অনেক দিন ধরেই টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটে ছিলেন না তিনি। তার জায়গায় খেলতে নেমে অনেকেই নজর কাড়ছিলেন। তারপরও তামিম ইকবালকে ছাড়া দল ভাবা যায় না। ধারণা করা হচ্ছিল দেড়মাস পর হতে যাওয়া সেই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলে থাকবেন এই ওপেনার। কিন্তু বুধবার দুপুরে নিজেই সাফ জানিয়ে দিলেন, বিশ্বকাপে খেলছেন না।
ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তামিম। বুধবার নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এসে এমন ঘোষণা দেন তামিম ইকবাল। এই তারকা ক্রিকেটার বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম সবাইকে। আশা করি সবাই ভালো আছেন। ছোট একটা ঘোষণা ছিল। কিছুক্ষণ আগে আমাদের বোর্ড প্রেসিডেন্ট পাপন ভাই, আমাদের চিফ সিলেক্টর নান্নু ভাইকে আমি ফোন করেছিলাম। ফোন করে তাদের সঙ্গে কিছু জিনিস আমি শেয়ার করেছি। যেটা আমি সবার সঙ্গে শেয়ার করতে চাই। আমি তাদের বলেছি যে আমার মনে হয় না যে আমার ওয়ার্ল্ড কাপ টিমে থাকা উচিত।’
বিশ্বকাপ দল থেকে সরে যাওয়া কেন? এনিয়ে তামিম, ‘সবচেয়ে বড় কারণ বেশ কিছুদিন ধরে আমি এই ফরম্যাটটা খেলছি না। আর দ্বিতীয়ত ইনজুরি। কিন্তু আমার মনে হয় না ইনজুরি এতো বড় সমস্যা। আমি আশা করি যে ওয়ার্ল্ড কাপের আগে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু যে জিনিসটা আমার কাছে প্রধান মনে হয়, এই সিদ্ধান্ত নিতে যে ব্যাপারটা বড় ভূমিকা রেখেছে সেটি হলো-যেহেতু আমি সর্বশেষ ১৫-১৬টা টি-টোয়েন্টি খেলি নাই, এই সময়টাতে আমার জায়গায় যারা খেলছিল, আমার মনে হয় না এটা ফেয়ার হবে তাদের প্রতি। যদি আমি হঠাৎ করে এসে তাদের জায়গাটা আমি নিয়ে নেই।’
৩২ বছর বয়সী তামিম তার ভিডিও বার্তায় আরও বলেন, ‘হয়তোবা আমি বিশ্বকাপ দলে থাকতাম। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় না এটা ফেয়ার হতো। এ কারণেই বোর্ড প্রেসিডেন্ট আর নির্বাচকদের জানিয়েছি। সম্ভবত ওয়ার্ল্ড কাপে আপনারা আমাকে দেখবেন না। আমি এতটুকুই বলতে পারি, দলের জন্য সবসময় শুভকামনা।’
অবসর প্রসঙ্গে তামিম পরিস্কার করে বলেন, ‘আরেকবার পরিষ্কার করে দেই, আমি অবসর নিচ্ছি না। কিন্তু সম্ভবত এই বিশ্বকাপটা আমার খেলা হবে না। আমার কাছে মনে হয় যে, এটাই যথাযথ সিদ্ধান্ত। তরুণ যারা এখন জাতীয় দলে ওপেন করছে, ওদের সুযোগ পাওয়া উচিত। কারণ তারা শেষ ১৫-১৬ ম্যাচ ধরে খেলছে। ওদের প্রস্তুতিও আমার চেয়ে ভালো হবে। পাশাপাশি আমি এটাও মনে করি, তারা দলকে আমার চেয়ে ভালো সার্ভিস দিতে পারবে।’
মিডিয়ার প্রতিও অনুরোধ রেখেছেন তামিম বলেন, ‘একটা অনুরোধ করবো সকল মিডিয়াকে নো ফোন কলস নো ওয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজে আমি আমার মতো করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং এই সিদ্ধান্তেই অটল থাকবো নতুন করে কিছু বলার নেই, আমি সব কারণ বলেছি। আশা করি আপনারা আমার প্রাইভেসিকে সম্মান করবেন। আর আমার সিদ্ধান্তকে সম্মান করবেন এখানে কনট্রোভার্সির কিছু নেই, এটা আমি অনুভব করি মানুষ হিসেবে হয়তো আপনারা অনেকে আমাকে চিনেন না কিন্তু যারা আমার ক্লোজ তারা সবাই আমার ব্যাপারে জানেন আমি যাই করি আমি আমার মন থেকে করি।’
তামিম তার ভিডিওর শেষটাতে বলেন, ‘আমার মন তাই বলছে যে সিদ্ধান্ত আমি নিয়েছি তা দলের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত আমি এটা অনুভব করেছি বলে এই কারণে আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, যদি এর মধ্যে খেলার কোনো সুযোগ থাকে দেশের বাইরেও যদি কোনো টি টুয়েন্টি ফরম্যাট থাকে বা অন্য কোনে ফরম্যাট থাকে আমি চেষ্টা করবো খেলার। যাতে করে আমি খেলার মধ্যে থাকি আর সামনে তো অনেক খেলা। ইনশাআল্লাহ দেখা হবে সবার সাথে ভালো থাকবেন।’
এবারের টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু আগামী ২৩ অক্টোবর। তার আগে বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব শুরু ১৭ অক্টোবর, ওমানে। সেখানে খেলতে হবে বাংলাদেশের। এই লড়াইয়ে নেই তামিম। তিনি টি-টুয়েন্টিতে নিজের শেষ ম্যাচ লেখেছেন সেই ২০২০ এর মার্চে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এবার তো বিশ্বকাপ থেকে সরে গেলেন!
Discussion about this post