ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
দু,দিন আগে পাওয়া চোটে হাতে পড়েছিল ১৪ সেলাই। তারপরও মাশরাফি বিন মর্তুজা সোমবার নেমেছিলেন মাঠে। কিন্তু অধিনায়কের এমন দুঃসহসিকতায়ও ঢাকা প্লাটুনের খেলোয়াড়রা উজ্জীবিত হতে পারেনি। যে কারণে ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত নৈপুণ্যে দেখিয়ে রাজধানীর দলটিকে উড়িয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলতি আসরের ফাইনালে পথে এগিয়ে গেল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
বঙ্গবন্ধু বিপিএলের এলিমিনেটর ম্যাচে সোমবার ঢাকা প্লাটুনকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রাম লড়বে ফাইনালে ওঠার শেষ ধাপে।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সোমবার ঢাকা ২০ ওভারে করে ১৪৪ রান। রান তাড়ায় চট্টগ্রাম জিতে যায় ১৪ বল বাকি রেখে। ২৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে চট্টগ্রামের জয়ের ভিত গড়ে দেওয়া পারফরম্যান্সে ম্যাচের সেরা হয়েছেন রায়াদ এমরিট।
ঢাকা এদিন ৬০ রানে হারিয়েছিল তারা ৭ উইকেট। শাদাব খানের দুর্দান্ত ইনিংস তাদেরকে নিয়ে যায় দেড়শর কাছে। কিন্তু সেই রানে লড়াইও জমাতে পারেনি ঢাকা।
সোমবার তামিম ইকবাল শুরুটা করতে চেয়েছিলেন ধীরে। কিন্তু আউট হয়েছেন রুবেলকে বেরিয়ে এসে তেড়েফুঁড়ে মারতে গিয়ে। ১০ বলে বাঁহাতি ওপেনার করেন ৩ রান। এরপরই বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে তুলে মারতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে এলেন এনামুল হক। দলে ফেরা লুইস রিস সুযোগ হেলায় হারালেন মাহমুদউল্লাহকে উইকেট উপহার দিয়ে। এক পাশে মুমিনুল খেলছিলেন দারুণ। কিন্তু অন্যদের ব্যর্থতায় পাওয়ার প্লে শেষে ঢাকার রান ৩ উইকেটে কেবল ২৮! তাতে মুমিনুলেরই ছিল ১৭ বলে ২০। এদিন একবার জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি মেহেদি হাসান। এমরিটের পরের বলেই নুরুল হাসান সোহানের দারুণ ক্যাচে ফিরেন জাকের আলি। উইকেটের পেছনে আরেকটি ভালো ক্যাচ নেন সোহান, মুমিনুল থামেন ৩১ বলে ৩১ করে।
এরপর নাসুমকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে যখন ফেরেন আসিফ আহমেদ, ত্রয়োদশ ওভারে ঢাকার রান তখন ৭ উইকেটে ৬০।
ঢাকার ঘুরে দাঁড়ানোর পর্ব শুরু এরপরই। থিসারা পেরেরাকে নিয়ে ৩০ বলে ৪৪ রানের জুটি গড়েন শাদাব। ১৩ বলে ২৫ রানের ক্যামিও খেলে আউট হন থিসারা। শাদাব শেষ দিকে চালান তাণ্ডব। নবম উইকেট জুটিতে মাশরাফি ২ বল খেলে রান করেননি কোনো, শাদাব করেন ১৩ বলে ৩৮!
রান তাড়ায় ওপেনিংয়ে নেমে জিয়াউর রহমান-ক্রিস গেইল দারুণ শুরু এনে দেন চট্টগ্রামকে। মূলত জিয়ার সৌজন্যেই ৫ ওভারে ৪১ তুলে ফেলে দল। ১২ বলে ২৫ করে আউট হন জিয়া। তিনে নেমে আক্রমণের সেই ধারা ধরে রাখেন ইমরুল কায়েস। চট্টগ্রাম এগোতে থাকে অনায়াসে। শাদাবই পরে ভাঙেন জুটি। নিজের প্রথম ওভারে ফেরান ২২ বলে ৩২ রান করা ইমরুলকে।
শাদাব পরে আউট করেন গেইলকেও। ৪৯ বলে ৩৮ করে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান আউট হন মাশরাফির এক হাতের ক্যাচে। তবে চট্টগ্রামের জিততে সমস্যা হয়নি। দুর্দান্ত ঝড়ো ইনিংসে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। ৪ ছক্কায় চট্টগ্রাম অধিনায়ক অপরাজিত থাকেন ১৪ বলে ৩৪ রান করে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা প্লাটুন: ২০ ওভারে ১৪৪/৮ (তামিম ৩, মুমিনুল ৩১, এনামুল ০, রিস ০, মেহেদি ৭, জাকের ০, শাদাব ৬৪*, আসিফ ৫, থিসারা ২৫, মাশরাফি ০*; রুবেল ৪-০-৩৩-২, মেহেদি রানা ৪-০-২৫-০, নাসুম ২-০-১১-২, মাহমুদউল্লাহ ২-০-৫-১, এমরিট ৪-০-২৩-৩, জিয়াউর ৪-০-৩৯-০)।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ১৭.৪ ওভারে ১৪৭/৩ (গেইল ৩৮, জিয়া ২৫, ইমরুল ৩২, মাহমুদউল্লাহ ৩৪*, ওয়ালটন ১২*; মাশরাফি ৪-০-৩৩-০, মেহেদি ৪-০-২০-১, হাসান ৪-০-৩৫-০, রিস ২-০-১০-০, থিসারা ১-০-১৪-০, শাদাব ২.৪-০-৩২-২)।
ফল: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: রায়াদ এমরিট
Discussion about this post