শুরুতে সাব্বির রহমান-সাকিব আল হাসানের ঝড়ো ব্যাটিং এরপর চিরাগ জানির বোলিং তোপ। দুইয়ে মিলে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের সামনে একেবারে অসহায় গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। অনায়াসেই লিজেন্ডসরা তুলে নিয়ে ৯৬ রানের জয়।
মঙ্গলবার সাভারের বিকেএসপিতে টস জিতে ব্যাট করতে নামে রূপগঞ্জ। ৯ উইকেট হারিয়ে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা তুলে ২৯৩ রান। রান জবাব দিতে নেমে চিরাগের মিডিয়াম পেসের সামনে আত্মসমর্পন গাজী গ্রুপের। তারা অলআউট মাত্র ৯৭ রানে। চিরাগ ৭.২ ওভার বোলিং করে ১৫ রান দিয়ে তুলেন ৫ উইকেট।
ব্যাট হাতে টর্নেডো বইয়ে দেন সাকিব। পাঁচে ব্যাট করতে নেমে ছয়টি চার ও তিনটি ছয়ে ২২৬.৯২ স্ট্রাইক রেটে ২৬ বলে তুলেন ৫৯।
সাব্বির আরেকটি শতরানের পথে ছিলেন। কিন্তু ৯০ রানেই উইকেটকিপার আকবরের হাতে ধরা দেন তিনি। যদিও সাব্বিরের চেহারা দেখে মনে হয়েছিল বল ব্যাটে স্পর্শই করেনি। কিন্তু আম্পায়ারের দেওয়া সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে মাঠ ছাড়েন সাব্বির।
আগের দুই ইনিংসে ব্যাট হাতে ঠিক নিজেকে মেলে ধরতে পারেন নি। বল হাতে সাফল্য নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। কিন্তু এবার সাকিব ব্যাট হাতে রীতিমতো ঝড় তুললেন। মঙ্গলবার ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেটের সুপার লিগে কথা বলল সাব্বির রহমানের ব্যাটও। যদিও ১০ রানের জন্য শতরান পেলেন না তিনি।
সাভারের বিকেএসপিতে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের মুখোমুখি লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। এই ম্যাচে নেমে রীতিমতো টর্নেডো দেখা গেল রূপগঞ্জ তারকা সাকিবের ব্যাটে। প্রতিপক্ষের বোলারদের আক্রমণ তছনছ করে মাত্র ২১ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন সাকিব। সাব্বির রহমানের ব্যাট থেকে আসে ৯০ রান। ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে রূপগঞ্জ তুলল ২৯৩ রান।
রূপগঞ্জের হয়ে আগে সাকিব দুই ম্যাচে করেন মাত্র ২১ ও ৮ রান। কিন্তু নিজের তৃতীয় ম্যাচে এসে মোহামেডান ছেড়ে রূপগঞ্জে নাম লেখানো সাকিব শুরু থেকেই ছিলেন আক্রমণাত্মক। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বোলারদের শাসন করে মাত্র ২১ বলে অর্ধশতক তুলেন। আর ফেরেন ২৬ বলে ৫৯ রানে। এটি তার লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের ৫৯তম ফিফটি। ২২৭ প্রায় স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে ছিল ৬টি চারের সঙ্গে ছক্কা ৩টি। এই ইনিংস খেলার পথে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে আট হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়ে যান তিনি।
লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তৃতীয় দ্রুততম ফিফটি সাকিবের। দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড ফরহাদ রেজার। ২০১৯ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ২০ বলে ৫৬ রানের ইনিংসের পথে ফরহাদ ফিফটি তুলেন ১৮ বলে।
দাপট দেখালেন সাব্বির রহমানও। ১০ রানের আক্ষেপে পুড়ে ৯০ রানে ফেরেন এই লিজেন্ডস তারকা। ৫৩ বলে অর্ধশতক পূরণ করেন সাব্বির। তার ৮৩ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৬টি চার ও ৩টি ছয়ের মার। রকিবুল হাসানের ৪৭ ও নাঈম ইসলামের ৪২ রান করেন।
এরপর বল হাতে দাপট থাকল চিরাগ জানির। প্রতিপক্ষ ৭ ওভার শেষ না হতেই মাত্র ৩০ রানে ৬ উইকেট হারায় আকবর আলীর দল। দাপট থাকল লিজেন্ডসদের। এরমধ্যে দলীয় সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন আটে নামা এ কে এম হুসনা। ২৭ রান এস এম মেহরবের ব্যাটে। ১৫ বলে ১৯ আরাফাত সানি। অন্য কোনো ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের ঘর ছুঁতে পারেননি।
চিরাগ ছাড়াও দারুণ বোলিং করেন আল আমীন ও নাঈম ইসলাম। দুজনই নেন ২টি করে উইকেট। তবে ম্যাচের সেরা সাব্বির রহমানই।
এই জয়ের পরও অবশ্য লিগ শিরোপা পুনরুদ্ধার করা হলো না রূপগঞ্জের। আরেক ম্যাচে আবাহনীকে হারিয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং নেয় আবাহনী লিমিটেড। ৬ উইকেটে ২২৯ রান করে মোসাদ্দেক হোসেনের দল। জবাবে নেমে ৪৭ ওভারে ৪ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে নোঙর করে শেখ জামাল। নূরুল হাসান সোহান খেলেন হার না মানা ৮১ রানের ইনিংস।
১৪ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই লিগ শিরোপা নিশ্চিত করেছে ইমরুল কায়েসের দল। দুইয়ে রয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। সাবেক চ্যাম্পিয়নদের অর্জন ২০ পয়েন্ট।
Discussion about this post