বাংলাদেশ ক্রিকেটের নেতৃত্বে বড় পরিবর্তন এসেছে। দেশের ক্রিকেট প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)-এর সভাপতির পদে ফারুক আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন আরেক সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সরাসরি মনোনয়ন বাতিল ও নতুন মনোনয়নের মাধ্যমেই এই রদবদল কার্যকর হয়েছে।
আজ বিকেলে জাতীয় হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতার ফাইনালে প্রধান অতিথি হিসেবে এসে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া বিসিবি সভাপতির পরিবর্তন নিয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ‘এটি কোনো শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত নয়, বরং পারফরম্যান্স-ভিত্তিক একটি প্রশাসনিক পরিবর্তন। বর্তমান সরকারের শুরুতে পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয় প্রত্যাশা জাগালেও পরবর্তীতে ক্রিকেটের ধারাবাহিক অবনতি সেই প্রত্যাশা ম্লান করেছে। বিপিএলের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টেও বিসিবির গাফিলতি ব্যাপকভাবে চোখে পড়েছে।’
উপদেষ্টা জানান, রাজশাহী দলের পেমেন্ট জটিলতা ও হোটেল বিতর্ক, বিপিএল ফাইনালে প্রধান উপদেষ্টাকে উপস্থিত না আনতে পারা এবং ধারাবাহিক প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা এই পরিবর্তনের অন্যতম কারণ, ‘বিসিবি একটি দল, কিন্তু সেখানে কার্যকর কোনো টিমওয়ার্ক ছিল না। অনেক পরিচালকের অভিযোগ ছিল, এমনকি অনাস্থাও জানানো হয়েছিল ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে।’ যদিও তিনি দুর্নীতির কোনো অভিযোগ আনেননি, বরং বারবারই বলেছেন, এটা পুরোপুরি পারফরম্যান্স মূল্যায়নের অংশ।
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘ফারুক আহমেদ নিজ থেকে পদত্যাগ করলে হয়তো এতটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হতো না। কিন্তু পদত্যাগ না করায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বাধ্য হয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছে।’ তার মতে, খেলোয়াড়দের মতোই যদি কেউ ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হন, তাহলে তাকে বাদ পড়তে হয়। এখানে সেটাই হয়েছে।
নতুন সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল সম্পর্কে উপদেষ্টা জানান, ‘তিনি আগে আইসিসিতে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং তার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও আন্তর্জাতিক সংযোগ বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ইতিবাচক হতে পারে। যদিও বিসিবি তার আইসিসির সম্মানীর সমপরিমাণ দিতে পারবে না, তবুও তিনি দেশের জন্য কাজ করতে সম্মত হয়েছেন, এটিই বড় বিষয় বলে মনে করেন উপদেষ্টা।’
এই রদবদল শুধু বিসিবির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিভিন্ন ফেডারেশনে অ্যাডহক কমিটি গঠন করেছে। হকি ফেডারেশনের ব্যর্থতা, বিশেষ করে ৪৩ বছর পর এশিয়া কাপে খেলার যোগ্যতা হারানো, বোর্ডের নজরদারিতে থাকার পেছনে বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপদেষ্টার বক্তব্যে স্পষ্ট, শুধু খেলোয়াড় নয়, প্রশাসনেও পরিবর্তন আসবে, এবং পারফরম্যান্সই হবে একমাত্র মানদণ্ড।
Discussion about this post