ইংল্যান্ড সফরে ভারতের পেস আক্রমণের মেরুদণ্ড হয়ে উঠেছেন মোহাম্মদ সিরাজ। পাঁচটি টেস্টে ৯ ইনিংসে করেছেন ১৮৫.৩ ওভার, বল করেছেন ১১১৩টি-যা এই সিরিজে ভারত ও ইংল্যান্ড মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি। উইকেটসংখ্যাও সর্বাধিক-২৩টি। প্রতিটি স্পেলে একই গতি ও উদ্যম ধরে রাখা এক কথায় বিস্ময়কর। কিন্তু এই কৃতিত্ব শুধু প্রতিভার নয়, এর পেছনে আছে কঠোর পরিশ্রম, আত্মনিয়ন্ত্রণ আর অগাধ পারিবারিক প্রেরণা।
সিরাজের ফিটনেসের পেছনে কঠোর অনুশাসন কাজ করেছে। ভাই মোহাম্মদ ইসমাইল জানান, ‘সিরাজ বাইরের খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। হায়দরাবাদে থাকলেও বিরিয়ানি কেবল বাড়িতে রান্না হলে খায়। পিৎজা, ফাস্টফুড একেবারে বাদ দিয়েছে।’
এই আত্মনিয়ন্ত্রণই তাঁকে দিনের পর দিন জিমে যেতে ও কঠোর অনুশীলনে টিকে থাকতে সাহায্য করেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে জায়গা না পেলেও সিরাজ ভেঙে পড়েননি। বরং ফিরে গিয়ে নিজেকে আরও তৈরি করেছেন। নিয়মিত শরীরচর্চা, কঠোর ডায়েট, ঘাম ঝরানো অনুশীলন-সব মিলিয়ে তিনি হয়ে উঠেছেন ভারতীয় পেস আক্রমণের নির্ভরযোগ্য ভরসা।
এই সাফল্যের মূল উৎস কিন্তু মাঠের বাইরের জগতেও খুঁজে পাওয়া যায়। বাবার স্বপ্ন ছিল সিরাজ একদিন ভারতের হয়ে খেলবে। সেই স্বপ্ন বুকে নিয়েই এগিয়ে চলেছেন তিনি। ইংল্যান্ড যাওয়ার আগে বাবার কবরের পাশে গিয়ে প্রার্থনা করেছিলেন। মা শাবানা বেগম বলেন, ‘ছেলে যাওয়ার আগে বলেছিল, মা, আমার জন্য দোয়া কোরো। আমি যেন ভারতকে জেতাতে পারি। তারপর বাবার কবরের কাছে গিয়েছিল। ওর বাবাকে খুব ভালবাসত, বাবাও ওকে চোখে রাখতো।’
ইংল্যান্ড সফর চলাকালীন প্রতিদিন ভিডিয়ো কলে মায়ের সঙ্গে কথা বলতেন সিরাজ। নিয়ম করে নিতেন আশীর্বাদ। ভাই ইসমাইল বলেন, ‘মা সব সময় ওর জন্য দোয়া করে। সেই প্রার্থনাই হয়তো ওকে শক্তি দেয়।’
Discussion about this post