ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
চট্টগ্রামের পর ঢাকাতেও বিপাকে বাংলাদেশ। হোম অব ক্রিকেটে টস হারাটাই যেন বড় ক্ষতির কারণ হয়েছে। চাপে থেকেই টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে টাইগাররা। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪০৯ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাব দিতে ২ উইকেটে ১০৫ রানে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। এখনও ৩০৪ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ।
ম্যাচের যে দৃশ্যপট তাতে চাপে থেকেই তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবে বাংলাদেশ। শনিবার সকালে ব্যাট হাতে নামবেন মুশফিক রহিম ২৭ ও মোহাম্মদ মিথুন ৬ রানে ব্যাট হাতে নামবেন। দু’জন জমা কনে ৩৪ রান।
শুক্রবার নক্রুমাহ বোনার, জশুয়া ডি সিলভা ও আলজারি জোসেফ সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে ছিলেন। কিন্তু তাদের কাউকেই তিন অঙ্কে পৌঁছাতে দেননি তাইজুল, মেহেদি হাসান মিরাজ ও আবু জায়েদ রাহী। তারপরও সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাংলাদেশের সামনে দাঁড় করায় বড় স্কোর। জবাব দিতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি টাইগারদের। ১ রানেই সৌম্য সরকারকে হারায় দলটি। চার বল খেলে রানের খাতা না খুলে মিড উইকেটে কাইল মায়ার্সকে ক্যাচ দেন সৌম্য। এর কিছুক্ষণ পরই ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালালেন। কিন্তু পা নড়েনি, শটও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। বল গালিতে গিয়ে ধরা পড়েছে এনক্রুমা বোনারের কাছে। ঐ ব্যাটসম্যানকে সাজঘরের পথ দেখান শেনন গ্যাব্রিয়েল।
সৌম্য ও শান্তকে হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরানোর দারুণ চেষ্টা করেন তামিম ইকবাল ও মুমিনুল হক। তৃতীয় উইকেটে তারা ২২ গজে এক প্রকার ঝড় তোলেন। প্রতি ওভারেই আদায় করে নেন বাউন্ডারি। যে ধারাবাহিকতায় এ জুটি হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করে মাত্র ৬৮ বলে। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরই হঠাৎ ছন্দপতন ঘটে টাইগার শিবিরে। রাকিম কর্নওয়ালের বাউন্ডি স্পিনে কাট করতে গিয়ে ভুল করে বসেন মুমিনুল। বল ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষকের হাতে। ফেরার আগে মুমিনুল করেন ৪ চারে ২১ রান। তার বিদায়ে ভাঙে ৫৮ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি।
মুমিনুলের বিদায়ের পর নিজেকে আর ২২ গজে যেন ধরে রাখতে পারলেন না তামিম। কিছুক্ষণ পরই আলজারি জোসেফের মিডেল স্ট্যাম্পড বরাবর বলে জোরে শর্ট খেলতে গিয়ে বিপদে পড়েন তামিম। মোজলির হাতে মিডউইকেট সহজ ক্যাচ দিয়ে বসেন। ফেরার আগে তামিমের ব্যাট থেকে আসে ৪৪ রান। তার ইনিংসে ৬টি চার ও ১টি ছয়ের মার ছিল।
এরআগে আগের দিনের ৫ উইকেটে ২২৩ রান নিয়ে শুক্রবার ফের ব্যাটিং শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোনার ও ডি সিলভা। তারা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই খেলছিলেন। ষষ্ঠ উইকেটে তারা যোগও করেছিলেন ৮৮ রান। শেষ পর্যন্ত এ জুটি বাংলাদেশ ভাঙতে পারে মিরাজের কল্যাণে। বোনারকে (৯০) মিথুনের ক্যাচে পরিণত করে ফেরান মেহেদি হাসান মিরাজ। কিন্তু তারপরও স্বাগতিকদের বিপদ কাটেনি। কেননা সপ্তম উইকেটে দারুণ ১১৮ রানের জুটি গড়ে ক্যারিবীয়দের এগিয়ে দেন ডি সিলভা ও আলজারি জোসেফ। এরইমধ্যে সেঞ্চুরি আশা জাগিয়ে ছিলেন সিলভা। কিন্তু ব্যক্তিগত ৯২ রানের মাথায় তাইজুল তাকে বোকা বানিয়ে করেন বোল্ড। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তখন ৭ উইকেটে ৩৮৪। হতাশায় মোড়ানো এক সেশনে হঠাৎ আলোর দেখা পায় বাংলাদেশ। তাই আশা করা হয়েছিল, এবার বুঝি বোলাররা নিজেদের ফিরে পাবেন। সত্যিকার অর্থেই টেল এন্ডের দেখা মিলেছে। ক্রমেই নাগালের বাইরে চলে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর যদি চার শর নিচে থামানো যায়। কিন্তু সেটা তারা পারেনি জোসেফের কারণে। তবে বোলাররা প্রতিপক্ষকে খুব বেশিও এগোতে দেননি। ২৫ রানে শেষ ৪ উইকেট নিয়ে সফরকারীদের ৪০৯ রানে থামিয়ে দেয় টিম টাইগার্স।
ডি সিলভা ফিরলেও জোসেফ খেলছিলেন স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যানের মতোই। কিন্তু তিনিও আর বেশি দূর যেতে পারেননি। আউট হয়ে যান ৮২ রানে। গত ডিসেম্বরেই হ্যামিল্টনে তিনি ফিরেছিলেন ৮৬ রানে।
প্রথম দিনে দুটি করে উইকেট শিকারি আবু জায়েদ চৌধুরি ও তাইজুল ইসলাম ভাগাভাগি করে নেন শেষ চার উইকেট। মিরপুরে সবশেষ টেস্টেও আবু জায়েদ নেন ৪ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস : ৪০৯/১০ (১৪২.২; ক্যাম্পবেল ৩৬, ব্রাথওয়েট ৬৭, মোজলি ৭, বোনার ৯০*, মায়ার্স ৫*, ব্ল্যাকউড ২৮, জশুয়া ৯২, জোসেফ ৮২, কর্নওয়াল ৪*, ওয়ারিকান ২ ও গ্যাব্রিয়েল ৮; রাহি ৪/৯৮, মিরাজ ১/৭৫, নাঈম ০/৭৪, তাইজুল ৪/১০৮ ও সৌম্য ১/৪৮)
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ১০৫/৪ (তামিম ৪৪, মুমিনুল ২১, মুশফিক ২৭*, মিঠুন ৪*; গ্যাব্রিয়েল ২/৩১, কর্নওয়াল ১/১৮, জোসেফ ১/৩৪)
A good day for West Indies as they have restricted Bangladesh to 105/4 at stumps on day two 🏏
The hosts still trail by 304 runs.#BANvWI ➡️ https://t.co/Es33PQRdna pic.twitter.com/MONCHmHNyD
— ICC (@ICC) February 12, 2021
Discussion about this post