ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
একবার, দুইবার নয় ছয়বার বহুজাতিক টুর্নামেন্টে শিরোপা ছোঁয়ার খুব কাছে গিয়েও হতাশ হওয়ার অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশের। ঠিক সেই পরিস্থিতিতে আবারও পড়েতে যাচ্ছিল স্টিভ রোডসের শিষ্যরা। কিন্তু শুক্রবার তেমনটি হতে দেননি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ২২ গজে নেমে দলের প্রয়োজনে রীতিমত ঝড় তোলেন এ ডানহাতি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ২৪ বলে ৫২ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে লাল-সবুজদের প্রথম শিরোপার স্বাদ পাওয়ান। ম্যাচ শেষে এ ডানহাতি বলেন মাশরাফি বিন মর্তুজায় অনুপ্রেরণায় জ্বলে ওঠার রসদ পেয়েছেন।
২৪ ওভারে জিততে বাংলাদেশের করতে হবে ২১০ রান। ব্যাপারটি টাইগারদের জন্য বেশ কঠিনই। তবে ওপেনিং জুটিতে তামিম-সৌম্য সেই কাজটিই একটু হলেও সহজ করে দেন। পরে মুশফিকুর রহিম দারুণ খেলে দলকে জয়ের পথেই রাখেন। তারপরও একটা সময় দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে হতাশায় পড়েছিল টিম টাইগার্স। ঠিক সে সময় ডেসিং রুমে মাশরাফি বিন মুর্তজা উঠে নতুন ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেনের কাছে গিয়ে পিঠ চাপড়ে দেন। কানে দুটি মন্ত্রও পড়ে দেন। যা নাকি এ ডানহাতির কাজে লেগেছে ২২ গজে যেয়ে।
মোসাদ্দেক যখন উইকেটে যান, তখন জয় থেকে টাইগাররা দূরে ৬৭ রান। হাতে বল ৫০। বর্তমান ক্রিকেটেব্যাপারটি খুব কঠিন কিছু নয়। এ অবস্থায় যদি আরেকটি উইকেট পড়ে যায়? এ প্রশ্নটাই ছিল সবার মধ্যে। যাহোক সেসব আর ভাবতেই দেননি মোসাদ্দেক। এক প্রান্ত আগলে রেখে ঝড় তুলে মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে ৭ বল আগেই জয় তুলে নেন এ ডানহাতি।
ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমে অধিনায়কের কাছ থেকে পাওয়া প্রেরণার কথা জানিয়েছেন মোসাদ্দেক, ‘উইকেটে যাওয়ার আগে মাশরাফি ভাই বলছিলেন, ‘সৈকত তুই পারবি। যা ইচ্ছা খেল, শেষ করে আয়।’ শুধু ওই সময়ই নয়, আগের ম্যাচে বোলিংয়ের সময়, এমনকি এবার ঢাকা লিগের পুরো সময়, মাশরাফি ভাই আমাকে নানাভাবে উৎসাহ দিয়ে গেছেন। দলের বাইরে ছিলাম তখন। উনি বলেছেন যে, কি কি করলে দলে ফিরতে পারি। অধিনায়ক এমন ভরসা করলে আত্মবিশ্বাস সবসময়ই ভালো থাকে।’
অধিনায়কের কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে মোসাদ্দেক চেষ্টা করেছিলেন ২২ গজে শুধু ইতিবাচক খেলব। শেষ পর্যন্ত সফল হতে সেই কৌশলই কাজে লেগেছে তার, ‘ব্যাটিংয়ে যাওয়ার পর আমার একটি ব্যাপারই কাজ করছিল যে ইতিবাচক ক্রিকেট খেলব। এমন একটা পরিস্থিতি ছিল যে খুব সহজ ছিল না। আমি চেষ্টা করেছি বল বুঝে খেলতে। আর কিছু না।’
বৃষ্টির কারণে টাইগারদের লক্ষ্যমাত্রা ২৪ ওভারে ২১০ রান ঠিক হয়। ঠিক তখন থেকেই সিনিয়ররা সবাই ড্রেসিং রুমে জুনিয়রদের জুগিয়েছেন সাহস। ম্যাচ শেষে মোসাদ্দেক যেমনটি বলছিলেন, ‘আমরা যখন ফিল্ডিং করে ফিরেছি, তখন মাশরাফি ভাই থেকে শুরু করে মুশফিক ভাই, তামিম ভাই, রিয়াদ ভাই, সবাই একটা কথা বলছিলেন যে, আমাদের যে ব্যাটিং সামর্থ্য আছে এবং পুরো টুর্নামেন্টে যেমন খেলেছি, আমাদের পক্ষে এই রান তাড়া করা সম্ভব।’
Discussion about this post