একটা মাত্র সিরিজের দ্বায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। তিন ম্যাচের জন্য অধিনায়ক। নুরুল হাসান সোহান টি-টুয়েন্টির নতুন অধিনায়ক। বাংলাদেশের নতুন টি-টুয়েন্টি অধিনায়কের চোখ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ নিয়েই ভাবছেন। এই সিরিজেই নিজের অস্তিত্বের জানান দিতে চান অধিনায়ক সোহান।
২৮ বছর বয়সী এই কিপার-ব্যাটসম্যান দলকে ঠিক পথে রাখতে চান। আগামী ৩০ জুলাই হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে অধিনায়ক হিসেবে শুরু হবে সোহানের নতুন পথচলা। সিরিজের বাকি দুটি ম্যাচ ৩১ জুলাই ও ২ আগস্ট, হারাতেই।
টি-টেুয়েন্টির নেতৃত্ব পাওয়ার পর রোববার প্রথম গণমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন নুরুল হাসান সোহান। নেতৃত্ব পাওয়ার পর তিনি যা বললেন তার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো এখানে-
নেতৃত্ব পেলেন কেমন লাগছে..
নুরুল হাসান সোহান : আলহামদুলিল্লাহ, এটা অবশ্যই গর্বের একটা ব্যাপার। সামনে যে চ্যালেঞ্জ আছে এটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি। খুব বেশি রোমাঞ্চিত হওয়ার সুযোগ নেই। দল হিসেবে এবং নিজের সেরাটা দেওয়াই মূল লক্ষ্য। ঘরোয়া ক্রিকেটে আমি যখন অধিনায়কত্ব করেছি, সবসময় একটা চিন্তাই থাকে- দল হিসেবে যেন খেলতে পারি। জিম্বাবুয়েতেও যেন দল হিসেবে খেলতে পারি। দলের পরিবেশও আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সবাই তো পারফর্ম করবে না। দলের সদস্যরা যেন একজনের সাফল্য অন্যরা উপভোগ করি। এই সংস্কৃতি এবং দল হিসেবে খেলা গুরুত্বপূর্ণ।
দল নিয়ে ভাবনা…
টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে ওয়ানডের তুলনায় আমরা পিছিয়ে আছি। উন্নতি করা জরুরী, আমরা সেই চেষ্টাও করছি। ফলাফলের চেয়ে প্রক্রিয়া ঠিক রাখা বেশি জরুরী। এই সিরিজে দল হিসেবে খেলাই বেশি প্রয়োজন।
ক্রিকেটার সোহানের পরিকল্পনা
আমি যদি আমার জীবন নিয়ে কথা বলি, ক্রিকেট ক্যারিয়ার এবং সবকিছু নিয়ে… প্রত্যাশা ও রোমাঞ্চ অনেক কম। আমি নিজে কঠোর পরিশ্রম করব, সৎ থেকে প্রক্রিয়া অনুসরণ করব। ফলাফল, অতীত, ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশি চিন্তা করি না। চাপ থেকে এখন আমি দূরে থাকার চেষ্টা করি। গত অনেক দিন ধরেই এটা করতে পারছি। গত ১-২ বছর ধরে আমি অতীত, ভবিষ্যত নিয়ে ভাবি না। এখন যা করছি সৎভাবে তা করে যেতে চাই।
আফিফ হোসেন ধ্রুবর ব্যাটিং অর্ডার
টিম ম্যানেজমেন্টের সবার সাথে আলোচনা করতে হবে। টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিং অর্ডার সেট করে কিছু করতে পারবেন না। একেক সময় একেক পরিস্থিতি থাকে। পরিস্থিতির ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে।
সিনিয়রদের প্রসঙ্গে..
