চট্টগ্রাম ট্যাজেডির দুঃখ ঢাকায় এসে ভুলতে পারল বাংলাদেশ। শেষ টেস্ট ১০৮ রানের এক চমক জাগানিয়া জয়। ইংলিশদের টেস্টের অভিজাত ময়দানে প্রথমবারের মতো হারের তৃপ্তি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন মুশফিকুর রহীম। রোববার কি বললেন বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক, চলুন দেখে নেই একনজরে।
স্বপ্নেও কি ভেবেছিলেন ইংল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে তিনদিনে জিতবেন?
আসলে কোনেকিছু স্বপ্ন না থাকলে সেটা বাস্তব করা কঠিন। ইংল্যান্ড যখন শুনলাম আসবে তখন থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম যে এমন উইকেট বানাবো সেটা যেন তিন থেকে চার দিনের হয়। যে উইকেটে আমাদের স্পিনাররা অনেক হেল্প পাবে এবং ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের অনেক সমস্যা হবে। তো আমরা চট্টগ্রাম টেস্টে অনেক ভালো খেলেছি। আমরা দুটি দলই পাঁচদিন ধরে অনেক ফাইট করেছি। ওটা যে উইকেট ছিলো তিন বা সাড়ে তিনদিনের বেশি হয় তো যাওয়া কথা ছিলো না। সেদিক থেকে বলবো আমাদের টিম ম্যানেজম্যান্ট বা আমাদের খেলোয়াড় বলেন যে পরিকল্পনা ছিলো সেটা এক্সিকিউট করেছে আমাদের বোলাররা এবং আমাদের ব্যাটসম্যানরা অনেক ভালো খেলেছে।
টেস্ট সিরিজ ২-০ তেও জেতা যেতো…
আসলে এটা ক্রিকেট খেলা। এটা যেকোনো দিকে হতে পারে। কারণ আমরা এটাও আশা করিনি যে ১০০ তে কোনো উইকেট না হারিয়ে আজই ওরা অলআউট হবে। অন্তত আমরা ভেবেছিলাম একটা উইকেট পড়লে, উইকেটের যে আচরণ হয়তো ভিন্ন কিছু হতেও পারে। চট্টগ্রামে যেমন ওরাও জানতো আমার বা সাব্বিরের যে একটা উইকেট নিতে পারলে জিততে পারবে। একটা বিশ্বাস ছিলো পার্টনারশিপ ব্রেক করলে নতুন ব্যাটসম্যানদের জন্য অনেক কঠিন। আপনি জানেন না ১১০ রানে দুই বা তিনটা পড়তে পারে। এটা নিয়ে আমরা নিজেরাও ডিসকাস করেছি। আর অবস্থায় বোলাররা অনেক ভালো বোলিং করেছে। বিশেষ করে সাকিব আর মিরাজ অসাধারণ বোলিং করেছে। সেদিক থেকে বলবো হতাশা নেই বা আক্ষেপও নেই। কারণ আমরা যে সুযোগটা প্রথম টেস্টে পেয়েছি সেখান থেকে শিখে আমরা দ্বিতীয় টেস্টটা জিতেছি। বড় একটা অর্জন বাংলাদেশ দলের জন্য।
এটাই কি বাংলাদেশের সেরা অর্জন?
আমার মনে হয় হয় এখন পর্যন্ত এটা বড় একটা অর্জন বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে। সামনে এমনও সুযোগ আসবে যেখানে আমরা ২-০ তে সিরিজ জিততে পারি বড় কোনো দলের বিপক্ষে। একজন অধিনায়কের জন্য স্বস্তির ব্যাপার যে সাত বা আট নাম্বারে বা যারা নতুন আসছে দলে তারা অনেক অবদান রাখছে দলের জন্য। এটা একটা ভালো দলের জন্য ভালো দিক।
মিরাজকে নিয়ে কিছু বলুন
মিরাজের বিষয়টা আমরা অনেক আগেই জানতাম ওর ব্যাপারে। আমরা এটা অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছি যে ইংল্যান্ড আসলে আফগানিস্তানের না খেলাই ওকে ইংল্যান্ডের সাথে খেলাবো। ওর সম্পর্কে ওরা যেন কোনো কিছুই না জানতে পারে। তবে এটা সত্যি কথা এতো ভালো করবে এটা আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি নাই। সম্পূর্ণ কৃতিত্ব ওর। ওর ব্যাটিংয়েও অনেক ক্যালিভার আছে। ব্যাটিং-বোলিংয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য সামনে অনেক রেকর্ড রেখে যাবে যেটা কি না ভাঙা অনেক কঠিন হবে।
স্পিনিং উইকেটে খেলা নিয়ে মন্তব্য
ব্যক্তিগত ভাবে বিশ্বাস করি, এই সিরিজে ২০ উইকেট নেওয়ার মতো বোলার আমাদের ছিল। স্পিনে যত সম্ভব ভালো খেলুক না কেন তবুও সম্ভব। সেদিক থেকে সেই পরিকল্পনা আমাদের ছিল। আমরা ভালোভাবে বাস্তবায়ন করেছি। এর কৃতিত্ব মিরাজ, সাকিব, তাইজুলের। আমাদের ব্যাটসম্যানদের মতো তাদেরও এটা শেখার ব্যাপার ছিল যে, এই উইকেটে কিভাবে বল করতে হয়। আশা করি, ভবিষ্যতে এমন উইকেট আরও দেখবেন যেখানে আমরা চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করব।
Discussion about this post