প্যারিসের রাতটা ছিল আলোকোজ্জ্বল, আবেগে ভরা আর প্রত্যাশায় মোড়া। একসময় ব্যালন ডি’অর মানেই ছিল লিওনেল মেসি কিংবা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর নাম। তবে কালের স্রোতে সেই যুগের অবসান ঘটেছে। ২০২৫ সালের আসরে আলোচনায় ছিলেন কেবল দুজন-উসমান দেম্বেলে আর লামিনে ইয়ামাল। শেষ পর্যন্ত রোনালদিনিওর কণ্ঠে ঘোষিত নাম মিলল দর্শকসারির গুঞ্জনের সঙ্গে-নতুন রাজা দেম্বেলে।
বার্সেলোনায় কাটানো ছয় বছর ছিল অস্থিরতায় ভরা। প্রতিভা নিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু একের পর এক চোটে হারিয়ে ফেলছিলেন ছন্দ। পিএসজি তাকে দলে নিল যখন তিনি প্রায় হারিয়ে যাচ্ছিলেন। কোচ লুইস এনরিকের ছোঁয়ায় সেই দেম্বেলেই রূপ নিলেন সোনার ছেলেতে। ৫৩ ম্যাচে ৩৫ গোল, ১৬টি সহায়তা-শুধু সংখ্যায় নয়, দলকে এনে দিয়েছেন স্বপ্নের ট্রেবল। চ্যাম্পিয়নস লিগে করেছেন ৮ গোল, আর লিগ জিতেছেন সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে। এমন নায়ককে ঘিরেই প্যারিস মাতবে, তা অবশ্যম্ভাবী ছিল।
মঞ্চে নাম ঘোষণার আগেই জানা গিয়েছিল প্রতিদ্বন্দ্বিতা কেবল দুইজনের মধ্যে। ইয়ামাল অবশ্য হতাশ হয়ে ফিরলেন না, কারণ কোপা ট্রফি উঠেছে তাঁর হাতে। ২১ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে সেরা তিনিই। তবে চোখের কোণে ব্যালন ডি’অরের প্রত্যাশার ছায়া ছিল স্পষ্ট।
একই মঞ্চে ইতিহাস গড়লেন বার্সেলোনার মিডফিল্ডার আইতানা বোনমাতি। টানা তৃতীয়বার ব্যালন ডি’অর জিতে তিনি হয়ে গেলেন নারীদের ফুটবলের অপ্রতিদ্বন্দ্বী। এ কীর্তি আর কারও নেই। বার্সার নামের পাশে যোগ হলো আরও এক উজ্জ্বল পালক-ছেলেদের ও মেয়েদের মিলিয়ে মোট ১৭তম ব্যালন ডি’অর।
ঝলমলে অনুষ্ঠানেও নেমেছিল শোকের ছায়া। জুলাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত লিভারপুল ও পর্তুগালের ফরোয়ার্ড দিয়োগো জোটা এবং তাঁর ভাই আন্দ্রে সিলভাকে স্মরণ করা হয়। উপস্থিত সবাই পালন করেন দাঁড়িয়ে নীরবতা।
ব্যালন ডি’অর ২০২৫: কে কি জিতলেন
ব্যালন ডি’অর (পুরুষ): উসমান দেম্বেলে (পিএসজি, ফ্রান্স)
ব্যালন ডি’অর (নারী): আইতানা বোনমাতি (বার্সেলোনা, স্পেন)
ইয়াসিন ট্রফি (পুরুষ): জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা (ম্যানচেস্টার সিটি, ইতালি)
ইয়াসিন ট্রফি (নারী): হান্না হাম্পটন (চেলসি, ইংল্যান্ড)
ইয়োহান ক্রুইফ ট্রফি (পুরুষ): লুইস এনরিকে (পিএসজি)
ইয়োহান ক্রুইফ ট্রফি (নারী): সারিনা ভিগমান (ইংল্যান্ড)
কোপা ট্রফি (পুরুষ): লামিনে ইয়ামাল (বার্সেলোনা)
কোপা ট্রফি (নারী): ভিকি লোপেজ (বার্সেলোনা, স্পেন)
বর্ষসেরা ক্লাব (পুরুষ): পিএসজি
বর্ষসেরা ক্লাব (নারী): আর্সেনাল
জার্ড মুলার ট্রফি (পুরুষ): ভিক্টর ইয়োরকেরেস (আর্সেনাল, সুইডেন)
জার্ড মুলার ট্রফি (নারী): এয়া পাজোর (বার্সেলোনা, পোল্যান্ড)
সক্রেটিস অ্যাওয়ার্ড: জানা ফাউন্ডেশশন।










Discussion about this post