জবাবটা মন্দ নয়; ভালই দিল বাংলাদেশ।
আগেরদিন ব্যক্তিগত মাইলফলক ছোঁয়ার আনন্দে উল্লাস করেছিলেন কুমার সাঙ্গাকারা। ম্যাচের তৃতীয়দিন বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ হাসল দলীয় রেকর্ডের উচ্ছাসে।
শামসুর রহমান শুভ ও ইমরুল কায়েস তাদের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির দিনে দলকে এনে দিলেন আরও বড় অর্জন। এই জুটির ২৩২ রান টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সবচেয়ে বড় রান। মুলত এই রেকর্ডগড়া জুটির কল্যানেই চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ এখন মর্যাদার লড়াইয়ে টিকে আছে। ফলোঅন যে এড়ানো সম্ভব-সেটা বুঝিয়ে দেয় এই দুজনের সেঞ্চুরি। পরে মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বপূণ ব্যাটিংয়ে ফলোঅনের শঙ্কা কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশ। ম্যাচের তৃতীয়দিন শেষে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের স্কোর দাড়ায় ৮ উইকেটে ৪০৯ রান। শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে তুলেছিল ৫৮৭ রানের পাহাড়।
শূণ্য রানে ওপেনার তামিম ইকবালকে হারানোর পর ম্যাচের দ্বিতীয়দিন শামসুর রহমান ও ইমরুল কায়েস জুটি বাঁধেন। তৃতীয়দিন সকালকে তাদের অনবদ্য ব্যাটিং বাংলাদেশকে এই ম্যাচে ফলোঅন এড়ানোর সাহস দেয়। সকালের প্রথম সেশনের পুরোটা জুড়েই বাংলাদেশের হাসি। এই সেশনে ২৮ ওভারে বাংলাদেশ তুলে ১১৫ রান। ওভারপ্রতি রানের গতি চারের ওপরে! লাঞ্চের পর প্রথমে শামসুর খানিকবাদে ইমরুল ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির উল্লাসে মাতেন। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্টেই সেঞ্চুরি পেলেন শামসুর। আর টেস্টে চার বছর পর ফিরে এসে ইমরুলও প্রথমবারের মতো টেস্ট সেঞ্চুরির আনন্দে ভাসলেন। তবে এই দুজনই তাদের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির জন্য শ্রীলঙ্কার ফিল্ডারদের আলাদাভাবে ‘ধন্যবাদ’ দিতে পারেন! এই দুই সেঞ্চুরিয়ানেরই সহজ কয়েকটি ক্যাচ মাটিতে ফেলে দেন শ্রীলঙ্কার ফিল্ডাররা। সেঞ্চুরির পরপরই অবশ্য ‘যাবতীয় কাজ সম্পন্ন’ এই আয়েশি চিন্তায় দুজনই উইকেট বিলিয়ে আসেন।
চট্রগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের সহজ ব্যাটিং উইকেটে তারা সেঞ্চুরির পরও আরো অনেক দুরে যেতে পারতেন। কিন্তু সেই ধৈর্য্য দুজনের কেউ দেখাতে পারলেন না। ফলোঅন এড়াতে বাকি কাজটুকু সম্পন্ন করতে হয় সাকিব আল হাসান ও নাসির হোসেনকে। উইকেটে সেট হয়ে মুশফিক ফিরে আসেন ২০ রান করে। সাকিব হাফসেঞ্চুরি করার পরের বলেই আউট হন। নাসির আম্পায়ারের ভুল আউটের শিকার হলেন এই ইনিংসে। তবে ততক্ষনে তার ব্যাটে ফলোঅন এড়িয়েছে বাংলাদেশ। দিনের শেষবেলায় অজন্তা মেন্ডিস দুবলে দুই উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সমস্যা বাড়ান। তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটে এখনো এই ম্যাচে আরও অনেক সামনে বাড়ার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ।
বাকি দুই উইকেটে বাংলাদেশের স্কোরকে শ্রীলঙ্কার গড়া ৫৮৭ রানের আরও কাছে নিয়ে যেতে চান মাহমুদউল্লাহ।
এর আগে ১ম ইনিংসে অলআউট হয়ে শ্রীলঙ্কা তুলে ৫৮৭ রান। ১৪৮ রানে ৫ উইকেট নেন সাকিব আল হাসান। এ নিয়ে ১১ বার ইনিংসে ৫ উইকেট নিলেন তিনি।
৩১৯ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন কুমার সাঙ্গাকারা। তাকে ফেরান নাসির হোসেন। এটিই তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রানের টেস্ট ইনিংস। ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কলম্বো টেস্টে তিনি খেলেন ২৮৭ রানের এক দারুণ ইনিংস। এবার পেয়ে গেলেন ট্রিপল সেঞ্চুরি!
আগের দিনই ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ব্রায়ান লারাকে ছুঁয়েছিলেন তিনি। তুলে নিয়েছিলেন ৩৪তম টেস্ট সেঞ্চুরি। এবার ডাবল সেঞ্চুরিতেও লারাকে স্পর্শ করলেন সাঙ্গাকারা। দু’জনেইর ডাবলসেঞ্চুরি ৯টি। সর্বোচ্চ ১২টি নিয়ে শীর্ষে অজি কিংবদন্তি স্যার ডন ব্র্যাডম্যান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৫৮৭/১০ (সাঙ্গাকারা ৩১৯, জয়াবর্ধনে ৭২, মেন্ডিস ৪৭; সাকিব ৫/১৪৮, নাসির ২/১৬)
বাংলাদেশ ১ম ইনি: ৪০৯/৮ (শামসুর ১০৬, ইমরুল ১১৬, সাকিব ৫০, নাসির ৪২, মাহমুদউল্লাহ ৩০ ব্যাটিং, মেন্ডিস ৪/৮৪)
তৃতীয়দিন শেষে
Discussion about this post