ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
সম্প্রতি ভারতীয় ক্রীড়া সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান নিম্বাস স্পোর্টস লিমিটেড দেউলিয়া ঘোষিত হয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির কাছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পাওনা ২২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৮৭ কোটি টাকা)। কিন্তু সে অর্থ আদায় করতে আরও একবার আইনি লড়াইয়ের পথে যাওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে দেশের ক্রিকেটের শীর্ষ সংস্থাটি।
এরআগে ২০০৬ সালের নভেম্বরে ভারতীয় ক্রীড়া সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান ‘নিম্বাস স্পোর্টস’র সঙ্গে ৫৬.৮৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি সম্পন্ন করে উৎসবের রঙ ছড়িয়েছিল বিসিবি। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক খেলা সম্প্রচার স্বত্ব ছয় বছরের জন্য বিক্রি করে ধনী হয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে সিনিয়র সহ-সভাপতি) মাহাবুবুল আনাম ও বোর্ডের সাবেক কর্মকর্তারা। কিন্তু চার বছর পর জানা যায়, নিম্বাসের সঙ্গে চুক্তিটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় হয়নি। বরং ভুলে ভরা চুক্তি থেকে ইচ্ছে মতো সুবিধা আদায় করে নিয়েছে নিম্বাস স্পোর্টস। বিষয়টা জেনেও সেসময় তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ব্যাংক গ্যারান্টিও নেওয়া হয়নি।
২০১২ সালে চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও এখনও নিম্বাস দাবি করে, তাদের নির্ধারিত শিডিউলের আগেই ত্রিদেশীয় এবং ইংল্যান্ড সিরিজ আয়োজন করে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে বিসিবি। এদিকে চুক্তি শেষে নিম্বাসের কাছে ৩২ মিলিয়ন ডলার পাওনার দাবি করে বিসিবি, যা ছাড় দিয়ে দাঁড়ায় ২২ মিলিয়ন ডলারে।
২০১২ সালের জুলাইয়ে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ১১ মিলিয়ন ডলার দিয়ে ব্যাপারটা মিটিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেয় নিম্বাস। কিন্তু তাদের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে সিঙ্গাপুরে নিম্বাসের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই শুরু করে বিসিবি। কিন্তু কোর্ট অব সিঙ্গাপুর গত ২২ মে বিসিবিকে জানিয়ে দেয়, নিম্বাস দেউলিয়া প্রতিষ্ঠান।
এখন কোনো আপত্তি বা কিছু বলার থাকলে বিসিবি’কে ২১ দিনের মধ্যে আরও একবার মামলা করতে হবে। এজন্য বিসিবি’কে বাড়তি ২ লাখ মার্কিন ডলার খরচ করতে হবে। ক্রিকবাজ’র রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, দ্বিতীয়বার মামলা করার ব্যাপারে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের কাছ থেকে পরামর্শ চেয়েছে বিসিবি। এরইমধ্যে সিঙ্গাপুরভিত্তিক দুই আইনি পরামর্শ বিষয়ক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করেও বিসিবি বিষয়টা নিয়ে অন্যভাবে ভাবতে শুরু করে। যার ফলশ্রুতিতে গত ৬ জুন সিঙ্গাপুর কোর্টে ‘নো অবজেকশন লেটার’ (অনাপত্তিপত্র) পাঠায় বিসিবি।
বিসিবি’র প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী ক্রিকবাজকে বলেন, ‘আমরা যদি অনাপত্তিপত্র না পাঠাতাম, তাহলে আমাদের আইনি লড়াই ছাড়াও অন্য ঝামেলা পোহাতে হতো। ফলে, আমাদের বাড়তি অর্থ খরচ করতে হতো। আমরা এতে জড়িত হইনি কারণ নিম্বাস পুরোপুরি দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় আমরা এর (আইনি লড়াইয়ের) কোনো উজ্জ্বল ভবিষ্যত দেখছি না।’
বিসিবির সিইও আরও বলেন, ‘সিঙ্গাপুরে একটি আইনি লড়াই চলছে। ওরা যেহেতু দেউলিয়া হয়ে গেছে, তাই এটাও এখন বাড়তি বিষয় হয়ে গেছে। এ কারণেই আমরা এর পেছনে না ছোটাই ভালো মনে করছি। আর এই সিদ্ধান্ত আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করেই নেওয়া হয়েছে। তবে নিম্বাসকে ক্ষমা করার সুযোগ নেই। আইনি প্রক্রিয়া জারি থাকবে কিন্তু এটাও সত্য যে ওদের কাছ থেকে কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।’
Discussion about this post