করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে গোটা বিশ্ব। সবচেয়ে বড় বিপাকে উপমহাদেশের মানুষ। রীতিমতো দিশেহারা সবাই। ভারত জুড়ে আতঙ্ক। দেশটিতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুহার। তারেদ্যেই অবশ্য চলছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ আইপিএল। অতিমারির সময়ও আইপিএল চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে চলছে তুমুল সমালোচনা। যেখানে মুখ খুলেছেন অস্ট্রেলিয়ান কিংবদিন্ত অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও পাকিস্তানি পেসার শোয়েব আখতার।
অ্যাডাম গিলক্রিস্ট টুইটারে লিখেছেন, ‘ভারতের যারা করোনার বিরুদ্ধে লড়ছে তাদের সবার জন্য শুভকামনা। সেখানে করোনার সংখ্যা ভয়ঙ্কর। এ অবস্থায় আইপিএল এখনো চলছে, অযৌক্তিক? অথবা প্রতি রাতের বিভ্রান্তি? আপনার ভাবনা যাই হোক, সবার জন্য প্রার্থনা থাকল।’
এমন কথাও বেশ সংগত। বিশ্বের অন্য দেশগুলো স্টেডিয়ামকে ব্যবহার করছে কোভিড আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে। কিন্তু ভারতের স্টেডিয়ামগুলোতে চলছে বিনোদনের ক্রিকেট।
এনিয়ে সমালোচনার মুখর হলেন শোয়েবও। ব্যক্তিগত ইউটিউব অ্যাকাউন্টে তিনি বলেন, ‘কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভারত। ওদের আইপিএল বন্ধ করা উচিত। ভারতের চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এটা স্থগিতই হওয়া উচিত। পিএসএল বন্ধ হয়ে গেছে বলে আমি এটা বলছি না। আমি মনে করি- জুনেও পিএসএল শুরু করা উচিত হবে না।’
এমন কথার পেছনে কারণ, ভারতে গত ২৫ এপ্রিল করোনা আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ। এখন অব্দি প্রাণহানি ঘটেছে ১৯৫১১৬ জনের। এখন অক্সিজেন ট্যাঙ্কের সঙ্কট প্রকট। অপ্রতুল হাসপাতালে সিট মিলছে না।
শোয়েব বললেন, ‘দেখুন, আইপিএল অতোটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, এ অর্থ অক্সিজেন ট্যাঙ্ক কিনতে ব্যয় হলে ভালো হয়। মানুষজনকে অন্তত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানো যায়। এখন আমাদের ক্রিকেট প্রয়োজন নেই, নায়ক, বিনোদনের ও দরকার নেই আমাদের। ভারত ও পাকিস্তানের মানুষজনের প্রাণের সুরক্ষা চাই আমরা।’
শোয়েবের দেশ পাকিস্তানেও ছড়িয়েছে করোনা। পাকিস্তানকে রুখতে কর্তৃপক্ষের প্রতি কারফিউর আকুতি শোয়েবের। বলেন, ‘আমি সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, রমজানের শেষ ১০-১৫ দিন যেন কারফিউ ঘোষণা করা হয়। ঈদ শপিংয়ে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।’
এদিকে ভারতের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছেন অস্ট্রেলিয়ান হ বেশিরভাগ বিদেশি ক্রিকেটার। এই পরিস্থিতিতে ভারতে থাকতেই যত ভয় তাদের। না খেলে ফিরতে চান দেশে। বাড়ি ফিরতে চাইছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের মেন্টর ডেভিড হাসি। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ফিরে গেছেন- অস্ট্রেলিয়ান ফাস্ট বোলার অ্যান্ড্রু টাই, লিয়াম লিভিংস্টোনরা।
রাজস্থান রয়েলসে এখন বিদেশির সংখ্যা মাত্র চার জন (জস বাটলার, অ্যান্ড্রু মিলার, ক্রিস মরিস, মুস্তাফিজুর রহমান)। কোনও কারণ বশত একজন বিদেশি খেলতে না পারলে নির্দিষ্ট কোটার চেয়ে কম খেলোয়াড় নিয়েই মাঠে নামতে হবে দলটির।
ভারত ছাড়তে গিয়ে প্রয়োজনে ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকদের সঙ্গে কথা বলতে চান তাঁরা। অস্ট্রেলিয়া সরকারের সঙ্গেও কথা বলে রাখতে চান। যাতে প্রয়োজনে বিমান পরিষেবায় কোনও অসুবিধা না হয়।
Discussion about this post