তাদের দু’জনের বন্ধুত্বার বয়সটা অনেক দিনের। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড় স্টেডিয়ামে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলার আগেও বন্ধুটির কথা ভুলেন নি শচীন টেন্ডুলকার। বাংলাদেশ থেকে একমাত্র আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন লুৎফর রহমান বাদল। সেই মানুষটি যখন বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে আমন্ত্রণ জানাল তখন কী আর না করা যায়?
তাইতো আগামী ১৪ অক্টোবর, মঙ্গলবার ঢাকা আসছেন কিংবদন্তি ভারতীয় ক্রিকেটার শচীন রমেশ টেন্ডুলকার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়ার পর এবারই প্রথম বাংলাদেশে আসছেন তিনি।
বন্ধুর জন্য সফরে আসলেও ব্যস্ত সময় কাটবে বাংলাদেশে। বন্ধু লুৎফর রহমান বাদলের ক্লাব গাজী ট্যাংক ক্রিকেটার্স যেটি নাম বদলে হয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। সেই ক্লাবের লগো উন্মােচন করবেন শচীন।
বুধবার কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটির স্বত্বাধিকারী জানালেন, ‘গৌহাটি থেকে সরাসরি ঢাকায় আসছেন শচীন। অনেক দিন ধরেই ওকে আমন্ত্রন জানাচ্ছিলাম। এবার ও আসতে রাজী হল। আমার আমন্ত্রন ফেলে দেয় ও।’
এতো ক্রিকেটার থাকতে উদ্বোধনে শচীন কেন? সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরে বাদলের জবাব, ‘দেখুন আমার দলটার নামের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে লিজেন্ডস। কারনে শচীন ছাড়া অন্য কাউকে এই জায়গায় ভাবিনি। সেরা একজনকে দিয়েই ক্লাবের নতুন নাম ও জার্সি উন্মােচন করতে চেয়েছি আমি। সত্যি বলতে কী শচীনের কথা ভেবেই ক্লাবের নামে লিজেন্ডস শব্দটা যুক্ত করেছি আমি।’
কুরবানির ঈদের ছুটির পরে ঢাকায় শচীনের সফরটি হবে খুবই সংক্ষিপ্ত। বিশ্ব ক্রিকেটের ব্যাটিংয়ের প্রায় সবগুলো রেকর্ডের মালিক ২৪ ঘন্টারও কম সময় থাকবেন।
জানা গেছে-সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের লগো উন্মােচন করে সেখানেই কিছু সময়ের জন্য মুখোমুখি হবেন স্থানীয় মিডিয়ার। বাদল বলছিলেন, ‘এই প্রথম কোন ক্লাবের লগো উন্মােচন অনুষ্ঠানে দেখা যাবে শচীনকে। শুধু বন্ধুত্বের খাতিরেই শচীন এবার ঢাকায় আসছেন। আশা করছি ভবিষ্যতেও আমার সঙ্গে থাকবে তিনি। শিগগিরই একটি ক্রিকেট একাডেমি গড়ার কাজে হাত দেবো। যাতে আমি শচীনের সরাসরি সহযোগিতা-পরামর্শ চেয়েছি। আমি একাডেমিতে ওর নামটা ব্যবহার করতে চেয়েছি। যদিও এখনো ও রাজি হয়নি।’
রাজধানীর ৫ তারকা হোটেলে লগো উন্মােচন শেষেই হেলিকপ্টারে করে শচীন যাবেন নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জে। বাদলের পুর্ব পুরুষদের সেটাই ঠিকানা। সেখানে স্কুলের শিশুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলার কথা রয়েছে শচীনের। এরপর স্কুল কৃতপক্ষের হাতে উন্নয়নের জন্য অর্থ সহযোগিতাও করবেন। এরপর ঢাকা ফিরে আসবেন এই কিংবদন্তি ক্রিকেটার।
বাদল জানালেন, পুরো আয়োজনের সঙ্গে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কদের যুক্ত করা হবে। যেটিকে বাদল বলছেন দেশের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য নতুন এক মাইলফলক।
সবশেষে রাতেই মুম্বাইয়ে ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে শচীনের। তার আগে সুচনা করে যাবেন নতুন এক নামের, নতুন এক যাত্রার। লুৎফর রহমান বাদল বলছিলেন, ‘দেখুন কোন ক্লাবই রাতারাতি জনপ্রিয়তা পায়নি। একসময় আবাহনী-মোহামেডানের এমন জনপ্রিয়তা ছিল না। অংকুর থেকে উত্থান হয়েছে তাদের। লিজেন্ডস অব রুপগঞ্জের যাত্রা শুরু হল। অংকুর থেকেই বেড়ে উঠতে চাই আমরা।’
Discussion about this post