ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
এক, দুই বছর নয় সাকিব আল নিষিদ্ধ হতে পারতেন ৫-১০ বছর। কিন্তু এমনটি হয়নি আইসিসি দুর্নীতি দমন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর তারকা অলরাউন্ডার বিস্তারিত সবকিছু জানিয়ে দেওয়ার কারণেই।
জুয়াডিদের প্রস্তাব গ্রহন করেননি। তবে গোপন করেছিলেন সাকিব। যে কারণে এ তারকা অলরাউন্ডার গত বছরের অক্টোবরের শেষ দিকে হন এক বছর নিষিদ্ধ। নিজের ভুল থেকে বড় শিক্ষা পেয়েছেন বলেও জানালেন সাকিব। ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজে ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সাকিব বললেন, জুয়াড়ির সঙ্গে কথোপকথনকে তিনি যথেষ্ট গুরুত্ব দেননি। সেই ভুল বুঝতে পেরেছেন পরে, ‘আমার মনে হয়, আমি এটা একটু বেশিই হালকাভাবে (ক্যাজুয়ালি) নিয়েছিলাম। অবশ্যই আমি এই প্ল্যাটফর্মে বিস্তারিত সবকিছু আলোচনা করতে চাই না। আমি যখন দুর্নীতি দমন কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করলাম এবং বললাম, তারা সবকিছু জানে, সব প্রমাণ দিলাম, ভেতরে-বাইরের সবকিছু তারা খুঁটিনাটি সব জানে, সত্যি কথা বলতে, এই কারণেই মাত্র ১ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছি। নইলে ৫-১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হতে পারতাম।’
সাকিব আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, বোকার মতো ভুল করেছিলাম। কারণ যে অভিজ্ঞতা আমার আছে, যে পরিমাণ আন্তর্জাতিক ম্যাচ আমি খেলেছি এবং দুর্নীতি দমন ধারা নিয়ে যতগুলি ক্লাস করেছি, আমার ওই ভুল করা উচিত হয়নি। সেটা নিয়ে আমি অনুতপ্ত।’
অসংখ্য মানুষের সংস্পর্শে আসতে হয় সাকিবের মতো তারকা ক্রিকেটারদের। তাই সাকিবের দাবি, সে কারণেই জুয়াড়ির কাছ থেকে প্রস্তব পাওয়ার কথা তিনি ভুলে গিয়েছিল, ‘দেখুন, আমরা হাজারও ফোনকল পাই, ম্যাসেজ পাই, কয়টা আর মনে থাকে! একটা উদাহরণ আমি দিতে পারি, ওই লোকটি যখন শেষবার ম্যাসেজ পাঠিয়েছিল, আমি জবাব দিয়েছিলাম, ‘সরি, কার সঙ্গে কথা বলছি?’ তার মানে, আমার মনেও ছিল না, কার সঙ্গে কথা বলছি। তার সঙ্গে আগে কথা বলেছি ২-৩ বছর আগে। ওই সময় আমি জানতামও না লোকটা কে, তার নম্বরও আমার কাছে ছিল না। যাহোক, তারা যখন (আইসিসি দুর্নীতি দমন বিভাগ) তদন্ত করেছে, এসব তারা জানত এবং পরিস্থিতি বুঝেছে। তবে সত্যি বলতে, কারও উচিত নয় এসব হালকাভাবে নেওয়া। ওই ধরনের ম্যাসেজ বা কল কারও হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয় বা ওভাবেই ফেলে রাখা উচিত নয়। দুর্নীতি দমন কর্তাদের জানানো উচিত নিরাপদে থাকতে হলে। এই শিক্ষা আমি পেয়েছি, বড় শিক্ষা এটি।’
সব সময় আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে ছিল সাকিবের। যা কাল হয়েছে তার। এ ব্যাপারে এ তারকা ক্রিকেটার বলেন, ‘যেহেতু সবসময় বেশির ভাগ ব্যাপারই ঠিক করেছি, কখনও কখনও সেই বোধ পেয়ে বসতে পারে। মনে হতে পারে, ‘কী আর হবে… কিছুই হবে না। আমি তো ভুল কিছু করছি না..।’ কিন্তু কেতাবি হিসেবে তো ভুল হচ্ছে। হয়তো নৈতিকতার দিক থেকে ভুল হচ্ছে না, কিন্তু আইন বা নিয়মের দিক থেকে ভুল হচ্ছে। অনেক সময় এটি মনে থাকে না। এটা আমার ক্ষেত্রে হয়েছিল। আমি কখনোই ভাবতে পারিনি… মাথায়ই আসেনি যে ভুল করতে পারি। পাত্তা দিতে চাইনি। সেই ভুলই আমি করেছি।’
সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছরের অক্টোবরের শেষ দিকে মুক্ত হবেন সাকিব। আবার তাকে দেখা যাবে মাঠের ক্রিকেটে। ভক্তদেরও চাওয়া সেটাই। এখন দেখার বিষয় করোনা পরবর্তী যুগে কবে মাঠের লড়াইয়ে ফেরে বাংলাদেশের ক্রিকেট।
Discussion about this post