ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
গত বছর দারুণ পারফরম্যান্সের সুবাদে কিছুদিন আগে বিবিসির বর্ষসেরা ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব মনোনীত হয়েছিলেন। এবার সেই বেন স্টোকসই নির্বাচিত হয়েছেন আইসিসির বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে। এজন্য এ অলরাউন্ডার জিতেছেন মর্যাদাপূর্ণ স্যার গ্যারি সোবার্স ট্রফি। বুধবার ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থাটি।
এদিকে প্যাট কামিন্স আইসিসির বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন। আর বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন রোহিত শর্মা। ভারতীয় পেসার দিপক চাহার জিতেছেন সেরা টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্সের পুরস্কার। এদিকে বিরাট কোহলি পেয়েছেন ‘স্পিরিট অব দা ক্রিকেট’ পুরস্কার। তবে আইসিসির টেস্ট ও ওয়ানডের সেরা একাদশে ঠাঁই পাননি বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটার।
ব্যাট-বল হাতে দাপট দেখিয়ে গত বছর স্টোকস প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডকে এনে দেন ওয়ানডে বিশ্বকাপ ট্রফি। এদিকে ঘরের মাঠে অ্যাশেজ জিততে না পারলেও স্টোকসের পারফরম্যান্স ছিল দুর্দান্ত। দলের বিপর্যয়ে অসাধারণ দুটি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি অ্যাশেজে, যার একটিতে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ইনিংস খেলে জিতিয়েছেন দলকে। সব মিলিয়ে গত বছর টেস্টে ৮২১ রান করেছেন এই অলরাউন্ডার, উইকেট নিয়েছেন ২২ টি। ওয়ানডেতে করেছেন ৭১৯ রান, উইকেট ১২টি। সব মিলিয়ে ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন ইংল্যান্ডের এ অলরাউন্ডার। যে কারণে এবার আইসিসির বর্ষেসেরা ক্রিকেটার হলেন তিনি।
বর্ষসেরার স্বীকৃতি পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত স্টোকস, ‘সর্বসেরা ক্রিকেটারের স্বীকৃতি স্যার গ্যারি সোবার্স ট্রফি জিততে পারাটা দারুণ তৃপ্তিদায়ক। ইংল্যান্ড ক্রিকেটের জন্য গত ১২ মাস ছিল অবিশ্বাস্য, বিশ্বকাপের ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে পারা ছিল আমাদের সেরা অর্জন। গত ১২ মাস আমার ক্যারিয়ারেও সেরা সময়। এই বছরের অর্জনই সামনের বছরগুলিতে আমাদের আরও সাফল্য পেতে অনুঘোটক হিসেবে কাজ করবে।’
২০১৯ সালে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ছিলেন রোহিত এ ডানহাতি তিন ফরম্যাটে করেছিলেন ১০টি সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপে রেকর্ড সংখ্যাক পাঁচটি সেঞ্চুরিও হাঁকিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে ওডিআই ক্রিকেটে বছরে ৭টি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। যে কারণে গত বছর তিনি হয়েছেন আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার। এমন স্বীকৃতি পেয়ে রোহিত বলেন, ‘আমি আইসিসিকে ধন্যবাদ দিতে চাই, আমাকে এ পুরস্কার দেয়ার জন্য। আর বিসিসিআইকে ধন্যবাদ দিতে চাই দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দেয়ার জন্য। আমরা ২০১৯ সালে যেভাবে দলগতভাবে পারফরম্যান্স করেছি, তাতে আমি খুশি। আমরা আরো ভালো করতে পারতাম। তবে আমরা অনেক ইতিবাচক দিক খুঁজে পেয়েছি। এ বছর সেগুলোকে সরিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।’
