জিম্বাবুয়ে মানেই যেন ছিল বাংলাদেশের প্রিয় প্রতিপক্ষ, যাদের সঙ্গে ম্যাচ মানেই নিশ্চিত জয়! কিন্তু পাল্টে গেল সেই হিসাব নিকাশ, টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর ওয়ানডেতেও সেই সঙ্গী হলো বাংলাদেশের!
লম্বা সময় পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে হারল টাইগাররা। ২০১৩ সালের পর হারল প্রথম ওয়ানডে সিরিজ।
প্রথম ওয়ানডেতে সিকান্দার রাজা ও ইনোসেন্ট কাইয়ার সেঞ্চুরি এবং তাদের ১৯২ রানের জুটিতে উড়ে যায় বাংলাদেশ। এবার রাজা ও রেজিস চাকাভার সেঞ্চুরি ও তাদের ২০১ রানের জুটিতে সর্বনাশ! এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জিতল জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশের ২৯০ রান ৫ উইকেট ও ১৫ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে স্বাগতিকরা।
টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে ১১৭ রানে অপরাজিত রাজা। তার ১২৭ বলের দারুণ ইনিংসটিতে ছিল চারটি ছক্কা ও আটটি চার। আগের ম্যাচে ৪৩ রানে জীবন পেয়ে শেষ করে এসেছিলেন ম্যাচ। এবার ৪২ রানে জীবন পেয়ে উড়লেন তিনি!
২৯০ রান তাড়ায় জিম্বাবুয়ের স্কোর এক সময় ছিল ১৫ ওভারে ৪ উইকেটে ৪৯ রান। tokhon রেজিস চাকাভা ও সিকান্দার রাজা দেখান দাপট, করেন শতক, গড়লেন ২০১ রানের রেকর্ড জুটি।
২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতল তারা!
দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল বাংলাদেশের। প্রিয় ফরম্যাট ওয়ানডেতে সিরিজ হার বাঁচাতে জয় ছাড়া উপায় ছিল না। ঠিক এ অবস্থায় প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির দেখা হলো না। রোববার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে পাঁচ উইকেটে হারাল তামিম ইকবালের দলকে। এই জয়ে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ এক ম্যাচ আগে জিতলো জিম্বাবুয়ে । প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেটে জিতেছিল স্বাগতিকরা।
হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে এদিনও টস ভাগ্য সঙ্গে থাকেনি বাংলাদেশের। এবারও প্রথমে ব্যাট করতে নামল সফরকারীরা। তারা ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে করে ২৯০ রান। জবাব দিতে নেমে ৪৭ ওভার 3 বলে পাঁচ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ে পা রাখে জয়ের বন্দরে!
প্রতিপক্ষকে শুরুতেই চেপে ধরেন হাসান মাহমুদ। প্রথম স্পেলে এই পেসার তুলে নেন দুই উইকেট। সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজও ছিলেন ভয়ঙ্কর। দুইয়ে মিলে ২৭ রানে তুলে নেন জিম্বাবুয়ের ৩ উইকেট। তারপর ভয়ঙ্কর হয়ে উঠা সিকান্দার রাজা শেষ করে দেন!
এর আগে প্রত্যাশা মতো ব্যাটিং হয়নি। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে তিনশ ছাড়ানো স্কোর গড়ার পথ পরিস্কার ছিল। কিন্তু শেষটাতে এসে পথ হারাল দল। শেষ অব্দি সিরিজ বাঁচিয়ে রাখার ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও তামিম ইকবালের ফিফটিতে ২৯০ রান তুলল বাংলাদেশ।
অথচ শুরুটা ছিল বেশ ভালো। মনে হচ্ছিল বড় ইনিংসই গড়বে দল। কিন্তু এরপরই দিক হারিয়ে প্রত্যাশিত স্কোর করা হয়নি। তিনটি করে ছক্কা ও চারে ৮৪ বলে ৮০ রানে অপরাজিত ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। তিনি প্রথম ৫০ বলে করেন ২৭। এরপর রান বাড়িয়েছেন।
অবশ্য শেষটা ভাল হলে স্কোর বাড়তে পারতো। কিন্তু শেষ ওভারে দুটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ভিক্টর নিয়াউচির প্রথম বলে আউট তাইজুল ইসলাম। এরপর শেষ বলে রান আউট শরিফুল ইসলাম।
হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে রোববার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে দল। তামিম এদিন ৫০ রান করে ফেরেন। বাংলাদেশ অধিনায়ক খেলছিলেন দ্বায়িত্ব নিয়েই। শুরুতে রানরেট ছয়ের উপরে ছিল। মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্তর ৫০ রানের জুটি গড়ে এগিয়ে নিতে থাকেন দলকে। মুশফিক ২৫ ও শান্ত ৩৮ রানে ফেরেন। এরপর মাহমুদউল্লাহ-আফিফ গড়েন ৮১ রানের জুটি। আফিফ ৪১ রানে আউট হলেও মাহমুদউল্লাহ ৮০ রানে অপরাজিত। জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন সিকান্দার রাজা।
এদিনও ডটবল আর বাংলাদেশের ইনিংস এগিয়েছে পাশাপাশি। ৩০০ বলের ইনিংসে ডট বল ১৫১টি। ভাবা যায়, এতো অস্বস্তির কারণ এই ডটবল!
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৯০/৯ (তামিম ৫০, এনামুল ২০, শান্ত ৩৮, মুশফিক ২৫, মাহমুদউল্লাহ ৮০*, আফিফ ৪১, মিরাজ ১৫, তাসকিন ১, তাইজুল ৬, শরিফুল ১; ইভান্স ৭.৪-০-৬৪-০, নিয়াউচি ৮-০-৩৯-১, চিভাঙ্গা ৮.২-০-৪৯-১, রাজা ১০-০-৫৬-৩, মাধেভের ৯-০-৪০-২, জঙ্গুয়ে ৭-০-৪০-০)
জিম্বাবুয়ে: ৪৭.৩ ওভারে ২৯১/৫ (মারুমানি ২৫, কাইটানো ০, কাইয়া ৭, মাধেভেরে ২, রাজা ১১৭*, চাকাভা ১০২, মুনিয়োঙ্গা ৩০*; মাহমুদ ০-০-০-০, মিরাজ ০-০-০-০, শরিফুল ০-০-০-০, তাসকিন ০-০-০-০, তাইজুল ১০-০-৪৮-১)
ফল: জিম্বাবুয়ে পাঁচ উইকেটে জয়ী
Discussion about this post