ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
তিনি ছিলেন তার সময়ের সেরাদের অন্যতম। দুর্ভাগ্য তার স্বর্ণযুগে দেশ স্বাধীন ছিলো না। এ কারণে খেলা হয়নি দেশের হয়ে। তবে ঠিকই মাতিয়েছেন ঘরোয়া ক্রিকেট। খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর ময়মনসিংহের ব্রাহ্মপল্লির নিজ বাড়িতে নীরবেই সময় কাটছিল তার। অবহেলিতও ছিলেন তিনি। গণমাধ্যমে প্রায়ই খবর ছিল-খোদ ক্রিকেট বোর্ডও নাকি খবর নেয় না তার। সেই সাবেক বাঁহাতি স্পিনার রামচাঁদ গোয়ালা আর নেই। চলে গেলেন নীরবে।
শুক্রবার ভোরে ময়মনসিংহের ব্রাহ্মপল্লির নিজ বাড়িতে মারা যান বরেণ্য এ ক্রিকেটার। গেল বছর স্ট্রোকে কাবু হয়ে পড়েন। এরপর থেকে নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। এবার চলেই গেলেন ৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই ক্রিকেটার।
বাংলাদেশের ক্রিকেট মহলে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘গোয়ালাদা’ নামে। অকৃতদার এই মানুষটি ছিলেন সবার প্রিয়। বাংলাদেশ ক্রিকেটে বাঁহাতি স্পিন মাত করেন তিনি। আবাহনীতে খেলেন একটানা ১৫ মৌসুম। মোহামেডান, ভিক্টোরিয়া, টাউন ক্লাব, শান্তিনগরেও খেলতে দেখা যায় তাকে। বিস্ময়কর হলেও সত্য ৫৩ বছর বয়সে এসে গুডবাই বলেন তিনি।
এরপরই কোচ হয়েছিলেন রামচাঁদ। তার বিখ্যাত ছাত্রের তালিকায় আছেন বর্তমান টি-টুয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ক্রিকেটে পরবর্তী জীবনে গোয়ালা দা ক্রিকেট কোচিংয়ে নিজেকে মনোনিবেশ করেন। ময়মনসিংহের কয়েকটি ক্লাবে ছেলেদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক কৃতি খেলোয়াড় সাইফুল ইসলাম, সানোয়ার হোসেন, জাকিরও লিটন দাসেরও গুরু রামচাঁদ গোয়ালা।
গোয়ালার ক্যারিয়ারটা শুরু ১৪ বছর বয়সে। ঢাকায় ভিক্টোরিয়ার হয়ে পথচলা। এরপর টানা ১৫ বছর খেলে হয়ে যান ‘আবাহনীর গোয়ালা’। শেষ করেন মোহামেডানের হয়ে।
রকিবুল হাসান, শফিকুল হক হীরাদের পাশাপাশি খেলেছেন আকরাম খান, আমিনুল ইসলাম বুলবুলদের সঙ্গেও। বিস্ময়কর ফিটনেস তার। এ কারণেই খেলতে পেরেছেন দীর্ঘদিন। কিন্তু দুঃখ একটাই খেলতে পারলেন না জাতীয় দলের হয়ে।
বাংলাদেশ ১৯৮৬ সালে যখন প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে। তখন গোয়ালার ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ প্রান্তে। বয়স ৪৫। তাছাড়া এনামুল হক মণি ও গাজী আশরাফ লিপু তখন দেশের প্রতিষ্ঠিত স্পিনার। এ কারণেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাঙ্গনে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে প্রতিনিধিত্ব করা হয়ে উঠেনি তার। তবে ক্রিকেটেই নিজেকে ব্যস্ত রাখেন। এ জন্য নিজের বিয়ের কথা চিন্তাই করেনি কখনোই।
Discussion about this post