ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
নিশ্চিত করেই শাস্তির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে সাকিব আল হাসানকে। শুক্রবার মিরপুরে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের (ডিপিএল) ম্যাচে আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে স্টাম্পে লাথি দেওয়া ও স্টাম্প আছাড় দেওয়ার ঘটনা তদন্ত করছে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা সিসিডিএম। ম্যাচের দুই আম্পায়ার ইমরান পারভেজ ও মাহফুজুর রহমান এবং ম্যাচ রেফারি মোরশেদুল আলমের প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছে সিসিডিএম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষমা চাইলেও বেশ বিপাকে আছেন মোহামেডান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
বিসিবির পরিচালক ও সিসিডিএম প্রধান কাজী ইনাম আহমেদ শুক্রবার বিকেলে গণমাধ্যমে বলেন, ‘এখানে ম্যাচ রেফারি, আম্পায়াররা একটা প্রতিবেদন দেবে। এখানে নিয়মনীতি যা থাকার, সবই আছে। নিয়ম ভাঙলে কী হয়, সেটাও সবাই জানে। যে প্রতিবেদনই আসুক, আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করব।’
সিসিডিএম চেয়ারম্যান কাজী ইনাম আহমেদ জানালেন, নিয়ম অনুযায়ীই হবে সব। বলেন, ‘খেলার মাঠে অনেক কিছুই হয়। আজকে আবাহনী-মোহামেডানের খেলা ছিল এবং এখানে বেশ উত্তেজনা ছিল, কিছু ঘটনাও ঘটেছে। সাকিব আল হাসানকে আমরা দেখতে পেয়েছি। এটা ফেসবুক লাইভ এবং ইউটিউব লাইভেও ছিল। তাই আপনারা সবাই দেখতে পেয়েছেন। এটা দুর্ভাগ্যজনক।’
শুক্রবার দুপুরে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে ম্যাচে তিন দফায় বিতর্কিত ঘটনার জন্ম দেন সাকিব। প্রথমবার লাথি মারেন স্টাম্পে, এরপর স্টাম্প তুলে আছাড় মারেন। আবাহনীর ড্রেসিং রুম বা গ্যালারির দিকে দৃষ্টিকটু ইঙ্গিত করেন। তখন অবশ্য তার দিতে তেড়ে আসেন আবাহনী কোচ খালেদ মাহমুদ। জবাব দেন সাকিব নিজেও!
আবাহনীর রান তাড়ার পঞ্চম ওভারে। সাকিবের টানা দুই বলে ছক্কা-চার হাঁকান আবাহনী অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। সেই ওভারের শেষ বলে মুশফিকের প্যাডে লাগে বল। বোলার সাকিব আম্পায়ারের দিকে তাকিয়ে আবেদন করার পরই বাঁপায়ে লাথি মারেন স্টাম্পে। আম্পায়ার ইমরান পারভেজের সঙ্গে শুরু হয় তর্ক।
তারপর ষষ্ঠ ওভারের পঞ্চম বলে যখন বৃষ্টি শুরু হলে মাঠকর্মীদের দিকে ইশারায় কাভার আনতে বলেন আম্পায়ার মাহফুজুর রহমান। সাকিব তখন আবার আম্পায়ারের দিকে এগিয়ে গিয়ে কিছু বলেন। আর তিনটি স্টাম্পই তুলে আছাড় মারেন মাটিতে।
আম্পায়ারের সঙ্গে তর্ক চলে। এ অবস্থায় মাঠ ছাড়ার সময় আবাহনীর ড্রেসিং রুমের বাইরে থেকে সাকিবের দিকে কিছু বলতে বলতে এগিয়ে যান কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। সাকিবও উত্তেজিত হন। মোহামেডানের ক্রিকেটাররা তখন থামান সাকিবকে। মাঠ ছাড়ার শামসুর দৌড়ে আবাহনীর ড্রেসিং রুমের দিকে গিয়ে থামান সুজনকে।
বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে আবাহনীর বিপক্ষে মোহামেডান জয়লাভ করে ৩১ রানে। এরপর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবি পরিচালক ও সিসিডিএম প্রধান কাজী ইনাম আরও বলেন, ‘ক্রিকেট এমন একটি খেলা যেখানে উত্তপ্ত একটি মুহূর্ত এসে যেতে পারে, কিন্তু আমরা আশা করি, সবসময় খেলোয়াড় তাদের মেজাজ ধরে রাখবে। যাই হোক, এটা স্বীকৃত ম্যাচ, এখানে নিয়ম আছে। ম্যাচ রেফরি, আম্পায়ার্স, তারা একটা রিপোর্ট দিবেন। আশা করছি, আজ তাদের রিপোর্ট আসবে। সব রুলস কিন্তু আছে, কোনো নিয়ম ভাঙলে নিয়ম অনুযায়ীই সব হবে।’
কাজী ইনাম আরও বলেন, ম্যাচের মধ্যে অনেক সময় কোনো কারণে খেলোয়াড় উত্তেজিত হয়ে যেতেই পারে, কিন্তু তাদের সবার বিশেষ করে সিনিয়র খেলোয়াড়দের অবশ্যই মেজাজ ধরে রাখতে হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজকের ম্যাচে সেটা হয়নি। কিন্তু আমার এটাও বলতে হবে আমি নিজেও ছোটবেলা থেকে আবাহনীর সাপোর্টার। এরা সবাই পেশাদার খেলোয়াড়, আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়। আজ যা হলো ভালো কোনো উদাহরণ নয়। ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা। ক্রিকেটে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। কখনও তার সিদ্ধান্ত আপনার পছন্দ নাও হতে পারে, কিন্তু খেলাটা তো চালিয়ে যেতে হবে। আমি জানি না সিদ্ধান্ত কি ছিল তবে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’
Discussion about this post