এখনো যেন বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের দোলায় দুলছেন ক্রিকেট ভক্তরা। এটাও কী সম্ভব? ১৩৬ রানে ৯ উইকেটের পতন, তারপরও কীনা দল ১৮৭ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলল? বাংলাদেশকে জিতিয়ে মিরাজ ৩৯ বলে ৩৮ রানে ও মুস্তাফিজ ১১ বলে ১০ রানে অপরাজিত। তাদের ব্যাটেই রোববার মিরপুরের শেরেবাংলায় লেখা হলো নতুন এক রূপকথা।
অনেকেই যখন ধরে নিয়েছিলেন ম্যাচটা হারতে যাচ্ছে বাংলাদেশ, তখন ইস্পাত কঠিন মনোবল ছিল মেহেদী হাসান মিরাজের। ভারতীয় বোলারদের সামাল দিতে দিতে নিজেকে নিজে বারবার বলে গেছেন ‘আমি পারব, পারব।’ তার পথ ধরেই তো লেখা হলো ১ উইকেটের রোমাঞ্চকর এক জয়ের কাব্য।
রোববার রাতে এমন জয়ের পর মিরাজ বলছিলেন, ‘হ্যাঁ সত্যি করে বললে, আমার বিশ্বাস ছিল। হয়ত অনেকেই শুনলে বলবে যে পাগল। কিন্তু আমি বিশ্বাস করছিলাম। আমার কাছে একবারও মনে হয়নি আমরা ম্যাচটা হারব। আমি শুধু একটা কথা বার বার বলছিলাম, ইনশাল্লাহ আমি পারব।’ ঠিক তাই তিনি পেরেছেন। দেখিয়ে দিয়েছেন ক্রিকেটে অসম্ভব বলে আসলে কিছু নেই!
দিবা-রাত্রির এই ম্যাচে ভারত টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে করে ১৮৬ রান। সাকিব আল হাসান নেন ৫ উইকেট। জবাবে নেমে এক পর্যায়ে ভালই এগিয়ে যাচ্ছিল দল। কিন্তু শেষদিকে ৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে হারের পথে চলে যায় টাইগাররা। তারপর মুস্তাফিজুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে চমক দেখান মিরাজ। গড়েন অবিশ্বাস্য রেকর্ড জুটি। দু’জন মিলিয়ে শেষ উইকেটে ৫১ রান তুলে হারিয়ে দেন ভারতকে।
দলকে জিতিয়ে মিরাজ ৩৯ বলে ৩৮ রান করে অপরাজিত। সঙ্গে ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা। মুস্তাফিজ অপরাজিত ছিলেন ১১ বলে ১০ রান করে। মিরাজ বলছিলেন, ‘যখন ১৪ রান লাগত, বা ১০ তখন একটু বেশি রোমাঞ্চিত ছিলাম। এত নিকটে এসে যদি ম্যাচটা হেরে যাই, এরকম অনেক ঘটনা ঘটেছে।’
সঙ্গে মুস্তাফিজের প্রশংসাও করলেন মিরাজ। বলেন, ‘মুস্তাফিজ আমাকে সাহস দিয়েছে এটা আমার খুব ভালো লেগেছে। ও আমাকে একটা কথা বলছিল বারবার, এখন ৬ মারার দরকার নেই। গ্যাপে পড়লে রান হবে। কিন্তু আমি ওভাবেই চিন্তা করেছি। আমি পরিষ্কার ছিলাম, যে আমি কি করব।’
এবার ওয়ানডে সিরিজ জয়ের মিশন। ৭ ডিসেম্বর মিরপুরের মাঠেই ভারতের সঙ্গে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচটি খেলতে নামবে বাংলাদেশ দল।
Discussion about this post