ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিল আলোড়ন তুলে। বল হাতে কাটার আর ইয়র্কারের যাদুতে হয়ে উঠেছিলেন প্রতিপক্ষের জন্য আতঙ্কের এক নাম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কিংবা আইপিএল সব জায়গাতেই ছিল মুস্তাফিজুর রহমানের বন্দনা। কিন্তু শুরুতে ইনজুরি তারপর অফ ফর্মে হারিয়েই গেছেন এই পেসার। এখন সাদামাটা এক বোলার তিনি।
বল হাতে কোন অস্ত্রই যেন নেই তার হাতে। এ কারণে হতাশও করছেন তিনি। লাইন-লেংথ ও স্কিল কোন কিছুই নেই। মুস্তাফিজের বোলিংয়ের দুর্দশায় হতাশা ব্যক্ত করলেন হাবিবুল বাশার সুমন। বাঁ হাতি পেসারের উন্নতির চেষ্টা না দেখেও বিরক্ত বাংলাদেশ জাতীয় দলের নির্বাচক।
বুধবার রংপুর রেঞ্জার্সের বিপক্ষে ঝড়ো ইনিংস খেলার পথে তার বলে টানা চারটি ছক্কা মারেন কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের অধিনায়ক দাসুন শানাকা। টানা ছক্কা মারলেও লেংথ বদলান নি মুস্তাফিজ। এমনটা হরহামেশাই ঘটছে। এ কারণে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও মাঠে নামানো হয়নি তাকে।
বাংলাদেশের হয়ে ৭ টি-টুয়েন্টিতে উইকেট নিয়েছেন মাত্র ৪টি। এই দ্য ফিজকে দেখে হতাশ বাশার। যিনি বিপিএলে রংপুর রেঞ্জার্সের টেকনিক্যাল পরামর্শক।
হাবিবুল বাশার গণমাধ্যমে যা বলেছেন বৃহস্পতিবার, তা এখানে তুলে ধরা হলো-, ‘আমার মনে হচ্ছে ওকে চিন্তা করতে হবে। আমরা ব্যাটসম্যানরা, বোলাররা চিন্তা করি ম্যাচ শেষে যে কী হচ্ছে। ইটস হাই টাইম ফর হিম, ভাবতে হবে যে ব্যাটসম্যান আমাকে পড়ে ফেলছে, দ্বিতীয় পরিকল্পনায় যেতে হবে। কোচ হয়তো তাকে বলবে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ক্রিকেটারকেও বুঝতে হবে, আমার কিভাবে বোলিং করা উচিত। প্রথম ম্যাচে দুই ওভার সে দারুণ বোলিং করেছে। শেষ দুই ওভারে সে অনেকটা প্রেডিক্টেবল ছিল। একই লেংথে বোলিং করছে, একইভাবে মার খাচ্ছে। বোলার মার খেতেই পারে। টি-টোয়েন্টিতে শানাকা তো দারুণ ব্যাটসম্যান। কিন্তু সমস্যা হলো, মুস্তাফিজ আলাদা কিছু করার চেষ্টা করছিল না।’
বাশার আরও বলেন, ‘আমার মনে আছে, অনেক আগে জিম্বাবুয়ের এক ব্যাটসম্যান আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল মুস্তাফিজের কাটার সামলানোর উপায়। আমি বলেছিলাম, ক্রিজ থেকে এগিয়ে এসে দাঁড়াতে, তাহলে কাটারের কার্যকারিতা কমে যাবে। তখন ওই ব্যাটসম্যান বলেছিল, ‘এগিয়ে দাঁড়ালে তো ১৪০ কিলোমিটার গতিতে ইয়র্কার মারে!’ তো, ব্যাটসম্যানদের তখন অনেক ভাবনা ছিল ওকে নিয়ে। এখন নেই। গত এক বছরে মুস্তাফিজের ইয়র্কার প্রায় হারিয়ে গেছে। আগে দারুণ একটা ইয়র্কার ছিল। স্লোয়ার বল এখনও আছে। পেসও আস্তে আস্তে বাড়ছে। এখন মোটামুটি ভালো পেসেই বল করছে। কিন্তু ইয়র্কার মিসিং। সে একটু বেশি প্রেডিক্টেবল হয়ে যাচ্ছে। এটাই আমার দুর্ভাবনার জায়গা। ব্যাটসম্যানরা বুঝে ফেলছে যে ও কী করতে যাচ্ছে।’
যদিও বল হাতে উইকেট পাচ্ছেন মুস্তাফিজ। কিন্তু খরুচেও তিনি। এটাই ভাবাচ্ছে বাশারকে। বলেন, ‘মুস্তাফিজ কিন্তু উইকেট পাচ্ছে। গত এক বছরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ও। কিন্তু খুব খরুচে হয়ে যাচ্ছে। শেষের দিকে অনেক রান দিচ্ছে। আমাদের মূল ডেথ বোলার মুস্তাফিজ। সে যদি খরুচে বোলিং করে, তাহলে পুরো দলের ওপরই চাপ চলে আসে। ও স্পেশাল বোলার। এজন্যই চাওয়াটা একটু বেশি থাকে। ও যদি খরুচে হয়, তাহলে বাকিদের দিয়ে কভার করা মুশকিল। দিনশেষে পার্থক্য করে দেয় পারফরম্যান্সই। সে স্পেশাল বোলার, এটা আমি বিশ্বাস করি। কিন্তু এটা নিয়মিত প্রমাণ করতে হবে তাকে।’
Discussion about this post