ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
তার ক্যারিয়ারে শুধুই সংগ্রামের গল্প। সেই সংগ্রামে হার বলে কিছু নেই। জাতীয় দলে ফেরার হাল ছাড়েন নি। চার বছর পর ফিরেও ছিলেন জাতীয় দলে। যদিও পোক্ত হয়নি জায়গা। ২০১৮ সালে শেষবার খেলেছিলেন বাংলাদেশের জার্সিতে। বয়স ৩৮ ছাড়িয়ে গেলে তাকে থামানো যায়নি। ঘরোয়া ক্রিকেটে ছিল দারুণ দাপট। তার ধারাবাহিকতায় যখন আরও কিছু দিন খেলার পরিকল্পনা করছিলেন, তখন ডাক মিলল ভিন্ন মিশনে। সাড়া দিলেন আব্দুর রাজ্জাক। জাতীয় দল থেকে সরে নিয়ে শুরু করছেন নতুন মিশন।
শনিবার মিরপুরে বিদায়ের মঞ্চে দাঁড়িয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে যান আব্দুর রাজ্জাক। জাতীয় নির্বাচক হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন তিনি। স্বীকৃত ক্রিকেটে বাংলাদেশের সফলতম বোলার, ঘরোয়া ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা এই বোলার এবার নতুন দ্বায়িত্বে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৬৩৪ উইকেট রাজ্জাকের। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো বাংলাদেশের হয়ে ৫০০ উইকেট নেই অন্য কারোর। ইনিংসে ৫ উইকেট ৪১ বার, ম্যাচে ১০ উইকেট ১১ বার, সবই দেশের হয়ে রেকর্ড। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৪১২ উইকেট দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, ১৭ রানে ৭ উইকেট দেশের হয়ে সেরা বোলিং কীর্তি।
স্বীকৃত ক্রিকেটে ১১৪৫ উইকেট রাজ্জাকের। করেছেন সাড়ে চার হাজারের বেশি রান। রেকর্ড রয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও। ওয়ানডেতে দেশের দ্রুততম ফিফটি তার। সব মিলিয়ে ১৩৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ, ২৮০ লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ ও ৯০ টি-টুয়েন্টি খেলেছেন। ২০১৪ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের পর লম্বা সময় জাতীয় দলের বাইরে। ২০১৮ সালে ফিরে একটি ম্যাচ খেলেন। এরপর আর দেখা যায়নি টাইগারদের জার্সিতে।
৩৮ বছর বয়সী রাজ্জাক বিদায় বেলায় মিরপুরে যা বললেন চলুন দেখে নেই-
‘গতকাল পর্যন্ত আমি বলতে পেরেছি আমি ক্রিকেট খেলোয়াড়, এখন থেকে বলতে হবে অন্যকিছু, যা আমার পেশা। হয়তো জিনিসটা সহজে বলতে পারছি, তবে আমার জন্য এত সহজ নয়। ঘোরের মধ্যে আছি এখনও। ১৯৯৪ সাল থেকে ক্রিকেটের মধ্যে, তখন বিকেএসপিতে ভর্তি হয়েছি। সেটাকে বিদায় বলা, একটা সময় আসলে প্রত্যেক মানুষকেই এক কাজ থেকে অন্য ভূমিকায় যেতে হয়। তারপরও আবেগ বলে যেহেতু একটা কথা আছে, আমার মধ্যে সেটা খুব কঠিনভাবে কাজ করছে। খুব ভালোভাবে কিছু বলা, গুছিয়ে বলা আমার জন্য একটু কঠিন।’
‘আমার পুরো ক্যারিয়ার নিয়ে কোনো হতাশা নেই, এটা নিয়েও (অবসর) নেই। শুরু যেভাবে হয়েছে আমি খুশি ছিলাম। মাঝখানে যেমন চলেছে তাতে খুশির চেয়েও বেশি। আর শেষ যেভাবে হচ্ছে, তাতেও আমি খুশি।’
‘মিস করার কথা যদি বলেন, আমার এই ক্যারিয়ার জীবনের সবচেয়ে বিশেষ জিনিস এটা (প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট)। এটা আসলে ভোলার মতো নয়। প্রত্যেক ধাপে ধাপে মনে পড়বে। মিস করব না ঠিক, স্মরণীয় হয়ে থাকবে। মিস তখন করতাম যদি জোরপূর্বক অবসর হতো। এটা জোরপূর্বক নয়, আমারই সিদ্ধান্ত।’
Discussion about this post