জিম্বাবুয়ের হারারেতে যখন ৫৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল, তখন খুব কম মানুষই হয়তো ভাবতে পেরেছিল জয় সম্ভব। প্রোটিয়ারা তখন ১২৮ রানের ছোট লক্ষ্য নিয়েই ছিল স্বস্তিতে। কিন্তু ব্যাট হাতে একাই দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন একজন-সামিউন বশির রাতুল। তার ব্যাটেই লেখা হলো অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এক স্মরণীয় জয়ের গল্প।
আজ ম্যাচের শুরুতে দুর্দান্ত বোলিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩৪.৪ ওভারে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশ। ডানহাতি পেসার আল ফাহাদ নেন ৪ উইকেট, সাথে সামিউনের ২ উইকেট।
জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমেই শুরুটা ঝড়ো করে বাংলাদেশ। মাত্র ৯ বলে ২১ রান তুলে নেয় দল, যার মধ্যে ওপেনার জাওয়াদ আহমেদের ৯ বলে ২০ রান ছিল উল্লেখযোগ্য। কিন্তু এরপর একে একে রিফাত, রিজান, তামিম, আবদুল্লাহরা ফিরে গেলে মাত্র ৫৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দল।
এই চাপের ভেতরেও একপ্রান্তে ধৈর্য ধরে খেলে যেতে থাকেন রাতুল। সপ্তম উইকেটে আল ফাহাদকে নিয়ে ৩১ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন। এরপর উইকেট পতন চলতেই থাকে—দেবা, ইকবাল ফিরলে স্কোর দাঁড়ায় ১০৯/৯। জয়ের জন্য তখনও দরকার ২০ রান, হাতে মাত্র এক উইকেট।
ঠিক সেই মুহূর্তে শুরু হয় রাতুলের একক লড়াই। শেষ ব্যাটার স্বাধীন ইসলামকে বল না দিয়েই বাকি রানগুলো নিজেই তুলে নেন তিনি। ২৮তম ওভারে দুটি চার, এরপর ২৯তম ওভারে পরপর চার ও ছক্কা, সবশেষে কাভারে ঠেলে জয়সূচক রান-প্রত্যেকটি শট ছিল আত্মবিশ্বাস ও কৌশলের নিখুঁত মিশ্রণ।
৪৫ রান করে অপরাজিত রাতুল ছিলেন ম্যাচের অবিসংবাদিত নায়ক। এটাই তার যুব ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রান। রান তাড়ায় তার ইনিংসটাই ছিল সবচেয়ে বড়, পরের সর্বোচ্চ ছিল মাত্র ২০।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৩৪.৪ ওভারে ১২৮/১০ (ফন স্কালভিক ১০, লাগাডিন ৭, বুলবুলিয়া ১৩, রোলেস ৪, জেমস ২৪, ম্যানাক ২৮, বসম্যান ২৪*, কিতশিনি ১, ব্যাসন ১, বয়েস ৪, মাজেলা ০; আল ফাহাদ ১০-১-৩২-৪, ইমন ৫-০-৩০-০, রিজান ৫-১-২২-০, সামিউন ৪-১-১৭-২, স্বাধীন ৪.৪-১-৫-২, আজিজুল ৬-০-২০-১)।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ২৮.৪ ওভারে ১২৯/৯ (জাওয়াদ ২০, রিফাত ৫, আজিজুল ৫, রিজান ২, আব্দুল্লাহ ১৪, ফরিদ ৮, সামিউন ৪৫*, আল ফাহাদ ১১, দেবাশিস ৬, ইমন ৫, স্বাধীন ০*; ব্যাসন ১০-১-৩৩-৪, মাজোলা ১০-৩-৩৫-৩, বয়েস ৫.৪-০-৩৫-১, রোলেস ১-০-১১-০, কিতশিনি ১-০-৪-০, জেমস ১-০-৯-০)।
ফল: বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ১ উইকেটে জয়ী
Discussion about this post