সেই ২০০০ সালে টেস্টের অভিজাত অঙ্গনে পথচলা শুরু। এরপর সাদা পোশাকের ক্রিকেটে কেটে গেছে দুই দশকেরও বেশি সময়! কিন্তু দৃশ্যপট বদলায় নি। আগের মতোই টেনেটুনে এগিয়ে যাচ্ছে। ভরাডুবি হচ্ছে প্রায় প্রতিটি ক্রিকেট সিরিজেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাওয়ার আগে স্বস্তির বাতাস বইছিল বাংলাদেশ শিবিরে। কারণ মুমিনুল হক সরে যেতেই দলের দ্বায়িত্বে এসেছিলেন সাকিব আল হাসান।
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার দলের নেতৃত্বে আসায় চনমনে হয়ে উঠে চারপাশ। কিন্তু মাঠের ক্রিকেটে সেই একই দৃশ্যপট। টানা দুই টেস্টেই হার। হারের বৃত্ত থেকে বেরোতে পারেনি টাইগাররা। অ্যান্টিগা টেস্টের ভুল সামলে উঠতে পারেনি সেন্ট লুসিয়ায়ও। এনিয়ে ২০২২ সালে ৮টি টেস্ট খেলে বাংলাদেশ হারল ৬টিতে। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১ জয়, ঘরের মাঠে মে’তে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১টি ড্র। এটুকুই প্রাপ্তি।
সোমবার উইন্ডিজের কাছে হারে অনাকাংখিত একটা রেকর্ডও হয়ে গেল টাইগারদের। সবচেয়ে কম সময়ে হারের সেঞ্চুরির রেকর্ড এখন দলটির। মাত্র ১৩৪টি টেস্ট খেলেই শততম পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেলেন সাকিবরা। ১৩৪ টেস্টের মধ্যে মাত্র ১৬টি টেস্টে জয়। অমীমাংসিত ভাবে শেষ ১৮ টেস্ট।
উইন্ডিজে ব্যর্থতার পর অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এনিয়ে বললেন, ‘খেলোয়াড়দের দোষ দেওয়া যাবে না। আমাদের দেশের সিস্টেমটাই কিন্তু এমন। আপনি কবে দেখেছেন যে ৩০ হাজার দর্শক টেস্ট দেখছে বা ২৫ হাজার দর্শক মাঠে এসে টেস্ট খেলতে দেখছে। ইংল্যান্ডে তো প্রতি ম্যাচে দেখে। আমাদের দেশে টেস্টের সংস্কৃতিটা ছিল না কখনও, এখনও নেই। নেই বলে যে হবে না তাও কিন্তু না। এটা পরিবর্তন করা আমাদের বড় দায়িত্ব।’
সঙ্গে আরও যোগ করলেন, ‘সেটার জন্য সবাই মিলে যদি পরিকল্পনা করে এগোনো যায় তাহলে কিছু সম্ভব হবে। নয়তো এগোনো সম্ভব না। যেটা বললাম, সংস্কৃতি নেই। টেস্ট ক্রিকেটকে যে খুব বেশি আমরা মূল্যায়ন করি, তাও না। হ্যাঁ, এটা বলতে পারেন যে ভালো রেজাল্ট করি না, তাই মূল্যায়নও হয় না। কিন্তু একটার সঙ্গে আরেকটা সম্পর্ক আছে। তাহলে ভালো কিছু করা সম্ভব। তাই নিশ্চিত করতে হবে যেন দেশে আমরা টেস্ট ম্যাচ সবসময় ভালো খেলি, ধারাবাহিকভাবে।’
জেতার কৌশলটাও বলে দিলেন তিনি। সাকিব বলেন, ‘টেস্ট ম্যাচ জিততে চাইলে সব জায়গায় উন্নতি করতে হবে। আমাদের সামনে ফাঁকা সময় আছে। এই সময়ে যারা টেস্টে আগ্রহী বা খেলতে চায়, তারা যার যার জায়গা থেকে উন্নতির চেষ্টা করবে। উন্নতি ছাড়া আমাদের ভালো কিছু করার রাস্তা নাই। তাছাড়া সেটআপ খেলোয়াড়ও নাই, যারা এসে ভালো করে ফেলবে। যারা আছি, বাইরের দু-চারজন আছে। সবাই মিলে পরিকল্পনা করে এগোতে পারি তাহলে ভালো করা সম্ভব হবে। আমাদের বেশ কিছু জায়গায় পরিবর্তন আনতে হবে, সেজন্য আমাদের চিন্তাগত পরিবর্তন জরুরি।’
Discussion about this post