নুরুল হাসান সোহান ব্যাট হাতে দাপট। আজ রোববার চমৎকার ব্যাটিংয়ে শতক ছুঁয়ে তিনি খেললেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। একই দিন দেখা গেল সাদমান ইসলামের ব্যাটে শতরান। এদিন জিতল সোহানের ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) রোববারের আরেক ম্যাচে প্রায় সাত বছরের সেঞ্চুরি খরা কাটান সাদমান ইসলাম। তার সেঞ্চুরিতে টানা তৃতীয় জয় পেল অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। রোববারের অন্য ম্যাচে- পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবকে হারায় নবাগত গুলশান স্পোর্টিং ক্লাব।
সোহানের ব্যাটে ম্যাজিক
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে রবিবার ব্যাটিং বিপর্যয়ের মাঝেও একাই লড়লেন নুরুল হাসান সোহান। তার ক্যারিয়ার সেরা ১৩২ রানের অপরাজিত ইনিংস দলকে এনে দিল বড় সংগ্রহ। এরপর সানজামুল ইসলামের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৯৭ রানে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে হারিয়ে জয়ে ফিরল ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ধানমন্ডি। পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারানোর পর চাপের মুখে দাঁড়িয়ে যান সোহান। হাবিবুর রহমান ৪২ বলে ৪৫ রান করে আউট হলে, সানজামুল ইসলামকে নিয়ে ১১৩ রানের জুটি গড়েন সোহান।
সোহান ১১৪ বলে নিজের পঞ্চম লিস্ট ‘এ’ সেঞ্চুরি করেন এবং শেষ পর্যন্ত ১৩১ বলে ১৩ চার ও ৪ ছক্কায় ১৩২ রানে অপরাজিত থাকেন। তার ইনিংসে ভর করেই ধানমন্ডি ৫০ ওভারে ২৭৭ রান সংগ্রহ করে। ২৭৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ব্যাকফুটে ছিল শাইনপুকুর। একমাত্র রহিম আহমেদ (৪২) ও মিনহাজুল আবেদিন (৩৫) কিছুটা লড়াই করেন, কিন্তু বাকিরা ব্যর্থ হলে ১৮০ রানে অলআউট হয় দলটি।
ধানমন্ডির হয়ে সানজামুল ইসলাম ১০ ওভারে ৪৯ রানে ৪ উইকেট ও কামরুল ইসলাম ৮ ওভারে ২৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দলের সহজ জয় নিশ্চিত করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৭৭/৯ (হাবিবুর ৪৫, জাকিরুল ২, ফজলে মাহমুদ ১২, ইয়াসির ৬, সোহান ১৩২*, সানজামুল ৪০, মইন ৬, জিয়াউর ০, এনামুল ১৪, কামরুল ১১, মুরাদ ১*; রাফি ১০-১-৪৬-২, ফাহাদ ৮-০-৬১-০, আলি ৭-০-৪৯-২, আনোয়ার ১০-০-৩৮-১, রাফসান ১০-১-৪৫-৩, রহিম ৫-০-৩৫-০)
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব: ৪৫.৩ ওভারে ১৮০ (রানা ১৩, মইনুল ৫, অনিক ১৯, রহিম ৪২, মিনহাজুল ৩৫, রাফসান ১৩, জুবায়ের ৪, আলি ২২*, আনোয়ার ২, রাফি ১৫, ফাহাদ ৮; মুরাদ ১০-১-৪২-০, কামরুল ৮-০-২৩-৩, সানজামুল ১০-১-৪৯-৪, এনামুল ১০-১-৩১-১, জিয়াউর ৪-০-১৮-১, মইন ৩-০-১৪-০, হাবিবুর ০.৩-০-২-১)
ফল: ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাব ৯৭ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: নুরুল হাসান সোহান
সাদমানের সেঞ্চুরিতে অগ্রণী ব্যাংকের হ্যাটট্রিক জয়
অন্য ম্যাচে সাত বছরের সেঞ্চুরি খরা কাটালেন সাদমান ইসলাম। তার ১১৫ রানের অপরাজিত ইনিংসে রূপগঞ্জ টাইগার্সকে ৭ উইকেটে হারিয়ে টানা তৃতীয় জয় পেল অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব।
লক্ষ্য ছিল ২৬১ রান। ওপেনিংয়ে নামা সাদমান শুরুতে ধীরগতিতে খেললেও শেষ পর্যন্ত ১০৮ বলে ১১ চার ও ২ ছক্কায় ১১৫ রানে অপরাজিত থাকেন। তার সঙ্গে মার্শাল আইয়ুবের ৩৩ রানের ইনিংস সহজ জয় এনে দেয় দলকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৬০ (মজিদ ৭, অমিত ৮১, গালিব ৫৭, আল আমিন ৩২, আরিফুল ৪০, তানবীর ২, মাহমুদুল ৭, হুসনা হাবিব ৫, ফাহাদ ২, জীবন ১*; রবিউল ৭-০-৪৪-১, শুভাগত ১০-০-৫৩-১, রুয়েল ৮-০-৪২-৩, নাঈম ৬-০-৩৪-০, আরিফ ১০-১-৪২-১, তাইবুর ৯-০-৪১-৩)
অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ৪৪.৫ ওভারে ২৬১/৩ (সাদমান ১১৫*, ইমরানউজ্জামান ২৮, ইমরুল ৬২, অমিত ১৫, মার্শাল ৩৩*; ফাহাদ ৩-০-২৮-০, ফয়সাল ১০-০-৪৯-০, মাহমুদুল ৬-০-৩৬-১, হুসনা হাবিব ৭-০-৪৩-০, জীবন ৮-০-৩৯-০, আরিফুল ১.৫-০-১২-০)
ফল: অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: সাদমান ইসলাম
গুলশানের টানা দ্বিতীয় জয়, পারটেক্সের হার
দিনের শেষ ম্যাচে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবকে ৫৭ রানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে গুলশান স্পোর্টিং ক্লাব। ২২১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে পারটেক্স মাত্র ১৬৪ রানে অলআউট হয়। আজিজুল হাকিম ৭৯ বলে ৬২ রান করে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
গুলশান ক্রিকেট ক্লাব: ৫০ ওভারে ২২১/৯ (জাওয়াদ ৬, আজিজুল ৬২, লিটন ২২, ইফতেখার ৩২, নাঈম ২৭, মেহেদি ২৩, হবিবুর ১, ফরহাদ ১০, নিহাদ ০, ইলিয়াস ২১*, পায়েল ৪*; তৌফিক ১০-০-৫৬-৩, আলাউদ্দিন ১০-০-২৫-১, শহিদুল ১০-০-৪৬-২, জাওয়াদ ১০-০-৪১-০, নাঈম ৫-১-২৪-১, রবিউল ৪-০-২৫-১, রুবেল ১-০-৩-০)
পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব: ৪৩.২ ওভারে ১৬৪/১০ (জয়রাজ ২৯, রুবেল ১১, সাব্বির ৪, আহরার ৬, আদিল ১৯, রবিউল ৩০, জাওয়াদ ১৭, আলাউদ্দিন ১৩, শহিদুল ১২, নাঈম ১২, তৌফিক ০*; মেহেদি ৮-১-৩৮-১, ফরহাদ ৪-০-১৩-০, পায়েল ৮-০-৩২-২, নিহাদ ৯-১-৩৫-২, নাঈম ৫-০-২৪-২, ইলিয়াস ৮.২-২-১৪-১, আজিজুল ১-০-৪-০)
ফল: গুলশান ক্রিকেট ক্লাব ৫৭ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: আজিজুল হাকিম
Discussion about this post