বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন একটি নির্দিষ্ট দিনক্ষণের কথা বলছেন। আর বারবার তা পিছিয়ে যাচ্ছে। ‘হচ্ছে’, ‘আসছে’ শোনাই যাচ্ছে শুধু। বাস্তবে আকসু রিপোর্টের দেখা নেই। সর্বশেষ খবর, আইসিসি দুর্নীতি দমন ইউনিট আকসুর রিপোর্ট সহসাই মিলছে না। তা পেতে দেরি হবে। সুনির্দিষ্ট করে বলা না গেলেও ভাবা হচ্ছে আগামী জুলাই মাসের তৃতীয় কিংবা শেষ সপ্তাহের আগে আকসু রিপোর্ট বিসিবিতে জমা পড়বে না। তবে ১ জুলাই বিসিবিপ্রধান আইসিসি বার্ষিক সাধারণ সভা থেকে ফেরার পর সম্ভাব্য তারিখ জানা যেতে পারে। কারণ লন্ডনে তার সঙ্গে আকসু প্রধানের কথা হয়েছে।
আকসু আসলে কী জমা দেবে? তা নিয়েও রাজ্যের সংশয়-প্রশ্ন ও মত। কেউ কেউ বলছেন, আকসু প্রতিবেদন দেবে। আবার একটা বড় অংশের মত, কোনো পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট নয়, আকসু তাদের অনুভব-পর্যবেক্ষণ জানাবে। সঙ্গে একটা সুপারিশও থাকবে। তা যাই থাকুক না কেন, সব কথার শেষ কথা হচ্ছে-বিপিএল ফিক্সিং নাটক এখনই শেষ হচ্ছে না। চূড়ান্ত ক্লাইমেক্সের জন্য অপেক্ষায় থাকতেই হচ্ছে। আর সেই অপেক্ষার যাতাকলে চাপা পড়তে যাচ্ছে প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ। বিসিবি সভাপতি আগেই বলে রেখেছেন, আকসু প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার আগে দলবদল নয়। তাতে মোহাম্মদ আশরাফুল ছাড়া নতুন কারও নাম এলে সমস্যার জট বাঁধবে আরও। নাজমুল হাসান পাপনের ধারণা ছিল তিনি লন্ডনে আইসিসি সাধারণ সভায় যোগ দিতে গিয়েই ওই প্রতিবেদন পাবেন। তারপর দেশে ফিরে অবস্থা বুঝে দলবদলের দিন ঘোষণা করবেন। কিন্তু এখন আকসু রিপোর্ট পেতে দেরি হওয়া মানেই দলবদলে নতুন জটিলতা। তা আরও পিছিয়ে যাওয়া। বলার অপেক্ষা রাখে না, ইতোমধ্যেই তিনবার তারিখ বদলেছে। প্রথমে ২০ জুন। সেখান থেকে ২৩ জুন। তারপর ৩ জুলাই। এখন প্রশ্ন-জুলাইতে কি আদৌ দলবদল হবে। তা না হওয়ার অর্থ; জুলাইয়ের বদলে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে লিগ।
প্রিমিয়ার লিগের আয়োজক ক্রিকেট কমিটি অফ ঢাকার (সিসিডিএম) সভাপতি জালাল ইউনুসও বেকায়দায় পড়ে গেছেন। তার অকপট স্বীকারোক্তি-‘পুরো বিষয়টি আরও জটিল থেকে জটিলতর হয়ে গেছে। আশা করেছিলাম আইসিসি সাধারণ সভার মধ্যে কিংবা শেষেই আকসু রিপোর্ট পাওয়া যাবে। এখন তা পেতে দেরির খবরে চিন্তায় পড়ে গেছি। একটা বিব্রত ও অস্বস্তিকর অবস্থা।’ জালালের ধারণা, আকসুর কাছে আরও কিছু ক্রিকেটারের নাম আছে। যে কারণে তদন্তে দেরি হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যেই ক্লাবগুলোর কাছে বাইলজ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখন নতুন তারিখ ঘোষণা নিয়ে নতুন জটিলতা। আর সে কারণেই জালাল চিন্তিত। তার কথা, ‘এখন দলবদলের নতুন দিন বেঁধে দেওয়া নিয়ে পড়েছি বিপাকে। এখন সবার আগে দেখতে হবে আকসু রিপোর্টের আলোকে ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে কেমন অ্যাকশন নেওয়া হয়। আশা করেছিলাম, জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে দলবদল সম্পন্ন হয়ে যাবে। কিন্তু এখন সম্পূর্ণ ধোঁয়াটে অবস্থায় পড়েছি। বিসিবি সভাপতি দেশে ফিরে না আসা পর্যন্ত ওই অবস্থা কাটবে না। আশা করছি আইসিসি সাধারণ সভা শেষে ২ জুলাইয়ের মধ্যেই ফিরে আসবেন বোর্ডপ্রধান। তখনই বলা যাবে দলবদল কবে।’
এদিকে জুলাইতে দলবদল না হলে হয়তো লিগই শুরু হবে না। কারণ ‘এ’ দল ইংল্যান্ডে যাবে। সেখানে বেশ কিছু তরুণ সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার যাবেন। তাদের ছাড়া লিগ খেলায় বেঁকে বসবে ক্লাবগুলো। মোট কথা, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের আগে লিগ শুরুর সম্ভাবনা খুব কম। আর তখন লিগ চলতে থাকলে বিসিবির ক্রিকেট ক্যালেন্ডারেই বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে। কারণ বিসিবির বর্ষপঞ্জিতে আছে-৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় লিগ শুরু। ওই সময় প্রিমিয়ার লিগ চললে তা পেছানো ছাড়া কোনো পথ থাকবে না।
Discussion about this post