গলের সমুদ্র‑হাওয়া প্রথম সেশনে যতটা অশান্ত ছিল, বেলার দিকে তা যেন পুরোই বদলে গেল। আজ সকাল ৪৫ রানে ৩ উইকেট-স্কোরবোর্ডে তখন বাংলাদেশের মাথায় ঝড়। টপ‑অর্ডারের ছিন্নভিন্ন ছাপ মিলিয়ে তৈরি হচ্ছিল পরিচিত আশঙ্কা। কিন্তু বিকেলের শেষে সেই ঝড় থামিয়ে দু’জনে দাঁড় করালেন সবুজ‑সোনালি এক প্রাচীর-নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। করলেন দেখার মতো শতরান!
বিপর্যয় থেকে মহাকাব্য, ইনিংসের পরিস্থিতি: ১৭তম ওভারে ৪৫/৩। পরবর্তী ৭৩ ওভার আর একটিও উইকেট পড়েনি! জুটি‑ফল: ২৪৭* (৪৪৩ বল)- বাংলাদেশের চতুর্থ উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ!
দেড় বছরের অপেক্ষা ভেঙে ২৬০ বলের শ্রুতিমধুর ১৩৬*-১৪টি চার, ১টি ছক্কা। অধিনায়কের ব্যাটে ছিল ক্রিজ দখলের শিল্প আর ঝুঁকিহীন স্কোরিং‑প্ল্যান। টসের সময়ের সেই আত্মবিশ্বাসী বুলি, ‘প্রথম দুই দিনে রান হবে’-আজ তিনি নিজের ব্যাট দিয়েই প্রমাণ করলেন!
নয় মাস রান খরা কাটিয়ে ১৮৬ বলে ১০৫* রান মুশফিকের ব্যাটে। শুরুতে বল দেখেই ব্যাট, পরে স্পিনারদের বিরুদ্ধে সরিয়ে‑সুইপে চাপ। ১২তম সেঞ্চুরি তুলে ভাগ বসালেন মুমিনুলের রেকর্ডে। গল যে একদিন তাকে ডাবল সেঞ্চুরি দিয়েছিল, আজ আবার দিয়ে গেল স্বস্তির মুকুট।
থারিন্দু রাত্নায়েকে ৩২‑৩‑১২৪‑২; বল সোজা হলেও বাউন্স‑বৈচিত্র্যে ফল পাননি। আসিথা ফার্নান্ডোর প্রথম স্পেল জ্বলে উঠলেও পরে নির্বিষ। প্রবাত জয়াসুরিয়ার ২৯‑০‑৮৬‑০—গেলের সেই পরিচিত বাঁ‑হাতি স্পিন‑জাল আজ ছিঁড়ে দিলেন টাইগার জুটি।
মেহেদী মিরাজ নেই, তাই চার বিশেষজ্ঞ বোলার ও সাত ব্যাটারের ‘ক্লাসিক’ ফরম্যাট। ব্যাটিং গভীরতা কম; তাই শুরুর ধাক্কা সামলে ইনিংস লম্বা করার দায়িত্ব ছিল টপ‑ফাইভের। ৪৫/৩‑এর পর শান্ত‑মুশফিক সে চাহিদা মিটিয়েছেন নিখুঁতভাবে। দ্বিতীয় নতুন বল ইতিমধ্যেই ১০ ওভার পুরোনো। উইকেট হাতে থাকা বাংলাদেশ শেষ সেশনের ছন্দ ধরে রাখতে পারলে ৪০০‑এর গণ্ডি পার হওয়াই বাস্তবসম্মত লক্ষ্য!
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ২৯২/৩ (সাদমান ১৪, এনামুল ০, মুমিনুল ২৯, শান্ত ১৩৬, মুশফিক ১০৫; আসিথা ১৪-২-৫১-১, মিলান রত্নায়াকে ১২-৩-১৯-০, থারিন্দু রাত্নায়াকে ৩২-৩-১২৪-২, জয়াসুরিয়া ২৯-০-৮৬-০, ডি সিলভা ৩-০-৭-০)।
# টেস্টের প্রথম দিন শেষে
Discussion about this post