ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
বিকেএসপির ব্যাটিং স্বর্গে আগে বল হাতে বৃহস্পতিবার রূপগঞ্জের লক্ষ্যটা নাগালের মধ্যে রাখতে সাহায্যে করেন নাবিল সামাদ ও মুক্তার আলি। পরে মোহাম্মদ নাঈম ও মুমিনুল হকের অসাধারণ ব্যাটিংয়ের সুবাদে খুব সহজেই শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে হারিয়ে দেয় লিজেন্ডসরা। তাতে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়েই অবস্থান করছে নাঈম ইসলামের দল।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) নবম রাউন্ডে বৃহস্পতিবার ৮ উইকেটে জিতেছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। এরআগে টস জিতে আগে বল হাতে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ৪৩.২ ওভারে ১৪১ রানে গুটিয়ে দেয় নারায়ণগঞ্জের দলটি। রান তাড়ায় ২৮.৪ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় নাঈম ইসলামরা। এ নিয়ে এবারের লিগে টানা ষষ্ঠ জয় পেল সাবেক ডিপিএল চ্যাম্পিয়নরা।
বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠ সব সময় ব্যাটসম্যানদের পক্ষে কথা বলে। যে কারণে এখানে প্রায় দেখা যায় হাইস্কোরিং ম্যাচ। তারপরও বৃহস্পতিবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) নবম রাউন্ডের ম্যাচে টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের অধিনায়ক নাঈম ইসলাম। তবে বোলাররা তাকে নিরাশ করেননি। বিশেষ করে স্পিনার নাবিল সামাদ ও পেসার মুক্তার আলি বড় পরীক্ষায় ফেলেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ব্যাটসম্যানদের। তাইতো লক্ষ্যটা একেবারেই হাতের নাগালের মধ্যেই পায় সাবেক ডিপিএল চ্যাম্পিয়নরা।
বৃহস্পতিবার ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারেই রূপগঞ্জের উইকেট আনন্দে মাতান নাবিল সামাদ। এ স্পিনার সে সময় শেখ জামাল ওপেনার ইমতিয়াজ হোসাইনকে এলবিডব্লিয়ের ফাঁদে ফিরিয়ে দেন। ইনিংসের ১৪তম ওভারে আবারও প্রতিপক্ষ শিবিরে আঘাত করেন সেই নাবিল। এবার এ ডানহাতি ফেরান অমিত মুজুমদারকে। সেই রেশ থাকতে থাকতেই মোহাম্মদ শহীদ দারুণ এক ডেলিভারিতে নাসির হোসেনকে দেখান সাজঘরের পথে। তাতে রূপগঞ্জের ক্রিকেটাররা মেতে ওঠে আনন্দে। তখনেই তারা বুঝতে পারেন শেখ জামালের রান হবে না খুব বেশি।
৫৭ রানে ৩ উইকেট হারালেও শেখ জামালের ভরসা হয়ে ছিলেন নুরুল হাসান ও জিয়াউর রহমান। কিন্তু এ দুই তারকা নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। নাবিল আর মুক্তার আলি তাদের দ্রুতই ফিরিয়ে দেন। তবে এক প্রান্ত আগলে ছিলেন তানবীর হায়দার। এ ডানহাতি ৬৭ বলে ২ চারে ৩৫ রান করে ধানমন্ডির দলটির রানকে পৌঁছে দেন ১৩৯-এ। ঠিক সে সময় রান আউটে কাটা পড়েন তিনি। এরপর আর ২ রান যোগ হতেই গুটিয়ে যায় শেখ জামাল।
রূপগঞ্জের হয়ে ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৩০ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন নাবিল সামাদ। এদিকে বোলিং কোটা পূরণ করে মুক্তার আলি ৩৩ রানে পকেটে পুরেছেন ৩ উইকেট। এছাড়া শুভাশিষ রয়, মোহাম্মদ শহীদ ও ভারতীয় রিক্রুট ঋষি ধাওয়ান নিয়েছেন ১টি করে উইকেট।
রান তাড়ায় রূপগঞ্জের দুই ওপেনার মেহেদী মারুফ ও মোহাম্মদ নাঈম দেখে শুনেই শুরু করেন। ৭.১ ওভারে স্কোর বোর্ডে তারা যোগ করেন ৩২ রান। এরপরই মেহেদী ১২ রান করে এনামুল হক জুনিয়ারের ঘূর্ণি বলে ফারদিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। তারপরও কোন বিপদে পড়েনি নারায়ণগঞ্জের দলটি। দ্বিতীয় উইকেটে মুমিনুল হককে সঙ্গী নিয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকেনে মোহাম্মদ নাঈম। সে পথ ধরে ১১৫ বলে ৯৬ রানের জুটি গড়ে রূপগঞ্জকে জয়ের বন্ধরে প্রায় পৌঁছে দেন। এরমধ্যে ৫৯ বলে ৭ চারে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন নাঈম। এরপর এ ডানহাতি থামেন ৬৯ বলে ৮ চারে ৬৩ রানে।
মোহাম্মদ নাঈম ফেরার কিছুক্ষণের মধ্যেই ৬৪ বলে ৭ চারে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল হক। শেষ পর্যন্ত এ ডানহাতি ৭১ বলে ৯ চারে ৬০ রানে অপরাজিত থেকে রূপগঞ্জের সহজ জয় এনে দেন। সে সময় অন্য প্রান্তে ৯ বলে ২ চারে ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন নাঈম ইসলাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শেখ জামাল: ৪৩.২ ওভারে ১৪১ (ইমতিয়াজ ১১, ফারদিন ২৮, অনুষ্টুপ ১০, নাসির ২, নুরুল ২৫, জিয়াউর ০, তানবীর ৩৫, ইলিয়াস সানি ৭, এনামুল ৮*, খালেদ ০, সাকিল ০*; শুভাশিষ ৯-০-২৮-১, শহিদ ৮-০-২১-১, নাবিল ১০-১-৩০-৩, ধাওয়ান ৬.২-০-২৮-১, মুক্তার ১০-০-৩৩-৩)।
রূপগঞ্জ: ২৮.৪ ওভারে ১৪৫/২ (মারুফ ১২, মোহাম্মদ নাঈম ৬৩, মুমিনুল ৬০*, নাঈম ইসলাম ৮*; খালেদ ৬-০-১৯-০, জিয়াউর ৩-০-১৮-০, এনামুল ৯-০-২৮-১, সাকিল ২-০-১৬-০, নাসির ৩-০-২১-০, ইলিয়াস সানি ৩.৪-১-২১-১, তানবীর ২-০১-৭-০)।
ফল: লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা: নাবিল সামাদ
Discussion about this post