প্রথমে মাঠ প্রসঙ্গ: পুরো মাঠে বালি ভরা। ওপরে ছিটানো ঘাস। বল মাটিতে পড়লে আর সামনে বাড়ে না। এমন মাঠ আর যাই হোক-ক্রিকেটের জন্য মোটেও উপযুক্ত নয়। নিচে নরম মাটি না থাকায় বালির ধারে হাত পা ছিলে যাওয়ার শঙ্কা থাকছে।
এবার উইকেট: বল মাটিতে পড়ার পর ব্যাটে আসতে এত বেশি সময় লাগে যে ব্যাটসম্যান ইচ্ছে করলে বোতলের ছিপি খুলে পানি খাওয়ার জন্য সময় নিতে পারেন! সেই বল আবার হাঁটুর উপরে উঠে না। এতই ধীর গতি!
এই উইকেট আর যাই হোক-ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্য মোটেও উপযুক্ত নয়।
এমন মাঠ এবং উইকেটে সেঞ্চুরি পাওয়ার পরও তাই তামিম ইকবাল বলছেন-‘ আজকের (কাল) খেলাটা আমার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। খেলা ছিল বাদল ভাইয়ের দলের সঙ্গে। গত প্রায় কয়েক বছর ধরে আমি যার দলেই খেলেছি। কাজেই একটা অন্যরকম চ্যালেঞ্জ ছিল; তার দলের সঙ্গে ভালো খেলব। কিন্তু খেলতে এসে আমি খুবই হতাশ। এবারের প্রিমিয়ার লিগকে ‘লিস্ট-এ’ ধরা হয়েছে। তার মানে এ আসরের মর্যাদা বেড়েছে। কিন্তু মাঠ ও উইকেট খুবই খারাপ। এত জঘন্য বাজে মাঠ ও উইকেটে আমি জীবনে কোনোদিন খেলিনি। প্রিমিয়ার লিগ তো বহুদূরে, এ মাঠ কোয়ালিফাই ক্রিকেটেরও উপযোগী নয়। হওয়াও উচিত নয়। এবারের লিগে এ মাঠে আর খেলা আয়োজন করা ঠিক হবে না। আমি এ মাঠে ১০০ করছি আল্লাহপাকের রহমতে। আমরা সৌভাগ্যবশত ভালো করেছি। আমি একটু বেশিই ভালো খেলেছি। যে কারণে স্কোর গিয়ে ২৪৬-এ ঠেকেছে। কিন্তু এটা আসলে অত রানের পিচ নয়। দ্বিতীয় ইনিংসে যেমন দেখেছেন তেমনই হওয়া উচিত।’ আউটফিল্ড ও পিচের পাশাপাশি আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা না থাকায়ও হতাশ তামিম। তা জানাতে গিয়ে বলেই ফেলেছেন-‘সকালে টয়লেট ব্যবহার করতে গিয়ে দেখি পানি নেই। টয়লেটের আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধাও নেই। পরে ইন্টারন্যাশনাল হোস্টেলে গিয়ে টয়লেট সেরেছি। মোট কথা-মাঠ, আউটফিল্ড পিচ ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা কিছুই তৈরি নয়। এটা হয়তবা দুই বছর পর ভালো মাঠ হবে। আন্তর্জাতিক খেলা হবে। অনেক সুযোগ-সুবিধাও হয়তো বাড়বে। কিন্তু এখন এটা মোটেই খেলার উপযোগী হয়ে ওঠেনি। তাই এখানে ম্যাচ দেওয়া ঠিক হয়নি। উইকেটও তৈরি নয়। আগামী ১০ দিনও এমনই থাকবে।’
সত্যিই তাই। পুরো মাঠের আউটফিল্ডের হতশ্রী অবস্থা দেখে খেলতে আসা এবং খেলা দেখতে আসা সবাই হতাশ । একটা অগোছালো পরিবেশ। প্রিমিয়ার লিগ খেলার মতো অবশ্যই নয়। দেশীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় এ আসর এবার আবার লিস্ট ‘এ’র মর্যাদা পেয়েছে। সে আলোকে বিচার করলে গতকাল বিকেএসপির যে তিন নম্বর মাঠে ব্রাদার্স ইউনিয়ন আর গাজী ট্যাংকের খেলা হয়েছে, সেটা সবদিক থেকেই প্রতিকূল। খেলা উপযোগী নয়। মাঠের বাইরে প্যাভিলিয়নে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটকে সামনে রেখে গ্র্যান্ডস্ট্যান্ড, ড্রেসিংরুম ও অন্যান্য কক্ষ তৈরির কাজ চলছে। দেয়াল ভাঙার ঠুকঠাক, দরজা-জানালার কাচের ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দে কান ঝালাপালা। শুধু সেটাই নয়, বাউন্ডারির দড়ির ঠিক বাইরে বালুতে ভরা। নির্মাণকাজে ব্যবহারের বালু এদিক-ওদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। পায়ে পায়ে তা মাঠের ভেতরেও চলে গেছে। আউটফিল্ডের উপরে বালুর পরিষ্কার স্তর পড়ে গেছে।
উইকেটের অবস্থাও করুণ। এমনিতে স্লো। বেশিরভাগ ডেলিভারিই পড়ে নিচু হয়ে যাচ্ছিল। কোনো বল বিপজ্জনকভাবে লাফিয়ে না উঠলেও নিচু হয়েছে প্রায় সময়ই।
Discussion about this post