ভারতীয় ক্রিকেট আবারও চাঞ্চল্যকর এক দুর্নীতির ঘটনায় আলোচনায়। হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (এইচসিএ) সভাপতি এ জগন মোহন রাও, কোষাধ্যক্ষ সি জে শ্রীনিবাস এবং সিইও সুনীল কান্তেকে জালিয়াতি ও তহবিল আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে তেলেঙ্গানার অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
তদন্তে উঠে এসেছে, এইচসিএ-র শীর্ষ কর্মকর্তারা ২০২৩ সালের নির্বাচনে ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে নির্বাচিত হন এবং পরে অ্যাসোসিয়েশনের তহবিল থেকে প্রায় ২ কোটি ৩২ লাখ রুপি আত্মসাৎ করেন। এই অভিযোগে গত ৯ জুন একটি এফআইআর করেন তেলেঙ্গানা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডি গুরুভা রেড্ডি।
সিআইডি জানিয়েছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জনের জন্য জগন মোহন রাও জালিয়াতির মাধ্যমে একটি অনুমোদিত ক্লাবের সদস্যপদ নেন। ক্লাব সদস্যপদ না থাকলে নির্বাচন করা সম্ভব নয়-এই সুযোগটিই কাজে লাগিয়ে তিনি প্রতারণা করেন।
এইচসিএ’র বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ আসে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি সানরাইজার্স হায়দরাবাদ থেকে। অভিযোগ, চলতি মৌসুমে রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে ম্যাচে সানরাইজার্সকে ফ্রি টিকিট না দিলে কর্পোরেট বক্স তালাবদ্ধ করে দেওয়া হয়। ফ্র্যাঞ্চাইজির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ম্যাচ শুরুর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ‘২০টি অতিরিক্ত ফ্রি টিকিট’ না দিলে বক্স খুলবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়-যা তারা ‘অবৈধ ও অগ্রহণযোগ্য’ বলে দাবি করে।
চুক্তি অনুযায়ী এইচসিএ ৩,৯০০টি ফ্রি টিকিট পাওয়ার কথা থাকলেও, কর্মকর্তারা অতিরিক্ত ১০ শতাংশ দাবি করেন, যা সানরাইজার্স হায়দরাবাদ প্রত্যাখ্যান করে।
ঘটনার জেরে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ হুমকি দেয়, তারা হায়দরাবাদে আর হোম ম্যাচ খেলবে না। পরবর্তীতে রাজ্য সরকার হস্তক্ষেপ করে। তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডির নির্দেশে তদন্তে নামে ভিজিল্যান্স ডিপার্টমেন্ট এবং তদন্তে এইচসিএ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত হয়।
এই ঘটনার ফলে ভারতীয় ক্রিকেটে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির প্রশ্ন আরও একবার সামনে চলে এসেছে। মাঠে হায়দরাবাদ দলটির পারফরম্যান্সও খুব আশাব্যঞ্জক ছিল না। প্যাট কামিন্সের নেতৃত্বে তারা ১৩ ম্যাচে ৬ জয় ও ৭ হারে পয়েন্ট তালিকায় ষষ্ঠ হয়ে আইপিএল প্লে-অফের বাইরেই থেকে যায়।
Discussion about this post