টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট মানেই গতি, শক্তি আর ঝড়ো ব্যাটিং। সেই খেলায় সাদমান ইসলামকে দেখা যায় না প্রায়ই- দেখা গেলেও তার নামের পাশে থাকে শৃঙ্খলাবদ্ধ ইনিংস, বড় শট নয়। কিন্তু শনিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যেন নতুন এক সাদমানের জন্ম হলো। শান্ত-সৌম্য ব্যাটার হঠাৎই রঙিন ক্রিকেটে ঝড় তুললেন, তুলে নিলেন জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে প্রথম সেঞ্চুরি।
রেকর্ডটি তৈরি হলো ঢাকা মেট্রোর হয়ে বরিশাল বিভাগের বিপক্ষে ম্যাচে। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে চমকে দেন সাদমান। রুয়েল মিয়ার প্রথম ওভারে তিনটি বাউন্ডারি মেরে বুঝিয়ে দেন, আজ তিনি অন্য মেজাজে আছেন। অপরপ্রান্তে মাহফিজুল ইসলাম রবিনও ছিলেন সমান তালে। দুজনের উদ্বোধনী জুটিতে ১৭৭ রান- যা এখন পর্যন্ত জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টির সর্বোচ্চ জুটি।
আগের ২০ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সাদমানের একমাত্র ফিফটি ছিল ৫৪ রানের ইনিংস। স্ট্রাইক রেটও ছিল মাত্র ৯৩.২১। সেই ব্যাটারই এদিন খেললেন ৬১ বলে ১০১ রানের ইনিংস, যাতে ছিল ১১টি চার ও ৪টি ছক্কা। ৩৬ বলে ফিফটি পূর্ণ করার পর বাকি সময়টা তিনি ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। মাহফিজুল করেন ৪৯ বলে ৭৯ রান, কিন্তু ইনিংসের নায়ক ছিলেন একাই-সাদমান ইসলাম।
অষ্টাদশ ওভারে ইফতেখার হোসেন ইফতির বলে মাহফিজুল ক্যাচ দেন, কিন্তু সাদমান তখন সেঞ্চুরির দোরগোড়ায়। ৫৯ বলে শতরান স্পর্শ করে আউট হন ইনিংসের শেষ ওভারে। ২০ ওভার শেষে ঢাকা মেট্রোর বোর্ডে ১৯৭ রান।
বরিশালের জবাবে প্রতিরোধ গড়ার মতো কেউই ছিলেন না। ওপেনার আজমির আহমেদ ২৬ রান করলেও বাকিরা ছিলেন সম্পূর্ণ ব্যর্থ। রকিবুল হাসান, মারুফ হোসেন ও আবু হায়দারের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বরিশাল গুটিয়ে যায় ১০১ রানে। ৯৬ রানের বিশাল জয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরে উঠে আসে ঢাকা মেট্রো। ম্যাচসেরার পুরস্কার পান শতরান করা সাদমান ইসলাম।
আজকের দিনের অন্য ম্যাচেও দেখা গেছে নাটকীয়তা। রংপুরকে ১৪৪ রানে থামিয়ে রাজশাহী জিতেছে ৬ উইকেটে। বাঁহাতি স্পিনার আবু হাশিম তিন বলে তিন উইকেট নিয়েও দলের জয় এনে দিতে পারেননি- মাঝের একটি বল ওয়াইড হওয়ায় হাতছাড়া হয় হ্যাটট্রিক।
রান তাড়ায় ২৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে রাজশাহী, কিন্তু সাব্বির রহমান ও শাকির হোসেন শুভ্র ষষ্ঠ উইকেটে ৭৪ রানের জুটি গড়ে দলকে টেনে তোলেন। শুভ্র শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৫২ রানে, ম্যাচসেরার পুরস্কারও যায় তার হাতেই।
Discussion about this post