ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
টেস্ট ক্রিকেটে দুঃস্বপ্নের মতোই দিন পার করছিল বাংলাদেশ। একের পর এক হার। দেশের বাইরে টানা ৮ টেস্টে হারের তিক্ত স্বাদ কিছুদিন আগেই পেয়েছে দল। সেই অভিজ্ঞতা সঙ্গী করেই মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ দল। এবার বুঝি পথে ফিরছে টাইগাররা। ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে পরিস্কার দাপট লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের।
৬ উইকেটে ৫৬০ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। এরপর ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়ের ২য় ইনিংসে তৃতীয় দিন শেষে তুলেছে ২ উইকেট হারিয়ে করেছে ৯ রান। শুরুতেই বিপর্যয়ের মুখে তারা। এখনো ২৮৬ রান লিড টাইগারদের। এর আগে সফরকারীদের ১ম ইনিংসে স্বাগতিকরা ২৬৫ রানে গুটিয়ে দিয়েছিল। সব মিলিয়ে তাই মুমিনুল হকের দর জয়ের সুবাস পাচ্ছে।
তামিম ইকবালকে ছাড়িয়ে টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ার পরই ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো ডাবল সেঞ্চুরিতে পা রাখেন মুশফিকুর রহিম। ৩১৫ বলে লেগেছে ডাবল সেঞ্চুরি করতে। শেষ পর্যন্ত ৩১৮ বলে ২৮ চারে ২০৩ রানে অপরাজিত থাকেন মুশি।
টেস্টে তাদের এর চেয়ে বড় ইনিংস আছে কেবল দুটি। ২০১৭ সালে ওয়েলিংটনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৮ উইকেটে করে ৫৯৫ রান। ২০১৩ সালে গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করা ৬৩৮ এখনও সেরা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আগের সেরা ২০১৮ সালে মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে ৭ উইকেটে ৫২২।
আর এই দাপট এনে দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। ডাবল সেঞ্চুরি করলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। সঙ্গে সেঞ্চুরি অধিনায়ক মুমিনুল হকের। টেস্টের তৃতীয়দিনের প্রথম সেশনে কোন উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। তবে লাঞ্চ বিরতি থেকে ফিরেই দুই উইকেটের পতন। দারুণ এক ইনিংস উপহার দিয়ে ফেরেন মুমিনুল হক। মোহাম্মদ মিঠুন দ্রুত অনুসরণ করেন তাকে। এরপরও দাপট স্বাগতিকদের। টেস্টে দশমবারের মতো পাঁচশ ছাড়াল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয়বার গড়ল এই কীর্তি।
অবশ্য ঝড় তোলার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মুমিনুল হক আগেই। কথা রেখেছেন অধিনায়ক। তৃতীয় দিন সকালে পেয়ে যান শতক। আর ২৩৪ বলে ১৪ চারে ১৩২ রান তুলে ফেরেন তিনি। টেস্টে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান পেয়ে গেলেন তার নবম সেঞ্চুরি। একই সঙ্গে স্পর্শ করেন বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ৯ সেঞ্চুরি করা তারকা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবালকে।
তার আগে মুশফিক-মুমিনুল চতুর্থ উইকেটে গড়েন ২২২ রানের জুটি। টেস্টে দশমবারের মতো দুইশ কিংবা এর বড় জুটি পায় বাংলাদেশ।
এতোদিন টেস্টে দুটি করে দুইশ রানের জুটি ছিল তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস এবং মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম জুটির। তাদের টপকে গেলেন মুমিনুল ও মুশফিক। তারা মিলে তিনটি দুইশ রানের জুটি গড়েলেন। ২০১৮ সালে মিরপুরেই চতুর্থ উইকেটে গড়েছিলেন ২৬৬ রানের জুটি।
লাঞ্চের পর মুশফিক পান ক্যারিয়ারের সপ্তম টেস্ট সেঞ্চুরি। ৩২ রানে সোমবার মিরপুরে টেস্টের তৃতীয় দিনে ব্যাট করতে নামেন মুশফিক। অধিনায়ক মুমিনুল হকের সঙ্গে গড়ে তুলেন দারুণ একটা জুটি। চতুর্থ উইকেট জুটির ফিফটি আসে ১০০ বলে। একশ হয় ১৮০ বলে। ২৫১ বলে দেড়শ স্পর্শ করে তাদের জুটির রান। মুশফিক ৯৫ বলে করেন হাফসেঞ্চুরি। ১৬০ বলে করেন সেঞ্চুরি। ২৫৪ বলে করেন দেড়শ রান। আর দুইশ করেন ৩১৫ বলে।
তাদের ব্যাটেই এখন ঢাকা টেস্ট জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। যদিও আবহাওয়া নাকি বৈরি হতে পারে। বৃষ্টি নেমে আসলে আক্ষেপে পুড়বেন মুমিনুল-মুশফিকরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ২৬৫/১০ ও
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: (আগের দিন ২৪০/৩) ১৫৪ ওভারে ৫৬০/৩ (মুমিনুল ১৩২, মুশফিক ২০৩*, মিঠুন ১৭, লিটন ৫৩, তাইজুল ১৪*; টিরিপানো ৩০-৬-৯৬-১, নিয়াউচি ২৭-৩-৮৭-১, রাজা ৩০-১-১১১-১, টিশুমা ২৫-০-৮৫-১, এনডিলোভু ৪২-১-১৭০-২)
জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস: ৯/২
Discussion about this post