দুর্বার রাজশাহীর বিপিএল যাত্রা শেষ হলেও বিতর্ক থামছে না। পারিশ্রমিক পরিশোধ নিয়ে একের পর এক অভিযোগে জর্জরিত দলটি। বিদেশি ক্রিকেটারসহ কোচিং স্টাফ ও ম্যানেজমেন্টের সদস্যরা এখনও তাদের প্রাপ্য অর্থ পাননি। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা যখন চরমে, তখনই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে দুর্বার রাজশাহীর মালিক শফিকুর রহমানকে।
আজ সোমবার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বিপিএল ২০২৫-কে সফল করতে বিসিবি ও সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালানো হলেও, দুর্বার রাজশাহীর একের পর এক অপেশাদার কর্মকাণ্ড দেশের ক্রিকেট এবং রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ফ্র্যাঞ্চাইজিটি চুক্তি লঙ্ঘন, পারিশ্রমিক পরিশোধে গড়িমসি এবং খেলোয়াড়দের হয়রানির মতো গুরুতর অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করার বিষয়টিও আলোচনায় আসে, যার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়।
তাদের এমন অপেশাদার কর্মকান্ড গণমাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে প্রচার হলে বিষয়টি নিষ্পত্তিকল্পে ফ্রাঞ্চাইজি মালিকের সঙ্গে আলোচনায় বসেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
২ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে দলের ৫০ শতাংশ পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবে আলোর মুখ দেখেনি, বরং গণমাধ্যমে উঠে এসেছে অনিয়মের নানান অভিযোগ। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে ফ্রাঞ্চাইজি মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করার খবরও কানে আসলে, দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে বিষয়টি আরো গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে মন্ত্রণালয়। এছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যমে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের পালিয়ে যাবার গুঞ্জন উঠলে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয় সরকার।
এ অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক শফিকুর রহমানকে। জিজ্ঞাসাবাদে নিজের ভুল স্বীকার করে তিনি জানান, তিন কিস্তিতে সমস্ত বকেয়া অর্থ পরিশোধ করা হবে। প্রথম কিস্তি ৩ ফেব্রুয়ারি, দ্বিতীয় কিস্তি ৭ ফেব্রুয়ারি এবং শেষ কিস্তি ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি নিশ্চিত করেছেন, শুধু ক্রিকেটাররা নয়, কোচিং স্টাফ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও তাদের প্রাপ্য অর্থ বুঝে পাবেন। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে বিপিএলে অনিয়ম ও দুর্নীতির অনুসন্ধানে কাজ করছে একটি সত্যানুসন্ধান কমিটি। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Discussion about this post