সময়ের স্বল্পতায় পরিকল্পনা বদল করতে বাধ্য হচ্ছে বিসিবি।
সামনের বছরের টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য শুরুতে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের নামটা ছিল বিকল্প ভেন্যুর তালিকায়। এখন চারধারের যে সার্বিক পরিস্থিতি তাতে ফতুল্লার এ বিকল্প ভেন্যুটাই মূল ভেন্যু হতে যাচ্ছে!
মিরপুর এবং ফতুল্লা স্টেডিয়ামকে এ বিশ্বকাপের মূল ভেন্যু চিন্তা করে এখন নতুন পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।
-নতুন পরিকল্পনা?
ঠিক নতুন বলাটা ঠিক মানানসই হচ্ছে না। ফতুল্লা স্টেডিয়াম তো বিসিবির বিকল্প ভেন্যু হিসেবেই ছিল। এখন সেটাই মূল ভেন্যুর মর্যাদা পাচ্ছে। আইসিসির কাছে বিশ্বকাপের ভেন্যু বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য যে সময় বিসিবির হাতে তাতে নতুন স্টেডিয়াম তৈরি সম্ভব নয়। সে কারণে বিসিবি এখন হাতের কাছে থাকা ‘তৈরি স্টেডিয়াম’ দিয়েই আইসিসিকে সন্তুষ্ট করতে চাইছে। আর সে কারণে হাতের কাছে অনেকদিন অবহেলায় পড়ে থাকা ফতুল্লা স্টেডিয়ামে বিসিবির বড় কর্তাদের পদধূলি পড়ল। বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের এ মাঠে বিসিবি সভাপতি এলেন অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে। জামায়াতে ইসলামীর হরতাল চলছিল তাই বিসিবি সভাপতির এ বাহন।
ফতুল্লা স্টেডিয়াম ঘুরে দেখে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও বেশ সন্তুষ্ট-‘মাঠ দেখে আমরা সন্তুষ্ট। এটাকে আমরা বিকল্প ভেন্যু হিসেবে আইসিসির কাছে উপস্থাপন করব। যদি কোনো একটি ভেন্যুতে আমরা খেলা আয়োজন করতে ব্যর্থ হই বা খেলার উপযুক্ত না হয় তবে এ ভেন্যুতে খেলা অনুষ্ঠিত হবে।’
সামনের বছরের বিশ্বকাপের জন্য সিলেট স্টেডিয়াম ও কক্সবাজারে নির্মীয়মাণ ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে ঘিরে পরিকল্পনা সাজাচ্ছিল বিসিবি। কিন্তু বিভিন্নমুখী আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এ দুটি স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজে বিলম্ব হয়। আইসিসির পরিদর্শক দল এ দুটি স্টেডিয়াম পরিদর্শন করে নেতিবাচক রিপোর্ট দেয়। পরে আইসিসির কাছে যথাসময়ে এ দুটি স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ সম্ভব হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসেন বিসিবি সভাপতি। বিসিবি সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কতটা কাজ করেছে সেটা দেখার জন্য সামনের মাসের ৭ তারিখ বাংলাদেশে আসছে আইসিসির পরিদর্শক দল। সিলেট ও কক্সবাজার স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজের ধীরগতি দেখে বিসিবি বিকল্প পরিকল্পনা ঠিক করে রেখেছে। আইসিসির পরিদর্শক দলকে বিকল্প ভেন্যু হিসেবে ফতুল্লা স্টেডিয়াম ও বিকেএসপির মাঠ ঘুরে দেখানো হবে। তাদের বলা হবে-যদি যথাসময়ে সিলেট ও কক্সবাজার স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ সম্ভব না হয় তবে বিকল্প হিসেবে তো ফতুল্লা ও বিকেএসপি হাতের কাছে রইলই।
এ চিন্তা থেকেই বিসিবি এখন ফতুল্লা স্টেডিয়াম ও বিকেএসপির দিকে একটু অতিরিক্ত নজর দিচ্ছে।
ফতুল্লা স্টেডিয়ামে একটি টেস্ট এবং দুটি ওয়ানডে ম্যাচের আসর বসেছে। সর্বশেষ এ মাঠে ২০০৬ সালের এপ্রিলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের ওয়ানডে ম্যাচ হয়েছিল। তারপর থেকে এ মাঠে আর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়নি।
এখন আবার হঠাত্ করেই ফতুল্লা স্টেডিয়ামের মর্যাদা বাড়ছে। বিসিবি নিজেদের গরজেই ফতুল্লামুখী হচ্ছে ফের। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিতব্য টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে কাল বিসিবি সভাপতি বলছিলেন-‘এ মাঠটিতে অনেকদিন ধরে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হচ্ছে না। এর আগে যখন এসেছিলাম তখন বাইরের মাঠটির অবস্থা এখনকার থেকে অনেক ভালো ছিল। কিন্তু মাঠটি ডিএনডি এলাকার ভেতরে হওয়াতে সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে যায়। শুধু ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে এ মাঠ পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আমরা এ সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান করতে চাই। আমরা কোটি কোটি টাকা খরচ করে মাঠ প্রস্তুত করব। আর সামান্য বৃষ্টিতে সব নষ্ট হয়ে যাবে এটা হতে পারে না।’
বিসিবি সবই বোঝে, তবে একটু বিলম্বে-সমস্যা এটুকুই!
Discussion about this post