মিরপুরে দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিনে বাংলাদেশ ইনিংস ঘোষণা করেছে ঠিক তখনই, যখন সবাই অপেক্ষা করছিল মুমিনুল হকের সম্ভাব্য সেঞ্চুরির। লাঞ্চ থেকে ফিরে নতুন করে শুরু হওয়া সেশন টিকল মাত্র তিন ওভার। আর সেটিতেই থেমে গেল মুমিনুলের আশা। লেগ স্পিনার গ্যাভিন হোয়ের স্টাম্প বরাবর ডেলিভারি সিলি মিড–অফে ক্যাচে পরিণত হলে ১১৮ বলে ৮৭ রান করে বিদায় নেন তিনি।
তার আউটের পর মুহূর্তেই ইনিংস ঘোষণা করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬৯ ওভারে ৪ উইকেটে ২৯৭।
প্রথম ইনিংসের ৪৭৬ রানের সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসের এই রান যোগ হয়ে আয়ারল্যান্ডের সামনে দাঁড়াল ৫০৯ রানের বিশাল লক্ষ্য। টেস্ট ক্রিকেটে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজের-২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪১৮। অর্থাৎ ম্যাচে টিকে থাকতে হলে আয়ারল্যান্ডকে শুধু সংগ্রাম নয়, বিশ্ব রেকর্ডই গড়তে হবে। মিরপুরের পিচে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করা এতটাই কঠিন যে ৫০৯ রানের লক্ষ্য প্রায় কল্পনারই মতো।
মুমিনুলের আক্ষেপের বিপরীতে স্বস্তির জায়গা হয়ে উঠেছিলেন মুশফিকুর রহিম। প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করা এই ব্যাটার দ্বিতীয় ইনিংসেও আত্মবিশ্বাসী থেকেছেন। ৮১ বলে এক ছক্কা ও দুই চারে অপরাজিত ৫৩ রান করে তিনি মাঠ ছেড়েছেন। দুজনের ব্যাটে গড়ে ওঠা ১৬৭ বলের ১২৩ রানের জুটিই বাংলাদেশের ইনিংসকে নিরাপদ অবস্থানে নিয়ে যায়।
দিনের শুরুতে বাংলাদেশ দ্রুত হারিয়েছিল দুই উইকেট-সাদমান ইসলাম ৭৮ ও শান্ত ১। আর ঠিক সেই সংকটময় মুহূর্তেই দায়িত্ব নিয়ে ইনিংস গুছিয়ে তোলেন মুমিনুল ও মুশফিক। লাঞ্চের আগেই আয়ারল্যান্ড বোলারদের ওপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন তারা। লাঞ্চ থেকে ফিরে বাংলাদেশ যে কেবল তিন ওভারই খেলেছে, তা-ও বোঝায় ম্যাচ এখন কতটা তাদের নিয়ন্ত্রণে।
আয়ারল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন গ্যাভিন হোয়ে, যিনি নিয়েছেন ২ উইকেট। জর্ডান নিল ও অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন পেয়েছেন ১টি করে উইকেট। তবে উইকেট সংখ্যা যতই হোক, ম্যাচের চিত্র পাল্টানোর মতো আক্রমণ তারা দেখাতে পারেননি।
৪৭৬ ও ২৯৭ রানের দুই ইনিংস মিলিয়ে বাংলাদেশের সামগ্রিক আধিপত্য স্পষ্ট। আয়ারল্যান্ডের সামনে এখন দাঁড়িয়ে রয়েছে টেস্ট ইতিহাসের অন্যতম কঠিনতম লক্ষ্য, ৫০৯ রান। এই লক্ষ্য তাড়া করতে হলে তাদের শুধু ব্যাটিং নয়, ইতিহাস গড়তে হবে।









Discussion about this post