বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) আবারও ফিরছে সেই পুরনো উত্তেজনা, যেটা একসময় ক্রিকেটপ্রেমীরা দেখেছিলেন প্রথম দুই মৌসুমে। ১২ বছর পর বিপিএলে আবার চালু হচ্ছে প্লেয়ার্স অকশন, অর্থাৎ খেলোয়াড়দের নিলাম। বহু বছর ধরে চলা ড্রাফট পদ্ধতি বাদ দিয়ে নতুন মৌসুমে দল গঠন হবে বিডিং যুদ্ধের মধ্য দিয়ে- যেখানে প্রতিটি ক্রিকেটারের ভাগ্য নির্ধারিত হবে হাতুড়ির এক আঘাতে।
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আসন্ন ত্রয়োদশ আসরে খেলোয়াড় বাছাই করা হবে সম্পূর্ণ নিলাম পদ্ধতিতে। প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজি একের পর এক ক্রিকেটারের নাম তোলার পর বিড করবে পছন্দের খেলোয়াড়ের জন্য। কোনো খেলোয়াড়কে একাধিক দল নিতে চাইলে শুরু হবে বিডিং প্রতিযোগিতা। দেশি ক্রিকেটারদের জন্য পারিশ্রমিক নির্ধারিত হবে বাংলাদেশি টাকায়, আর বিদেশিদের জন্য মার্কিন ডলারে।
দেশি খেলোয়াড়দের ছয়টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে- ‘এ’ থেকে ‘এফ’ পর্যন্ত। সর্বোচ্চ ক্যাটাগরি ‘এ’-এর ভিত্তিমূল্য ৫০ লাখ টাকা, যেখানে প্রতিটি বিডে দাম বাড়বে ৫ লাখ করে। এরপর ক্রমানুসারে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ৩৫ লাখ, ‘সি’-তে ২২ লাখ, ‘ডি’-তে ১৮ লাখ, ‘ই’-তে ১৪ লাখ এবং ‘এফ’ ক্যাটাগরিতে ১১ লাখ টাকা বেস প্রাইস ধরা হয়েছে। প্রতিটি দলকে অন্তত ১৩ জন দেশি ক্রিকেটার নিতে হবে, সর্বাধিক নেওয়া যাবে ১৬ জন। দেশি ক্রিকেটারদের জন্য বাজেট সীমা ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা, যা নিলামের আগের দুইজন ডিরেক্ট সাইনিং বাদে গণনা করা হবে।
বিদেশি ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রেও থাকছে ক্যাটাগরি ভাগ- ‘এ’ থেকে ‘ই’। ‘এ’ ক্যাটাগরির খেলোয়াড়দের বেস প্রাইস ৩৫ হাজার মার্কিন ডলার এবং প্রতিটি বিডে বাড়বে ৫ হাজার করে। ধাপে ধাপে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ২৫ হাজার, ‘সি’-তে ২০ হাজার, ‘ডি’-তে ১৫ হাজার এবং ‘ই’ ক্যাটাগরিতে ১০ হাজার ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদেশি ক্রিকেটারদের জন্য প্রতিটি দলের ব্যয়ের সর্বোচ্চ সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার, যার মধ্যে দুইজন ডিরেক্ট সাইনিংয়ের খরচও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
দল সাজানোর নিয়মেও এসেছে কিছু পরিবর্তন। প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজি সর্বোচ্চ ২২ জন খেলোয়াড় রাখতে পারবে স্কোয়াডে, যার মধ্যে একাদশে খেলানো যাবে সর্বাধিক চারজন বিদেশি ক্রিকেটার। ন্যূনতম দুইজন বিদেশি খেলানো বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি নিলামের আগে দুইজন দেশি ও দুইজন বিদেশি ক্রিকেটারকে সরাসরি চুক্তিতে নেওয়ার সুযোগ থাকছে। আগের মৌসুমের দুইজন দেশি ও দুইজন বিদেশি ক্রিকেটারও ধরে রাখতে পারবে দলগুলো।
পারিশ্রমিক পরিশোধেও থাকছে নির্দিষ্ট সময়সূচি। খেলোয়াড়দের সঙ্গে চুক্তির সময় দিতে হবে ২৫ শতাংশ, লিগ পর্ব শেষ হওয়ার আগে আরও ৫০ শতাংশ এবং বিপিএল শেষ হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে বাকি ২৫ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে। নিলাম শেষে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিটি দলকে পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াডের তালিকা জমা দিতে হবে। দলভুক্ত কোনো খেলোয়াড়কে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফিটনেস টেস্টে উত্তীর্ণ হতে হবে, তবেই তিনি খেলার যোগ্য বিবেচিত হবেন।
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল জানিয়েছে, আসন্ন মৌসুমে পাঁচটি দল অংশ নেবে এবং নিলাম অনুষ্ঠিত হতে পারে আগামী ২১ নভেম্বর। নিলাম পরিচালনা করবে বিপিএলের বিশেষ কমিটি, যারা প্রতিটি খেলোয়াড়ের নাম ঘোষণা করবে এবং সর্বোচ্চ বিড দেওয়া দলকেই ‘সোল্ড’ ঘোষণা করা হবে।










Discussion about this post