বাংলাদেশের ক্রিকেটে সিনিয়রদের অবদান ১-২ কথায় শেষ করতে পারব না। তবে সব কিছু একটা প্রক্রিয়ার ভেতর আছে। এটা আমাদের জন্যও সুযোগ। তারা বাংলাদেশ দলকে একটা জায়গায় নিয়ে এসেছেন। আমরা যারা জুনিয়র আছি বা এখন খেলছি তাদের দায়িত্ব হল পরের ধাপে নিয়ে যাওয়া। এটা আমাদের সবার জন্যই সুযোগ। আমরা যেন দল হয়ে খেলতে পারি। এই চেষ্টাই করব। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমের পরিবেশ অনেক উন্নত হয়েছে। এটা যাতে আরও ভালো করতে পারি। আরও ভালো কীভাবে করতে পারি, ঘাটতি পূরণ করতে পারি।
কথা হয়েছে সিনিয়রদের সঙ্গে..
সবার সঙ্গেই কথা হয়েছে। রিয়াদ ভাই, সাকিব ভাই, তামিম ভাই, মুশফিক ভাই; মাশরাফি ভাইয়ের সঙ্গেও কথা হয়েছে। সবার সঙ্গেই কথা হয়েছে।
কী পরামর্শ দিলেন পঞ্চপাণ্ডব…
পরামর্শ আসলে স্বাভাবিকভাবে যেভাবে কথা হয়, এইটাই। খুব বেশি ওরকম কিছু না। সবকিছুই সিম্পল জিনিসটা তাদের কাছ থেকে, অনেক বছর একসঙ্গে খেলেছি। যেটা বললাম তাদের যে অভিজ্ঞতা আছে। সবার অধীনেই খেলা হয়েছে, সবকিছু মিলিয়ে আসলে জিনিসটা নিজের ১০০% দেওয়ার চেষ্টা করব।
এমনি যেটা বললাম, সবার সঙ্গে কথা হয়েছে। নরমাল যে কথাগুলো হয়, এগুলোই। বিশেষ কিছু না। নরমাল যেভাবে কথা হয়, ওরকমই। আর আমার কাছে মনে হয় যেটা, আমি চিন্তা করতেছি জিনিসটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার কিছু নেই। আমি নরমাল যেরকম, ওই ওয়েতে থাকার চেষ্টা করছি। যেটা বললাম, এটা অবশ্যই গর্বের বিষয়। কিন্তু উত্তেজনার কিছু নাই। অবশ্যই একটা চ্যালেঞ্জ, সেটা উপভোগ করতে চাই।
নতুন কোন জিনিস ট্রাই করতে চান?
অনেক কিছু নিয়েই কথা হয়, সেটার প্রভাব যেন খেলোয়াড়দের ওপর না পড়ে। যখন আপনি নির্ভীক তখন অনেক কিছু চিন্তা করার সুযোগ থাকবে। মনের ভেতর ভয় কাজ করলে অনেক নেতিবাচক দিক চলে আসে। যে দল পেয়েছি, আমি খুশি।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নিয়মিত অধিনায়ক টি-টুয়েন্টিতে। উনাকে বিশ্রাম দিয়ে দ্বায়িত্বে আপনি..
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট যখন শুরু করি তখন রিয়াদ ভাই আমার অধিনায়ক ছিল। তার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। সিনিয়র পাঁচজনের কাছ থেকেই শেখার অনেক কিছু আছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা দিয়ে ফলাফল আনতে চাই।
অধিনায়কত্ব নিয়ে ভাবনা…
যেহেতু এই সিরিজের দায়িত্বে আছি, আমার ভাবনার জায়গা এই তিনটা ম্যাচই। টি-টোয়েন্টিতে জয়ের নিশ্চয়তা নেই। তবে অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে প্রক্রিয়া ফলো করে নিজেদের শতভাগ দেওয়া। আপাতত তো জানি এই তিনটা ম্যাচের জন্য আছি। এই তিনটা ম্যাচ নিয়েই পরিকল্পনা করছি। অবশ্যই চ্যালেঞ্জ থাকবে এবং চ্যালেঞ্জ উপভোগ করব।
Discussion about this post