অবশেষে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোচের পদ থেকে বরখাস্ত হলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। অবশেষে ফারুক আহমেদের ইচ্ছে পূরণ হচ্ছে। বাংলাদেশের কোচ হিসেবে দ্বিতীয় দফার অধ্যায় শেষ এই শ্রীলঙ্কানের। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি মিরপুরের শেরেবাংলায় এক সংবাদ সম্মেলনে হাথুরুসিংহেকে শোকজ এবং সাসপেন্ড করার ঘোষণা দিলেন।
ফারুক আহমেদ বলেন, ‘বরখাস্ত করার আগে আমরা তাকে নিয়ম মেনে শোকজ নোটিশ করেছি। ৪৮ ঘণ্টার জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে তাকে। এরপর আমরা বরখাস্ত করব। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত কোচ ফিল সিমন্স।’
চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে বরখাস্তের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমরা মানুষ। হিট অব দ্য মোমেন্টে অনেক কিছু হতেই পারে। তবে একজন জাতীয় দলের ক্রিকেটারকে আপনি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করতে পারেন না। সে কারণে যে শাস্তি পেতে হয়, সেটাই হচ্ছে (ছাঁটাই)। এটা আরও আগে হওয়া উচিত ছিল। এখন হয়েছে, আমি খুশি।’
এর আগে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ব্যর্থতার পর নাজমুল হোসেন পাপনের বোর্ড একটি তদন্ত কমিটি করে। যেখানে হাথুরুর চড়-কাণ্ড আসে। ফারুক নিজেই যাচাইবাছাই করে সত্যতা খুঁজে পেয়েছেন, ‘একজন সাবেক খেলোয়াড় হিসেবে আমার খারাপ লেগেছে। জাতীয় দলের ক্রিকেটার দেশের গৌরব, ১৮ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। ওই নামটা আর না নিই, ওটা ছিল কোচের অসদাচরণ। ভিকটিম, প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলেছি। প্রত্যক্ষদর্শীরও রিপোর্ট ছিল। তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে আমি অনেক কাজ করেছি।’
হাথুরুকে বরখাস্ত করতে বিসিবির সুবিধা হয়েছে তার অতিরিক্ত ছুটি ভোগের কারণেও। বিসিবিকে না জানিয়ে বছরে তার পাওনা ৪০ দিনের বেশি সময় কাটান হাথুরু। ফারুক এ নিয়ে বলেন, ‘একজনের অসদাচরণের বিরুদ্ধে নোটিশ দেওয়ার কিছু নেই। সে যে সময় ছুটি কাটিয়েছে, সেটা ৩ মাসের বেশি। ওটাও অসদাচরণের অংশ। বিচ্ছিন্নভাবে তিনি ই-মেইলে জানিয়েছেন, তবে সেটা তিন মাসের বেশি হওয়ার সুযোগ নেই। আপনার জবাবদিহি থাকতে হবে। এখানে নিয়ম ভেঙেছেন, আমরা জানিয়েছি যে খেলোয়াড়ের সঙ্গে তার অসদাচরণ এবং একজন কর্মী হিসেবে নিজের অসদাচরণ।’
ফারুক কোচ হাথুরু প্রসঙ্গে আগে থেকেই নেতিবাচক ছিলেন। এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করি না, আমি ওভাবে বলিনি। একজন সাবেক খেলোয়াড় হিসেবে বলেছি ওই কোচের বেশি কিছু দেওয়ার নেই। একজন কোচ হিসেবে তার সামর্থ্যে খুব বেশি আস্থা ছিল না।’
বাংলাদেশ দলে প্রথম মেয়াদে হাথুরু কাজ করেন ২০১৪ সালের মে থেকে ২০১৭ সালের নভেম্বর অব্দি। দ্বিতীয় মেয়াদে হাথুরুর অধীনে ১০টি টেস্ট, ৩৫টি ওয়ানডে ও ৩৫টি টি-টোয়েন্টি খেলে বাংলাদেশ। টেস্টে ৫টি জয় ও ৫টি হার। ওয়ানডেতে ৩৫ ম্যাচে ১৩টি জয়। হার ১৯টি, ৩ ম্যাচে ফল হয়নি। টি-টোয়েন্টিতে ৩৫ ম্যাচের ১৯টিতে জয়, হার ১৫টি, একটি অমিমাংসিত।
Discussion about this post