান নিয়ে নেয়, আর রুদ্ধশ্বাস লড়াই পাড়ি দিয়ে ফাইনালের পথে এগিয়ে যায় আকবর আলীদের দল।










Discussion about this post