শেষপর্যন্ত ড্র হল চট্রগ্রাম টেস্ট। অবশ্য আগের দিনই নির্ধারিত হয়েছিল টেস্টের ভাগ্য। রোববার নিউজিল্যান্ড ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৭ রান তুলে তাদের দ্বিতীয় ইনিংস ইনিংস ঘোষণা করে। এরপর জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৫৬ রান। ব্রেন্ডন ম্যাককালাম চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু হাতে ওভার কম থাকায় ঝুঁকি নেয়নি বাংলাদেশ। শেষপর্যন্ত ৪৮.২ ওভারে ১৭৩ রান তুলতেই দিনের খেলা শেষ হয়ে যায়।
তামিম ইকবাল ৪৬ ও মার্শাল আইয়ুব ৩১ এবং ১৮ রান করে আউট হয়ে গেছেন এনামুল হক। ৫০ রান নিয়ে সাকিব আল হাসান এবং ২২ রান নিয়ে মমিনুল হক ছিলেন অপরাজিত।
নিস্প্রান হয়ে উঠা চট্রগ্রাম টেস্টে যেন প্রান ফিরিয়ে আনলেন সোহাগ গাজী। ব্যাট হাতে সেঞ্চুরির পর টেস্টের শেষদিনে রোববার বল হাতে হ্যাটট্রিক করলেন বাংলাদেশের এই স্পিনার। এটি বাংলাদেশের কোন ক্রিকেটারের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক। এর আগে মুলতানে ২০০৩ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন অলক কাপালি। তবে একই টেস্টে হ্যাটট্রিক এবং শতরান এই প্রথম করে দেখালেন বাংলাদেশের কোন ক্রিকেটার।
রোববার নিজের ২৪ তম ও নিউজিল্যান্ডের ৮৫তম ওভারের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বলে যথাক্রমে কোরি অ্যান্ডারসন, বিজে ওয়াটলিং এবং ব্রেসওয়েলকে আউট করেন সোহাগ। মেতে উঠেন হ্যাটট্রিক আনন্দে! সোহাগ ইনিংসে ৭৭ রান দিয়ে নেন ৬ উইকেট। ১৩৬ বছরের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে হ্যাটট্রিকসহ ৬ উইকেট ও সেঞ্চুরি করলেন তিনি। ইতিহাসে উঠল সোহাগ গাজীর নাম।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শনিবার চতুর্থ দিনের শেষ ঘন্টার খেলা বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ায় রোববার পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা নির্ধারিত সময়ের ত্রিশ মিনিট আগে সকাল নয়টায় শুরু হয়। নিউজিল্যান্ড ১ উইকেট হারিয়ে ১১৭ রান নিয়ে খেলতে নামে।
এর আগে নিউজিল্যান্ডকে দারুণ জবাব দেয় বাংলাদেশ। মমিনুলের পর এবার সোহাগ গাজী। টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংসটাই শনিবার খেলেন তিনি। আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে তুলে নিলেন লড়াকু এক সেঞ্চুরি! তাতেই প্রথম ইনিংসে লিড নিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৫০১ রানে অলআউট হয়ে যায় মুশফিক রহীমের দল। সোহাগ গাজী ১০১ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন। এটিই টেস্টে তার প্রথম সেঞ্চুরি। তারও আগে ১৮১ রানে ফিরে আউট হয়ে যান মমিনুল হক। মুশফিকুরের ব্যাট থেকে আসে ৬৭। নাসির করেন ৪৬। নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংসে ৪৬৯ রান তুলে অলআউট হয়েছিল।
২১ অক্টোবর ঢাকায় সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
নিউজিল্যান্ড: ১ম ইনিংসে ৪৬৯/১০ (উইলিয়ামসন ১১৪, ওয়াটলিং ১০৩, ফুলটন ৭৩, বোল্ট ৫২*; রাজ্জাক ৩/১৪৭) ও ২য় ইনিংসে ২৮৭/৭ ডিক্লে. (ফুলটন ৫৯, রাদারফোর্ড ৩২, উইলিয়ামন ৭৪, টেইলর ৫৪*, ম্যাককালাম ২২, অ্যান্ডারসন ৮, ওয়াটলিং ০, ব্রেসওয়েল ০, সোধি ২২*; সোহাগ ৬/৭৭, নাসির ১/২০)
বাংলাদেশ: প্রথম ইনিংস ৫০১/১০ (মমিনুল ১৮১, সোহাগ ১০১*; ব্রেসওয়েল ৩/৯৬) ও ২য় ইনিংস ১৭৩/৩ (তামিম ৪৬, এনামুল ১৮, মার্শাল ৩১, মমিনুল ২২*, সাকিব ৫০*; মার্টিন ২/৬২, সোধি ১/৫৭)
ফল: টেস্ট্র ড্র
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সোহাগ গাজী।
http://youtu.be/Ay-LrNWYnWs
Discussion about this post