ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
অনুশীলন শেষে ক্রাইস্টচার্চ হ্যাগলি ওভালের পাশের মসজিদেই জুমার নামাজ পড়তে বাসে করে যাচ্ছিলেন তামিম ইকবাল-মুশফিকুর রহিমরা। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর মিনিট পাঁচেক আগেই তারা জানতে পারেন ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছেন অনেকেই। ঠিক তখনই চোখের সামনে রাস্তায় ধ্বংসযজ্ঞ, রক্তের বন্যা দেখতে পান তারা। ঐ ঘটনার মধ্যে আরেকটু হলেই তো নিজেরাও পড়তে পারতেন তারা। স্বভাবতই আতঙ্ক কাজ করছে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে টাইগাররা। শনিবার দেশে ফেরার আগে তামিম জানিয়েছেন, এই ঘটনার রেশ কাটাতে সময় লাগবে অনেক। যা দেখে এলেন ‘শান্তিপূর্ণ’ নিউজিল্যান্ডে সে ভয়, আতঙ্ক ছাপিয়ে স্বাভাবিক হওয়া খুব একটা সহজ হবে না। তবে তামিমদের অগ্রজ, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমানে ক্রিকেট বোর্ডের অন্যতম পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজনের বিশ্বাস, অনুজরা দ্রুতই মানসিক ধাক্কাটা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ভাল-মন্দ খুব কাছ থেকে দেখেছেন সুজন। যুক্ত হয়েছেন খেলোয়াড় গড়ার কাজে, ভিন্ন ভিন্ন সময়ে কাজ করেছেন উঠতি-তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে, বিপিএলে সামনে থেকে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন বিশ্বসেরা তারকাদেরও- এ অভিজ্ঞতা থেকেই সুজন মনে করছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ঘুরে দাঁড়াবে দ্রুতই, ‘আমার মনে হয় ছেলেরা যথেষ্ট পরিণত। সবাই আসলে বড় হয়ে গিয়েছে। আর এটি তো এমন না যে বিশ্বে প্রথম ঘটলো। এমন কিন্তু অহরহ ঘটছে। বাংলাদেশে ঘটেছে। আমরা হলি আর্টিজানের ঘটনা জানি কতটা নৃশংস হয়েছিলো। আমার মনে হয় অবশ্যই একটা শক তো পেয়েছে ছেলেরা। তবে আমার কাছে মনে হয় এখান থেকে তারা দ্রুত ফিরে আসবে। আমার মতে এত চিন্তা করার কিছু নেই। তারা সবাই পরিণত হয়েছে। বুঝেছে যে এমন ঘটনা হতেই পারে, হয়েছে। সুতরাং দুই একদিনের মধ্যে ওরা নিজেরাই ঠিক হয়ে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
বর্তমানে আবাহনী লিমিটেডের কোচের দায়িত্বে রয়েছেন সুজন। শুক্রবার ঘটনার পরপরই নিউজিল্যান্ডে থাকা ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা হয়েছে তার, ‘আমার সাথে সাথেই কথা হয় সবার সাথে। রিয়াদ, তামিম, তাইজুল, পাইলটের সাথে কথা হয় তখনই যখন ওরা বেশ ভীত, বাস থেকে নামার পরেই আমাকে ওরা ফোন করেছিলো। তখন কাউকে পাচ্ছিলো না, সকাল ছিলো অনেক। আমার সঙ্গে তখনই কথা হয়েছে।’
সুজন নিজেই বুঝেছেন কতটা ভেঙে পড়েছেন তামিমরা। তবে তিনি আশা করেন দেশে ফেরার পর সবার সঙ্গে কথা বলার পরই অনেকটাই স্বাভাবিক হবেন তারা, ‘আমি তাঁদের কণ্ঠ শুনেই বুঝেছি কতটা ভীত তারা। স্বাভাবিকভাবেই আপনি যদি চোখের সামনে এমন কিছু দেখেন এবং আপনি জানেন যে যদি এক মিনিট পরে ঘটনাটি ঘটতো তাহলে কিছু হতে পারতো। স্বাভাবিকভাবেই ভীতবিহ্বল থাকার কথা। খেলতে গিয়ে এমন একটি ঘটনা দেখা- অবশ্যই ভালো কিছু না।’
Discussion about this post