ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
হঠাৎ করেই উত্তাল দেশের ক্রিকেট। দেশের ক্রিকেট ঠিকমতো চলছে না-এই অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। সোমবার দুপুরে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নিজেদের দাবি–দাওয়া তুলে ধরেন সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীমসহ অন্য ক্রিকেটাররা।
মোট ১১ দফা দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন ক্রিকেটাররা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেটীয় কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন। তার পথ ধরে অনিশ্চয়তায় পড়ল ভারতের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজ। আসছে মাসের ৩ নভেম্বর শুরু হবে এই সিরিজ।
ভারত সফরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজ খেলবে। এরপর নিজেদের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করবে ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ দিয়ে। এই ধর্মঘটের প্রভাব সেই সিরিজে পড়তে পারে।
ক্রিকেটারদের অসন্তোষ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ওপর। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়- বিপিএলের আগামী আসরে কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি থাকবে না। বোর্ডের নিজস্ব অর্থায়নে হবে এই টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। এতে করে শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটারদের আয় অনেক বেশি কমে যাবে।
প্রথম শ্রেণির ঘরোয়া ক্রিকেট জাতীয় লিগ শুরু হয়েছে। সেখানেও ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি বাড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু তাদের ম্যাচ ফি বাড়ানো হয়নি। এ অবস্থায় মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সোমবার দুপুরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এই ঘোষণা দেন সাকিব, তামিম, মুশফিকসহ অন্য ক্রিকেটাররা।
ক্রিকেটারদের মুখপাত্র হিসেবে সাকিব বলেন, ‘দাবিদাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কোনো ধরনের ক্রিকেট কার্যক্রমে অংশ নেবেন না ক্রিকেটাররা।”
এর ফলে ২৪ অক্টোবর শুরু হতে যাওয়া জাতীয় ক্রিকেট লিগের তৃতীয় রাউন্ড আর ২৫ অক্টোবর শুরু হতে যাওয়া জাতীয় দলের ক্যাম্প অনিশ্চয়তার মুখে পড়ল। সাকিব বলেন, ‘জাতীয় দল, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারসহ সবাই এই ধর্মঘটের অন্তর্ভূক্ত এবং সেটা আজ থেকে। জাতীয় লিগ থেকে শুরু করে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট বলেন, জাতীয় দলের প্রস্তুতি বলেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বলেন সবগুলোই এর অন্তর্ভূক্ত।’
আলোচনার দরজা খেলা রেখেছেন ক্রিকেটারররা। সাকিব বলেন, ‘আলোচনা সাপেক্ষে অবশ্যই সবকিছুর সমাধান হবে। দাবিগুলো যখন মানা হবে তখন আমরা আমরা স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে যাব। আমরাও সবাই চাই ক্রিকেটের উন্নতি হোক। এখানে একটা ক্রিকেটার কেউ তিন-চার বছর খেলবে, কেউ দশ বছর আছে। যারা ভবিষ্যতে আসবে, তাদের জন্য আমরা একটা ভালো পরিবেশ রেখে যেতে চাই যেখান থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেট সামনে এগিয়ে যাবে।’
দাবির মধ্যে রয়েছে চুক্তিভুক্ত খেলোয়াড়দের সংখ্যা বাড়ানো। খেলোয়াড়দের বেতন বৃদ্ধি, বিসিবির গ্রাউন্সম্যান থেকে শুরু করে অন্যান্য বেতনভুক্ত কর্মীদের আর্থিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি। ১১ দফা দাবিতে আরও আছে ঘরোয়া ক্রিকেট বিশেষ করে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অনিয়ম ও দুর্নীতির অবসান। ঘরোয়া ক্রিকেটের টুর্নামেন্টের সংখ্যা বাড়ানোর দাবিও তোলা হয়েছে।
সামনেই অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সামনে বিশ্বকাপ আছে, তাই তাদেরকে এই ধর্মঘটের আওতায় রাখা হচ্ছে না বলে জানালেন সাকিব।
Discussion about this post