ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে জয়ের দেখা পেয়েছে দুই ঐতিহ্যবাহী দল আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। নিজেদের প্রথম ম্যাচে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে এসে স্বস্তির জয় পেয়েছে তারা। আজ বৃহস্পতিবারের আরেক ম্যাচে জিতেছে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব।
আবাহনীর দাপুটে জয়
প্রথম ম্যাচে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবকে ১৬২ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে তারা।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে আবাহনী ৬ উইকেটে ৩২৩ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে। ওপেনার পারভেজ হোসেন দুর্দান্ত ব্যাটিং করে ১২৪ বলে ১২৬ রান করেন, যেখানে ছিল ৯টি চার ও ৮টি ছয়। প্রথম ম্যাচে ফিফটি করার পর দ্বিতীয় ম্যাচেই তিন অঙ্ক ছুঁয়ে নিজেকে প্রমাণ করলেন তিনি। এছাড়া, মোহাম্মদ মিঠুন ৬৫ বলে ৭২, মোসাদ্দেক হোসেন ২৮ বলে ৩৫ ও মাহফিজুর রহমান ১৪ বলে ২৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেন। গুলশানের বোলার আসাদুজ্জামান পায়েল ১০ ওভারে ৬৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন।
গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের ব্যাটসম্যানরা আবাহনীর বোলিং আক্রমণের বিপরীতে তেমন সুবিধা করতে পারেননি। ওপেনার জাওয়াদ আবরার ১৮ বলে ৩৬ রান করে ভালো শুরু করলেও বাকিরা ব্যর্থ হন। গুলশানের সর্বোচ্চ রান আসে খালেদ হাসানের ব্যাট থেকে (৫৪ বলে ৪৯)।
আবাহনীর হয়ে রাকিবুল হাসান ৪ ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ৩ উইকেট শিকার করেন। ১৬১ রানে অলআউট হয়ে যায় গুলশান, আর বিশাল জয় পায় আবাহনী।
মোহামেডানের জয় ও হৃদয়-মাহিদুলের দারুণ ব্যাটিং
প্রথম ম্যাচে নবাগত গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের কাছে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণ জয় পেয়েছে মোহামেডান। রূপগঞ্জ টাইগার্সের দেওয়া ২২৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় তারা।
রূপগঞ্জ টাইগার্সের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন অধিনায়ক আল আমিন জুনিয়র, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৭ রান আসে তানভীর হায়দারের ব্যাট থেকে। মোহামেডানের হয়ে ইবাদত হোসেন, তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ ২টি করে উইকেট শিকার করেন।
রান তাড়ায় তামিম ইকবাল ১৭ বলে ১৪ ও রনি তালুকদার ৪৪ বলে ৩৬ রান করে আউট হলে কিছুটা চাপ তৈরি হয়। তবে এরপর মাহিদুল ইসলাম ও তাওহিদ হৃদয়ের ১০৬ রানের অপরাজিত জুটিতে সহজ জয় নিশ্চিত করে মোহামেডান। মাহিদুল ৯৭ বলে ৮১ রান করে অপরাজিত থাকেন, আর ৪৭ বলে ৭৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন তাওহিদ হৃদয়।
এই ম্যাচে চোটের কারণে খেলেননি মাহমুদউল্লাহ। তার চোটের অবস্থা জানতে এমআরআই করানো হয়েছে, তবে সুস্থ হতে সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পারটেক্সের নায়ক আলাউদ্দিন বাবু
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের রোমাঞ্চকর এক ম্যাচে প্রাইম ব্যাংককে ৩ উইকেটে হারিয়েছে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব। দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে জয়ের নায়ক হয়েছেন অলরাউন্ডার আলাউদ্দিন বাবু।
প্রথমে ব্যাটিং করে প্রাইম ব্যাংক ৮ উইকেটে ২৯৮ রান তোলে। দলের হয়ে শাহাদাত হোসেন ৬১ বলে ৬৪ ও শামীম হোসেন ৬০ বলে ৬৯ রান করেন। এছাড়া, মিডল অর্ডারে ছোট ছোট ইনিংস মিলিয়ে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেয়। বড় রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই চাপে ছিল পারটেক্স। ওপেনার সাব্বির রহমান ৪৩ বলে ৫৩ রান করলেও অন্যরা বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। রুবেল মিয়া ৬৪ বলে ৪১ ও আহরার আমিন ৩৬ বলে ৪৪ রান করে রান তোলার গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন।
কিন্তু ৩৮তম ওভারে আহরার আমিন আউট হলে দলকে বিপদে ফেলে যান। তখন পারটেক্সের প্রয়োজন ছিল ৬৭ বলে ৯৭ রান, হাতে ছিল মাত্র ৪ উইকেট।
এই কঠিন পরিস্থিতিতে উইকেটে আসেন আলাউদ্দিন বাবু এবং ম্যাচের চিত্র বদলে দেন। মাত্র ৩২ বলে ৭৮ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন তিনি। তার ইনিংসে ছিল ৫টি চার ও ৭টি বিশাল ছক্কা। বাবুর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের কল্যাণে পারটেক্স ৪৮ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায়, হাতে ছিল ৩ উইকেট।
Discussion about this post