টেস্ট ক্রিকেট মানেই যেন বাংলাদেশের জন্য সেই একই গল্প। একই ব্যর্থতার বৃত্তে পথচলা। দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে সিরিজে দাপট দেখালেও টেস্টে কিছুই করা হচ্ছে না। প্রথম টেস্টের পর দ্বিতীয়টিতেও হতাশাই সঙ্গী হলো বাংলাদেশের। প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৩ রানে অলআউট হয়েছিল দল। এবার দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ অলআউট মাত্র ৮০ রানে। ২৩.৩ ওভারে শেষ ইনিংস।
দক্ষিণ আফ্রিকা তুলে নিয়েছে ৩৩২ রানে। এই জয়ে ২-০ ব্যবধানে বাংলাদেশকে হোয়াইট ওয়াশ করল স্বাগতিকরা। ডারবান টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছিল ২২০ রানে। দুই টেস্টেই বড় হারে হোয়াইটওয়াশ হলো মুমিনুল হকের দল।
৩৮৬ রানে পিছিয়ে থেকে চতুর্থ দিন সোমবার দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। দলের সংগ্রহে তখন ২৭ রান, হাতে ৭ উইকেট। কিন্তু ১ ঘণ্টা পেরোনোর আগেই বাংলাদেশ অলআউট ৮০ রানে।
কেশভ মহারাজ একাই নেন ৭ উইকেট। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২৭ রান তুলেন লিটন দাস। মেহেদী হাসান মিরাজ ২০ ও তামিম ইকবাল করেন ১৩ রান। তারা ছাড়া দুই অঙ্ক পাননি কোনো ব্যাটসম্যান।
এর আগে পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৪৫৩ রনে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে তুলে ২১৭ রান। এরপর টাইগারদের ফলোঅনে না করিয়ে ২৩৬ রানে এগিয়ে থেকেও ব্যাট করতে নামে প্রোটিয়ারা। স্বাগতিকরা ৬ উইকেটে ১৭৬ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। তখন জিততে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১৩। পাহাড় সমান লক্ষ্যের সামনে দাঁড়িয়ে প্রশ্নবিদ্ধ ব্যাটিং করল বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ইনিংসে উইকেটে আসা-যাওয়ার দায়টুকু যেন সারলেন মুমিনুল হকরা। ২০০৭ সালের শ্রীলঙ্কা সফরের পর এই প্রথম টানা দুই টেস্টে একশর নিচে গুটিয়ে গেল দল। টেস্ট ক্রিকেটকে বলা হয় ধৈর্যের খেলা। কিন্তু উইকেটে টাইগার ব্যাটসম্যানরা গেলেন যেন উইকেট বিসর্জন দিতে। কে কার আগে ফিরবেন, সেই খেলাতেই ব্যস্ত ছিলেন তারা। সব মিলিয়ে চতুর্থ দিন সকালেই সর্বনাশ। ওয়ানডে সিরিজ জয়ে সফর শুরু করা বাংলাদেশ, টেস্টে বড় হার সঙ্গী করে ফিরছে দেশে!
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ১৩৬.২ ওভারে ৪৫৩/১০ (এলগার ৭০, এরউইয়া ২৪, পিটারসেন ৬৪, বাভুমা ৬৭, রিকেলটন ৪২, ভেরেইনা ২২, মুল্ডার ৩৩, মহারাজ ৮৪, হার্মার ১৯, উইলিয়ামস ১৩, অলিভিয়ের ০*; খালেদ ২৯-৬-১০০-৩, মিরাজ ২৬.২-৪-৮৫-১, ইবাদত ২৮-৩-১২১-০, তাইজুল ৫০-১০-১৩৫-৬, শান্ত ৩-০-৯-০)।
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৭৪.২ ওভারে ২১৭/১০ (তামিম ৪৭, জয় ০, শান্ত ৩৩, মুমিনুল ৬, মুশফিক ৫১, ইয়াসির ৪৬, মিরাজ ১১, তাইজুল ৫, খালেদ ০*, ইবাদত ০; অলিভিয়ের ১৫-৪-৩৯-২, উইলিয়ামস ১২-২-৫১-০, হার্মার ১০.২-১-৩৯-৩, মহারাজ ২৪-৬-৫৭-২, মুল্ডার ১৩-৭-২৫-৩)।
দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংস: ৩৯.৫ ওভারে ১৭৬/৬ (ডি.)(এলগার ২৬, এরউইয়া ৪১, পিটারসেন ১৪, বাভুমা , রিকেলটন ১২, ভেরেইনা ৩৯*, মুল্ডার ৬; ইবাদত ৫-০-২৯-০, খালেদ ১০-০-৩৮-১, তাইজুল ১৫-২-৬৭-৩, মিরাজ ৯.৫-৩-৩৪-২)।
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৪১৩, আগের দিন ২৭/৩) ২৩.৩ ওভারে ৮০ (মুমিনুল ৫, মুশফিক ১, লিটন ২৭, ইয়াসির ০, মিরাজ ২০, তাইজুল ০, খালেদ ০, ইবাদত ০*, মহারাজ ১২-৩-৪০-৭, হার্মার ১১.৩-১-৩৪-৩)।
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৩২ রানে জয়ী
সিরিজ: দক্ষিণ আফ্রিকা ২-০ ব্যবধানে জয়ী
ম্যাচসেরা: কেশভ মহারাজ
সিরিজসেরা: কেশভ মহারাজ।
Discussion about this post