বৃহস্পতিবার (১ জুন) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় মিলিয়ে সর্বমোট ১৩০৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন। ২০২৩-২৪ সালের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত বাজেটে গত বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় প্রায় ৩১৮ কোটি টাকা কমল।
উন্নয়ন খাতে ৩৮২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং পরিচালন খাতে ৯২৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে উন্নয়ন খাতের পরিমাণ ছিল ৭৮৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং পরিচালন খাতের পরিমাণ ছিল ৮৪৭ কোটি ৯০ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে গত অর্থ বছরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মোট সংশোধিত বাজেট এর পরিমান ছিল ১৬৩৪ কোটি ৪০ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। অর্থাৎ এবারের প্রস্তাবিত বাজেট গত বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৩২৪ কোটি ৫৪ লাখ ৪৯ হাজার টাকা কম।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের আওতায় যে সমস্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অধিকতর উন্নয়ন, উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৮৬টি প্রকল্প, কুষ্টিয়া শেখ কামাল স্টেডিয়াম, পাবনা শহীদ এ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন স্টেডিয়াম ও বিদ্যমান সুইমিং পুলের উন্নয়ন, ইনডোর ক্রিকেট নেট প্র্যাকটিস সেড নির্মাণ, শরীয়তপুর জেলা স্টেডিয়ামের অধিকতর উন্নয়ন, চাঁদপুর জেলা স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুলের অধিকতর উন্নয়ন, বরিশাল শেখ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরন, ভোলার গজনবী স্টেডিয়ামের অধিকতর উন্নয়ন। এছাড়াও প্রতিবন্ধী ক্রীড়াবিদদের জন্য বিভিন্ন স্টেডিয়ামে প্যাভিলিয়ন ভবন নির্মার্ণসহ খেলার মাঠ উন্নয়ন প্রকল্পে এবারের বাজেটে মোট ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আজ জাতীয় সংসদে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত বাজেট বক্তৃতায় বলেন, শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা এবং সুস্থ বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে ক্রীড়াজগতের উন্নয়ন প্রয়োজন। সরকার ক্রীড়ার মানোন্নয়ন ও খেলাধুলার সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আধুনিক স্টেডিয়াম, জিমনেসিয়াম, সুইমিংপুলসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মান ও সংষ্কার এবং ক্রীড়া ক্লাবসমূহে বিনামূল্যে ক্রীড়া সামগ্রী প্রদান করে আসছে।
তাছাড়া উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ১২৫টি উপজেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরো ১৮৬টি উপজেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।
দক্ষ খেলোয়াড় তৈরীর জন্য ক্রীড়া প্রতিভা অন্বেষণ কবে বিভিন্ন বিভাগ থেকে নিয়মিত প্রতিভাবান খেলোয়াড় খুঁজে বের করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। পাশপাশি খেলোয়াড়দের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ প্রদান, ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় জাতীয় ও বয়স ভিত্তিক দল প্রেরণ ও অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া হচ্ছে। আমাদের খেলোয়াড়দের সাফল্য বিশ্ব দরবারে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশের মেয়েরাও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় স্বত:স্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করে সফলতার স্বাক্ষর রাখছে। খেলোয়াড়দের কল্যানের দিকেও সরকার বিশেষ দৃষ্টি রাখছে। বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ ও সংগঠকদের জন্য শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরষ্কার প্রবর্তন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যান ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে প্রতি বছর অস্বচ্ছল, আহত ও অসমর্থ ক্রীড়াবিদ, সংগঠকদের মাসিক ভাতা ও এককালীন অনুদান এবং চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
Discussion about this post