বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে রাজকীয় সূচনা করেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। লাহোর সিটি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ১৭৮ রানের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে টাইগ্রেসরা। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি এবং শারমিন আখতারের অবিচ্ছিন্ন ৯৪ রানের ইনিংসের পর বল হাতে সমান দাপট দেখিয়েছেন দুই স্পিনার ফাহিমা খাতুন ও জান্নাতুল ফেরদৌস। দুজনেই নিয়েছেন পাঁচটি করে উইকেট।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ওয়ানডে অভিষেকে নামা ইসমা তানজিম করেন মাত্র ৮ রান। তবে এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ফারজানা হক ও শারমিন আখতার গড়েন ১০৪ রানের জুটি। ফারজানা করেন ৮২ বলে ৫৩ রান। এরপর শারমিনের সঙ্গে যোগ দেন নিগার সুলতানা। এই জুটিতেই আসে দিনের সবচেয়ে বড় চমক।
১৩৮ বলে ১৫২ রানের জুটি গড়েন নিগার ও শারমিন। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের নারীদের তৃতীয় উইকেটে এটি সর্বোচ্চ রানের জুটি। নিগার সুলতানা ৭৮ বলে ১৫টি চার ও একটি ছক্কায় করেন ১০১ রান। ইনিংসের শেষ বলে আউট হন তিনি। অপরদিকে সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে গিয়ে ১২৬ বলে ৯৪ রানে অপরাজিত থাকেন শারমিন।
নিগার সুলতানার ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি আসে ৮০ বলে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্রুততম নারী ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ১০১ রান।
বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ২৭১ রান, যা নারীদের ওয়ানডে ক্রিকেটে দেশের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। এর আগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টাইগ্রেসদের সর্বোচ্চ রান ছিল ২৫২।
২৭২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে থাইল্যান্ডও শুরুটা ভালোই করেছিল। দলীয় ৩৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় তারা। এরপরই স্পিন ঘূর্ণিতে কুপোকাত পুরো ব্যাটিং লাইনআপ। ফাহিমা খাতুন তুলে নেন প্রথম তিনটি উইকেট, এরপর উইকেট নেওয়ার উৎসবে যোগ দেন জান্নাতুল। থাইল্যান্ডের নারী দল ২৮.৫ ওভারে গুটিয়ে যায় মাত্র ৯৩ রানে।
ফাহিমা ও জান্নাতুল দুজনই নেন ৫টি করে উইকেট। তাঁদের ঘূর্ণির সামনে থাইল্যান্ডের ব্যাটাররা দাঁড়াতেই পারেনি। এটি ছিল বাংলাদেশ নারী দলের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। এর আগে ১৫৪ রানে আয়ারল্যান্ডকে হারানো ছিল তাদের সবচেয়ে বড় জয়।
এই জয়ে দুর্দান্ত সূচনা করেছে টাইগ্রেসরা। আগামী ১৩ এপ্রিল দ্বিতীয় ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড। এরপর ১৫, ১৭ ও ১৯ এপ্রিল যথাক্রমে স্কটল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে নিগার সুলতানার দল।
Discussion about this post