একদিন আগেও তিনি ছিলেন হাসির পাত্র! হ্যারি ব্রুকের সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করে ছক্কা বানিয়ে দিয়েছিলেন। সামাজিক মাধ্যমে ঝড় বয়ে গিয়েছিল তার নামে। কিন্তু সময় কখন কাকে নায়ক বানায়, তা কেউ বলতে পারে না। মোহম্মদ সিরাজ ঠিক সেটাই করে দেখালেন ওভালে।
শেষ দিনের সকালে ওভাল যেন নিঃশ্বাস বন্ধ করে অপেক্ষা করছিল। ইংল্যান্ডের চাই মাত্র ৩৫ রান, হাতে ৪ উইকেট। ম্যাচ প্রায় তাদের মুঠোয়। ওদিকে ভারত চাই ৪টি উইকেট-ম্যাচ জেতা নয়, সিরিজে বেঁচে থাকার লড়াই।
দিনের দ্বিতীয় বলেই জেমি ওভারটন মেরে দিলেন টানা দুটি চার। ভারতীয় সমর্থকদের মন ভেঙে পড়ছিল। কিন্তু ক্রিকেট হলো শেষ পর্যন্ত খেলাটাই-এখানে ভাগ্য, চাপ, ঘাম আর অদম্যতায় লেখা হয় পরিণতি।
সেই সময় সিরাজ এলেন। এলেন এবং এলিয়ে দিলেন। জেমি স্মিথ-বিদায়। ওভারটন- এলবিডব্লু। আকাশে উঠল বল, ক্যাচ ফেললেন দীপ- কিন্তু তাতে দমে যাওয়ার মানুষ নন সিরাজ। অ্যাটকিনসন যখন ভয়ংকর হয়ে উঠছিলেন, ঠিক তখনই স্টাম্প উড়িয়ে দিলেন সিরাজ। ওভাল চিৎকারে ফেটে পড়ল। ভারতের জয় মাত্র ৬ রানে।
এই জয় শুধু একটা ম্যাচের নয়। এটা এক প্রত্যাবর্তনের গল্প। সিরাজের ম্যাজিক, এক টিমের সম্মিলিত মানসিক জেদ।
গতকাল চতুর্থ দিনে খেলা থেমেছিল বৃষ্টিতে, খারাপ আলোয়। ইংল্যান্ড এগিয়ে ছিল। রুট করেছিলেন সেঞ্চুরি। ভারতের প্রথম ইনিংসে রান কম ২২৪। ইংল্যান্ড এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত দেয় ৩৭৪ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য। তাড়া করা কি সম্ভব? ইতিহাস বলে- না।
কিন্তু ইংল্যান্ড চেষ্টা করল। এবং ভারত থামিয়ে দিল। না, শুধু বোলিংয়ে নয়, হৃদয়ে আগুন নিয়ে। সিরাজ ছাড়াও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, আকাশ দীপ সবাই লড়লেন। তবে গল্পটা জুড়ে থাকল একটাই নাম-মোহম্মদ সিরাজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত: ১ম ইনিংস ২২৪/১০ ও ২য় ইনিংস ৩৯৬/১০।
ইংল্যান্ড: ১ম ইনিংস ২৪৭/১০ ও ২য় ইনিংস ৮৫.১ ওভারে ৩৬৭/১০ (ব্রুক ১১১, রুট ১০৫, ডাকেট ৫৪, পোপ ২৭, অ্যাটকিনসন ১৭; সিরাজ ৫/১০৪, কৃষ্ণা ৪/১২৬, দীপ ১/৮৫)।
ফল: ভারত ৬ রানে জয়ী।
সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজ ১–১ ড্র।
ম্যাচসেরা: মোহাম্মদ সিরাজ।
সিরিজসেরা: শুবমান গিল ও হ্যারি ব্রুক।
Discussion about this post