স্বপ্নের মতো শুরু। শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশনে এরচেয়ে ভাল শুরু বুঝি আর হতেই পারতো না! ব্যাট হাতে দাপট দেখালেন ব্যাটসম্যানরা। শতরানে রঙিন করলেন সাব্বির রহমান। ঝড় উঠল চিরাগ জানির ব্যাটে। বোলাররাও অনুসরণ করলেন তাদের। নাবিল সামাদ নেন পাঁচ উইকেট! দুইয়ে মিলে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের সুপার লিগের প্রথম ম্যাচেই উড়ন্ত এক জয় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের।
বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) চার নম্বর মাঠে অনুষ্ঠিত ম্যাচে রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাবকে ৫৫ রানে হারিয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। ম্যাচে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে দল তুলে ৩২৫ রান। জবাব দিতে নেমে প্রিমিয়ার লিগের নবাগতদের ৫০ ওভারে ২৭০ রানে আটকে রাখে লিজেন্ডসরা।
এই জয়ের দিনে আরেকটা সুখবরও পেয়েছেন মাশরাফিরা। শিরোপা জয়ের পথে যারা বড় বাধা হতে পারে সেই আবাহনী লিমিটেড সোমবারের আরেক ম্যাচে বড় ব্যবধানে হেরে গেছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের কাছে। মিরপুরের শেরেবাংলায় প্রাইম ব্যাংকের দেওয়া ২৭৪ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে আবাহনী অলআউট ১৩১ রানে। ১৪২ রানের বিশাল হারে সুপার লিগ মিশন শুরু আবাহনীর।
সকালে বিকেএসপিতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল না হলেও ঠিকই রান পাহাড়ের চূড়ায় উঠে লিজেন্ডসরা। এই বড় সংগ্রহ গড়ার পেছনে বড় ভূমিকা সাব্বির রহমানের। দুঃসময় পেছনে ফেলে ঠিক সময়ে ঘুরে দাঁড়ালেন এই তারকা ব্যাটসম্যান। পেয়ে গেলেন শতরান। সঙ্গে চিরাগ জানি খেললেন তার মতো করেই। ঝড়ো ফিফটিতে দলের সংগ্রহ নিয়ে যান তিনশ ছাড়িয়ে।
পথ হারিয়েছিলেন তিনি। তবে হাল ছাড়েন নি এই তারকা ক্রিকেটার। এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে লড়ে যাচ্ছেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে। সোমবার পেয়ে গেলেন অনন্য এক শতরান। সুপার লিগ পর্বে রূপগঞ্জ টাইগার্সের বিপক্ষে খেলতে নেমে যোগ্যতার পরিধিটা দেখালেন সাব্বির। ৬ বছরের বিরতি শেষে তার ব্যাটে তিন অঙ্ক। সাব্বিরের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটি চতুর্থ শতক। এর আগে লিগে ২০১৬ সালে প্রাইম ব্যাংকের হয়ে শেখ জামালের বিপক্ষে ১০০ রান করেন তিনি। তিন বছর আগে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে শেষ সেঞ্চুরি করেন সাব্বির।
চলতি লিগে এর আগে ১০ ম্যাচে ৯ ইনিংসে ছিল না একটি ফিফটিও। মোট ২০০। সেই হতাশা পেছনে ফেলে সাব্বির তুলে নিলেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। সুপার লিগের প্রথম দিনে বিকেএসপিতে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে ৮টি করে চার ও ছক্কায় খেললেন ১১১ বলে ১২৫ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংস।
লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ১৬৯ ম্যাচে এটি সাব্বিরের মাত্র চতুর্থ সেঞ্চুরি। এদিন ফিফটি করেন ৫৪ বলে। ফিফটি থেকে সেঞ্চুরিতে যেতে লাগে মাত্র ৩৪ বল। বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি করেন ৮৮ বলে। সঙ্গে চিরাগ জানি ঝড় তোলেন। মাত্র ৬৬ বলে ৯৫ রান করেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের এই ভারতীয় রিক্রুট। ৪টি চারের সঙ্গে ৭টি ছক্কা হাঁকান।
ইনফর্ম নাঈম ইসলাম এদিন ৬৭ বলে থামেন ৩৩ রানে। মাশরাফি ১৫ বলে ১৭। রূপগঞ্জ ক্রিকেট ক্লাবের মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ নেন দুটি উইকেট।
জবাবে নেমে বড় সংগ্রহের সামনে কিছুই করা হয়ে উঠেনি রূপগঞ্জের। যা লড়লেন একাই সাদ নাসিম। তার ব্যাটে দারুণ এক শতরান। মাশরাফিদের বোলিং তোপ সামাল দিয়ে ১০৭ বলে ১১৬ রান তুলে ছিলেন অপরাজিত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯ রান আসে মোহাম্মদ শরিফুল্লাহর ব্যাট থেকে।
নাবিল সামাদ আরও একটা ম্যাচে দেখালেন তার স্পিন যাদু। ১০ ওভারে ৪৭ রানে নেন ৫ উইকেট। সঞ্জিত সাহা সমান ওভারে ৩৫ রানে তুলেন ২ উইকেট। মাশরাফি ও মেহেদী হাসান নেন ১টি করে উইকেট। এই ম্যাচেও ঠিক টিম ওয়ার্কেরই সুফল পেলো লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। গোটা দলটাই জেগে আছে।
Discussion about this post