এদিকে গত বছর মাত্র ১২ টেস্টে ৫৯ উইকেট নিয়েছিলেন প্যাট কামিন্স। ধারাবাহিক এমন পারফরম্যান্সে তিনি বছর শেষ করেছেন বোলার র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থেকে। বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটার হওয়ার দৌড়ে কামিন্স পেছনে ফেলেন দুই স্বদেশি স্টিভেন স্মিথ ও মার্নাস লাবুশেনকে। এরআগে ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার কোন ক্রিকেটার (স্টিভেন স্মিথ) এ পুরস্কার পেয়েছিলেন। বর্ষসেরা টেস্ট খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়ে কামিন্স বলেন, ‘গত বছরের সেরা টেস্ট খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়া আমার জন্য অনেক সম্মানের। আমি এটা আশা করিনি। গতবছরে দলের সাফল্যের জন্য আমি আমার সতীর্থ থেকে শুরু করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে জড়িত সকলের কাছে ঋণী। বিশেষ করে গত বছরের অ্যাশেজ ধরে রাখা ছিল আমাদের সবচেয়ে বড় আনন্দের বিষয়।’
আইসিসি বর্ষসেরা পুরস্কার ২০১৯
বর্ষসেরা ক্রিকেটার : বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড)
বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটার : প্যাট কাসিন্স (অস্ট্রেলিয়া)
বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার : রোহিত শর্মা (ভারত)
বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রিকেটার : মার্নাস লাবুশেন (অস্ট্রেলিয়া)
বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি পারফর্মার : দিপক চাহার
সহযোগি দেশগুলো থেকে বর্ষসেরা ক্রিকেটার : কাইল কোয়েটজার (স্কটল্যান্ড)
বর্ষসেরা আম্পায়ার : রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ
স্পিরিট অফ ক্রিকেট অ্যাওয়ার্ড : বিরাট কোহলি
বর্ষসেরা নারী ক্রিকেটার : এলিস পেরি (অস্ট্রেলিয়া)
বর্ষসেরা নারী ওয়ানডে ও টেস্ট ক্রিকেটার : এলিস পেরি (অস্ট্রেলিয়া)
বর্ষসেরা নারী উদীয়মান ক্রিকেটার : চিনিদা রাউন্ডিরং (থাইল্যান্ড)
বর্ষসেরা পুরুষ টেস্ট দল : মায়াঙ্ক আগরওয়াল, টম ল্যাথাম, মার্নাস লাবুশেনে, বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), স্টিভ স্মিথ, বেন স্টোকস, বিজে ওয়াটলিং (উইকেটকিপার), প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, নীল ওয়াগনার ও নাথান লায়ন।
বর্ষসেরা পুরুষ ওয়ানডে দল : রোহিত শর্মা, শেই হোপ, বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), বাবর আজম, কেন উইলিয়ামসন, বেন স্টোকস, জস বাটলার (উইকেটকিপার), মিচেল স্টার্ক, ট্রেন্ট বোল্ট, মোহাম্মদ শামি ও কুলদীপ যাদব।
বর্ষসেরা নারী ওয়ানডে দল : অ্যালিসা হেলি (অস্ট্রেলিয়া, ডাব্লু), স্মৃতি মান্ধনা (ভারত), তামসিন বিউমন্ট (ইংল্যান্ড), মেগ ল্যানিং (অস্ট্রেলিয়া, অধিনায়ক), স্টাফানি টেলর (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), এলিসি পেরি (অস্ট্রেলিয়া), জেস জোনাসেন (অস্ট্রেলিয়া), শিখা পান্ডে (ভারত), ঝুলন গোস্বামী (ভারত), মেগান শুট (অস্ট্রেলিয়া) ও পুনম যাদব (ভারত)।
বর্ষসেরা নারী টি-টোয়েন্টি দল: অ্যালিসা হেলি (অস্ট্রেলিয়া, ডব্লিউ কে), ড্যানিয়েল ওয়াট (ইংল্যান্ড), মেগ ল্যানিং (অস্ট্রেলিয়া, অধিনায়ক), স্মৃতি মান্ধনা (ভারত), লিজেল লি (দক্ষিণ আফ্রিকা), এলিস পেরি (অস্ট্রেলিয়া), দীপ্তি শর্মা (ভারত), নিদা দার (পাকিস্তান), মেগান শুট (অস্ট্রেলিয়া), শাবনিম ইসমাইল (দক্ষিণ আফ্রিকা), রাধা যাদব (ভারত)।
Discussion about this post