আইসিসি এবং বিসিবির দুর্নীতি দমন আইনের অধীনে বিপিএলে ম্যাচ গড়াপেটায় অভিযুক্তদের বিচার কাজ শুরু হয়েছে রোববার।একমাত্র মোহাম্মদ রফিক ছাড়া বাকি সবার প্রতিনিধিকেই এদিন গুলশানে ট্রাইব্যুনাল কার্যালয়ে দেখা গেছে। বিসিবির করা ১০ সদস্যর ট্রাইব্যুনাল কাল প্রায় সারা দিন অভিযুক্তদের আইনজীবী বা মনোনীত প্রতিনিধির সঙ্গে একান্তে কথা বলেন। সেখানে মোহাম্মদ আশরাফুল আর লঙ্কান ক্রিকেটার কৌশল্য লোকুয়ারাচ্চির আইনজীবীরা তাদের মক্কেলদের নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করেননি। বাকিরা নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করেছেন।
অভিযুক্তদের ইতিমধ্যে নোটিশ পাঠিয়েছে বিসিবির বিশেষ দুর্নীতি দমন ট্রাইবুনাল। এখন চলবে প্রাথমিক শুনানি। এই শুনানী শেষে হবে চূড়ান্ত শুনানি। সবশেষে রায় ঘোষনা করবে গঠিত তিন সদস্যের এ ট্রাইবুনাল।
দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনালের প্রধান বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য দ্রুত নিস্পত্তি করা। কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা বেঁধে দিতে চাই না।’
এ বছরের ফেব্র“য়ারিতে শেষ হওয়া বিপিএলের ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটার্স ও চিটাগাং কিংসের মধ্যকার ম্যাচটির বিরুদ্ধে পাতানোর অভিযোগ উঠে। এরপর আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিট আকসু বিষয়টি তদন্ত করে। আগস্টে তদন্ত শেষে নয় জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে আকসু। এর মধ্যে গ্ল্যাডিয়টের্স অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল জাড়িত থাকার কথা স্বীকার করলেও অন্যরা এখনও পর্যন্ত দোষ স্বীকার করেনি। আইসিসির নিয়মের কারণে বাকি আটজনের নামও প্রকাশ করেননি না করলেও খবর রটে এই ঘটনায় জড়িত পেসার মাহবুব আলম রবিন, বাঁহাতি স্পিনার মোশাররফ রুবেল, বোলিং কোচ রফিক, ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের দুই স্বত্বাধিকারী সেলিম চৌধুরী ও শিহাব চৌধুুরী, ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের সিইও গৌরব রাওয়াত এবং দুই বিদেশি লোকুয়ারাচ্চি ও স্টিভেনসন।
এরপরই বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করতে বললে ৯ অক্টোবর অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আব্দুর রশীদকে ডিসিপ্লিন্যারি প্যানেলের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয় বিসিবি। এরপর প্যানেলের সদস্য হিসেবে ১০ জনকে নিয়োগ দেন তিনি। ১০ নভেম্বর ডিসিপ্লিন্যারি প্যানেলের চেয়ারম্যান দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনালের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীকে। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন আজমারুল হোসাইন কিউসি ও সাবেক ক্রিকেটার শাকিল কাসেম।
ডিসিপ্লিন্যারি প্যানেলের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে আকসুর তদন্ত রিপোর্ট এবং আইসিসি- বিসিবির দুনীর্তি দমন আইন হাতে পাওয়ার পর সেগুলো পর্যালোচনার পর আজ থেকে প্রাথমিক শুনানির সিন্ধান্ত নেয় ট্রাইব্যুনাল।
অভিযুক্তদের শুনানির জন্য আইসিসি থেকে ৪০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে তার প্রায় তিন মাস পর। শুনানি গোপনেই হবে বলে জানান খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী। কেউ ইচ্ছে করলে বিদেশী আইনজীবির মাধ্যমেও শোনানিতে অংশ নিতে পারবেন বলে জানান তিনি।
আইসিসি ও বিসিবির দুর্নীতি দমন আইনে ক্রিকেট দুর্নীতির সাজা পরিষ্কার। সরাসরি ম্যাচ পাতানোর শাস্তি কমপক্ষে পাঁচ বছরের সাসপেন্ড। পরোক্ষ জড়িতদের এক থেকে পাঁচ বছরের নিষিদ্ধ করার নিয়ম রয়েছে।
Discussion about this post